রিয়ার বেপারে আমি যত টা না চিন্তিত হচ্ছি তার চেয়ে ও বেশি চিন্তিত হচ্ছি এটা ভেবে।যে নীলার সাথে তো আমার ইসলামি শরিয়ত মতে বিয়ে টা হয়ে গেলো।এখন যদি ও আমার কাছে স্ত্রীর অধিকার দাবি করে,তাহলে তো আমি ওর অধিকার পূরন করতে বাধ্য।
এসব ভাবছিলাম তখনি রিমি আমায় পিছন থেকে ডাক দিলো।
নতুন জামাই কথা টা শুনে কিছুটা রাগ হলো। তবে ওকে কিছু বললাম না।
রিয়াদঃ না এমনি ঘরে ভালো লাগছিলো না তাই এখানে দাড়িয়ে আছি।
রিমিঃ এটা কেমন কথা ঘরে নতুন বউ রয়েছে আর তোমার ঘরে ভালো লাগে না,।এখনি তুমি তোমার রুমে যাও। নীলা আপু রুমে একা একা বসে আছে।
রিমি এই কথা গুলো বলেই আমার হাত ধরে টেনে রুমের কাছে নিয়ে আসলো।
রিমি ঃ এইবার রুমে যাও।
রিয়াদঃ তুই তর রুমে যা আমি একটু পরে যাচ্ছি।
রিমি ঃ না এখনি যাও নাহলে মা কে ডেকে আনবো কিন্তু ( রাগি গলায় বললাম
)
রিয়াদঃ এই না মাকে ডাকিস না, আমি এখনি যাচ্ছি।
নীলাঃ সেই সন্বাহের পর থেকেই উনার ( রিয়াদের) রুমে একা একা বসে আছি।আজ কেনো জানি একা রুমে থাকতে খুব ভয় করছে।এতো দিন সুধু বাহির থেকেই এই রুম টা দেখছি,। আর আজ এই রুমের বিছানায় বসে আছি তাও উনার বউ হিসেবে এটা ভাবতেই কেমন যেনো লাগছে।
হঠাৎ দরজা টা খোলার আওয়াজ পেয়ে ভয়ে একটু কেপে উঠলাম। তারমানে উনি রুমে চলে এসেছেন।কিছুটা নরেচরে বসলাম।
রিয়াদঃ রুমে ঢুকতেই বিছানার মাঝ খানে নীলাকে বউ সাঝা অবস্থায় বসে থাকতে দেখে কিছুটা বিরক্ত বোধ করলাম।
তবুও মুখে কিছু না বলে ওর সামনে গিয়ে দাড়ালাম।খেয়াল করলাম নীলা বিছানা থেকে নেমে আমার পা ধরে সালাম করতে চাইছে।আমি বাধা দিলাম কিন্তু ও কিছু না শুনেই আমাকে সালাম করে বসা থেকে উঠে দাড়ালো।নীলা বলতে লাগলো,,,
নীলাঃ আমি জানি আপনি আমায় নিজ ইচ্ছায় বিয়েটা করেন নি।আমাকে আমার দুলাভাইয়ের কাছ থেকে বাচানোর জন্য বিয়ে টা করেছেন।
আমি ও কিন্তু আপনাকে নিজ ইচ্ছায় বিয়েটা করিনি। কারন আমি জানি আপনি অন্য আরেক টা মেয়েকে ভালোবাসেন।আর আমি আপনাদের দুজনের মাঝে কখনোই আসবো না।আপনি যদি আমায় তালাক দিয়ে ঐ মেয়েটাকে বিয়ে করেন তাতে ও আমার আপনার প্রতি কোনো অভিযোগ থাকবে না।অতএব আপনি নিশ্চিতে থাকতে পারেন।
রিয়াদঃ নীলার কথা গুলো শুনে মনে হলো বুকের ওপর থেকে একটা বড় পাথর নেমে গেলো।
নীলাঃ তবে একবার যখন আমাদের ইসলামি মতাবেক বিয়েটা হয়ে গেছে। তখন আজ রাতের যে গুলো গুরুত্বপূর্ণ কাজ মানে দুই রাকাত নফল নামাজ টা দুজনে পরে নিলে ভালো হয় না।
রিয়াদঃ হুম চলুন।
নীলাঃ মনে হয় আমি আপনার অনেক ছোটই হবো, তাই আপনি না বলে তুমি করে বললেই বেশি খুশি হবো।
রিয়াদঃ ঠিক আছে চলো।আমি ওয়াস রুমে চলে এলাম পিছনে নীলা ও এলো।দুজন অজু করে আমি সামনে আর নীলা আমার পিছনে দাড়িয়ে দুজন নামাজ পরে নিলাম।
নামাজ শেষে
নীলাঃ আপনি বিছানায় শুয়ে পরুন, আমি নিচে শুয়ে পরছি।( উনাকে বললাম কথা টা)
রিয়াদঃ না না এটা কিভাবে হয় তুমি মেয়ে হয়ে নিচে ঘুমাবে আর আমি ছেলে হয়ে বিছানায়।
নীলাঃ কিছু হবে না, আমার নিচে ঘুমানোর অনেক অভ্যাস আছে।
রিয়াদঃ তুমি সিওর।
নীলাঃ হুম( বিছানা থেকে বালিশ টা নিয়ে, ফ্লোরে একটা চাদর বিছিয়ে শুয়ে পরলাম। আর ভাবতে লাগলাম)
ছোট বেলা থেকেই সবার অবহেলা পেয়ে পেয়ে বড় হয়েছি।কখনো ভাবিনি যে বিয়ের পর স্বামীর অবহেলা টা ও আমার ভাগ্যে আছে।
আমি তো কোনো দিন এমন টা চাইনি।সব সময় পর্দা করে চলেছি, যাতে আমার মুখের সৌন্দর্য টা আমার স্বামীই প্রথম দেখে।কিন্তু আজ যার সাথে আমার বিয়ে হলো সে আমার মুখের ঘোমটা টা পর্যন্ত নিজ হাত দিয়ে উঠালো না মুখ দেখা তো দূরের কথা।
নামাজ পরে আল্লাহর কাছে প্রতিদিন দোয়া করতাম, আল্লাহ যেনো আমায় এমন একটা স্বামী দেয়।যার মনে আমি নাম টা ছাড়া আর কোনো মেয়ের নাম না থাকে।আর আজ আমি এমন একজনকেই স্বামী হিসেবে পেলাম যার মনে আমি ছাড়া ও আরেক জনের নাম আছে।
উনি তো রিয়া নামের একটা মেয়েকে ভালোবাসেন।আর ঐ মেয়েকেই বিয়ে করবেন বলেছে।তাহলে কি উনি আমায় তালাক দিয়ে দেবেন।আচ্ছা উনি যদি আমায় তালাক দিয়ে দেন তাহলে আমি কোথায় যাবো।আমার যে কোথাও যাওয়ার মতো কোনো জায়গা নেই।( এসব ভাবতেই চোখ বেয়ে ক্রমাগত পানি পরতে লাগলো
)
হয়তো আল্লাহ তায়ালা এর মাধ্যমে ও আমার একটা পরীক্ষা নিচ্ছেন। হতে ও তো পারে আল্লাহ তায়ালা আমার জন্য আরো ভালো কিছু ভেবে রেখেছেন।তবে যাই হয়ে যাক একবার যখন উনার সাথে আমার বিয়েটা হয়ে গেছে।তখন যতদিন উনার সাথে আছি তত দিন উনার সেবা করেই কাটিয়ে দেবো।এতে উনি আমায় স্ত্রী হিসেবে মানুক বা না মানুক।( এসব ভেবে কাদতে কাদতেই ঘুমিয়ে পরলাম
)
রিয়াদঃ নীলা মেয়েটাকে নিয়ে যত টা খারাপ চিন্তা করছিলাম মেয়েটা তত টা খারাপ না।উল্টো নীলা অনেক ভালো মনের একটা মেয়ে।আজ ও আমার মনের ওপর থেকে অনেক বড় একটা বোজা নামিয়ে দিলো।সে জন্য বিছানায় গা টা এলিয়ে দিতেই শান্তিতে ঘুমিয়ে পরলাম।
ঘুম টা হঠাৎ করে ভেঙে গেলো। সামনে তাকাতেই খুব বড় একটা শক খেলাম।চোখের সামনে অপরিচিত একটা মেয়ে দাড়িয়ে আছে আর আমার হাত ধরে টানছে।
বিছানা থেকে লাফ দিয়ে উঠলাম।
রিয়াদঃ এই আপনি কে আর আমার রুমেই বা কি করছেন এই সময়।(অনেক টা অবাক হয়ে
)
নীলাঃ এই আস্তে লাফ দিন বিছানা থেকে তো পরে যাবেন।আমাকে চিন্তে পারছেন না।আমি নীলা যার সাথে আপনার কাল বিয়ে হলো।
রিয়াদঃ কি আপনি মানে তুমি নীলা।?(
)
নীলাঃ হুম।
তার মানে এটাই নীলার আসল রুপ যা এতো দিন নীলা ওরনা দিয়ে আমার কাছ থেকে আরাল করে রেখেছিলো। এই প্রথম নীলার মুখ টা দেখলাম।পুরো পরির মতো দেখতে।এতো সুন্দর কোনো মেয়ে মানুষ হতে পারে বলে আমার মনে হয় না।নীলার চেহারার সৌন্দর্যের কাছে রিয়া কিছুই না।সত্যিই ওর মতো একটা মেয়ে আমার বউ ভাবতেই নিজের প্রতি অনেক গর্ব হচ্ছে( নীলা যে আমার ক্ষনিকের বউ মাএ সেটা আমি ভুলেই গেছি)। এক মূহুর্তেই রিয়ার কথা ভুলে নীলার সৌন্দর্যের প্রেমে পরে গেলাম।নীলার দিকে অপল দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইলাম।
নীলাঃ দেখলাম উনি আমার দিকে তাকিয়ে কি যেনো চুপ করে ভাবছেন।তাই উনার হাত টা ধরে ঝাকি দিয়ে ডাক দিলাম।এই যে কি হলো এমন ভাবে তাকিয়ে কি দেখছেন?
রিয়াদঃ (নীলার ডাকে আমার হুস ফিরলো।) না না কিছু না।
তুমিই কি সত্যি নীলা মানে যার সাথে আমার বিয়ে হয়েছে।? আসলে এর আগে তো তোমায় কোনো দিন দেখিনি তাই বুঝতে পারছি না।
নীলাঃ হুম আসলেই তো আপনি এর আগে আমায় কোনো দিন দেখেন নি।তবে আমার গলার আওয়াজ তো শুনেছেন।সেটা শুনেই বুঝে নিন আমি আসল নীলা না নকল।
রিয়াদঃ মেয়েটার গলার আওয়াজ কিছুখন শুনে বুঝতে পারলাম এটাই আসল নীলা।তবে আসল নীলা যে এতো টা সুন্দর হবে এটা কোনো দিন কল্পনা ও করিনি।
নীলাঃ কি হলো গলার আওয়াজ শুনে ও কি বিশ্বাস হয়নি।
রিয়াদঃ না হয়েছে।( বলে আবার বিছানায় শুয়ে পরতে যাবো তখনি নীলা আমায় আটকে দিলো।)
নীলাঃ এই কি করছেন আবার শুয়ে পরছেন যে।ফজরের আজান দিয়েছে গোসল করে নামাজ পরতে যান মসজিদে।
ঘরির দিকে তাকিয়ে দেখলাম ৫ঃ০০ বাজে।
রিয়াদঃ কি এতো সকালে আমি গোসল করবো আবার মসজিদে ও যাবো নামাজ পরতে কখনো না।তাছাড়া আমি ফজরের নামাজ কখনো পরি না।
নীলাঃ কখনো পরেন না তো কি হয়েছে এখন থেকে পরবেন।আমি জানি যে আপনার থেকে কোনো দিন স্ত্রীর অধিকার পাবো না।আর চাইলে ও আপনি তা দেবেন না।কিন্তু স্তী হিসেবে আপনার কাছে কয়েক টা জিনিস তো চাইতেই পারি তাই না।এর মধ্যেই আমার একটা চাওয়া হলো আপনি নিয়মিত নামাজ পরবেন।আরেক টা চাওয়া, থাক এটা নামাজ পরে আসলেই বলবো।
আমি চাই আমার স্বামী পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পরুক।আপনি কি আপনার স্ত্রীর এই চাওয়া টুকু ও পূরন করবেন না ( বিনয়ের শুরে)
রিয়াদঃ ঠিক আছে আমি গোসল করে নামাজ পরতে যাচ্ছি। ( নীলা এমন ভাবে কথা টা বলল যে আর না করে পারলাম না।নীলা ঠিকি তো বলেছে স্ত্রী হিসেবে আমি তো ওর এই চাওয়া টা অন্তত পূরন করতেই পারি।)টাওয়েল টা হাতে নিয়ে যেই ওয়াস রুমে যাবো তখনি নীলা আবার বলে উঠলো,,,
নীলাঃ আপনার হয়তো এতো সকালে গোসল করার অভ্যাস নেই।তাই আপনার শরীর যদি পাক থাকে তাহলে গোসল না করলে ও চলবে।আপনি বরং অযু করেই নামাজ টা পরে আসেন।
নীলার কথা মতো ওযু করে নামাজ টা পরতে চলে গেলাম।
চলবে।।।।।
অবহেলা
লেখকঃ MH Riad
Part:6
নীলার কথা মতো ওযু করে নামাজ পরতে চলে গেলাম।
নামাজ পরে রুমে এসে দেখি নীলা এখনো জায় নামাজের ওপর বসে আছে।
রিয়াদঃ নীলা তোমার নামাজ এখনো শেষ হয়নি।নামাজ শেষ হলে ঘুমিয়ে পরো।( বাসায় এসে ঘড়িতে দেখলাম সকাল ৬ টা বাজে।এতো সকালে তো আমাদের বাড়ির কেউ ঘুম থেকে উঠবে না। তাই নীলা একা একা জেগে কি করবে সে জন্য কথা টা বললাম)
নীলাঃ নামাজ শেষ হয়ে গেছে তবে কুরআন তেলওয়াত করা টা এখনো বাকি আছে।মনে হচ্ছে আপনার খুব ঘুম পেয়েছে।আপনি বরং বিছানায় গিয়ে শুয়ে পরুন।( হাল্কা মুচকি হেসে
)
নীলার সৌন্দর্য টা যেনো আরো দশ গুন বারিয়ে দিলো ওর মুখের হাসি টা।এমনিতেই নীলাকে পুরো পুরির মতো দেখতে তারওপর ওর এই রকম মায়া জরানো হাসি আমায় এক প্রকার ওর দিকে আকৃষ্ট করছে।খানিক্ষন পরেই রিয়ার কথা মনে পরতে নিজেকে সামলে নিলাম।
রিয়াদঃ হুম। বিছানায় এসে শুয়ে পরলাম তবে ঘুমাতে পারলাম না।কারন নীলার এই মধুর কন্ঠে কুরআন তেলওয়াত শুনলে আমার কখনই ঘুম আসবে না।আগে নীলার কুরআন তেলওয়াত ওর ঘরের পাশে গিয়ে শুনতাম আর এখন তো ও আমার ঘরে বসেই কুরআন তেলওয়াত করছে।
যতখন নীলা কুরআন তেলওয়াত করলো ততখন আমি বিছানায় চোখ বুজে শুনলাম তারপর ঘুমিয়ে গেলাম।
সকাল ৮ টার দিকে ঘুম থেকে উঠে অফিস যাবো বলে রেডি হচ্ছিলাম তখন রিমি এসে বলে গেলো আজ মা অফিস যেতে নিষেধ করেছে।তাই আবার বিছানায় এসে শুয়ে পরলাম।
বিছানায় শুয়ে পরার কিছুখন পরেই টের পেলাম কে যেনো আমার নাম ধরে ডাকছে।চোখ মেলে তাকিয়ে তো আমি অবাক।
রিয়াদঃ সিহাব তুই।(সিহাব কে এসময়ে আমাদের বাড়িতে দেখে খুবি অবাক হলাম
)
সিহাবঃ হে আমি, এখানে এতো অবাক হওয়ার ও কিছু নেই আর এভাবে লাফ দিয়ে বিছানা থেকে উঠার ও ধরকার নেই।আন্টি আমায় ফোন করে বললো আজ তুই অফিসে আসবি না। তাই তর বাড়িতেই চলে এলাম।আর,,,,
রিয়াদঃ হে আর,,,,( জিগ্যেসু দৃষ্টিতে সিহাবের দিকে তাকিয়ে)
সিহাবঃ আর শুনলাম তর নাকি কাল বিয়ে হয়ে গেছে।
তারমানে মা সিহাব কে বলে দিয়েছে আমার বিয়ের বেপারে।
রিয়াদঃ মা কি তকে সব বলে দিয়েছে?
সিহাবঃ হুম একটু আগেই আমাকে ফোন করে জানালো।
রিয়াদঃ বুঝলাম আর তুই কাকে কাকে জানিয়েছিস?( ভয়ে আমার বুক কাপছে
)
সিহাবঃ এখনো কাউকে জানাইনি বাট একটু পরেই জানাবো।
সিহাব কাউকে জানায়নি শুনে হাফ ছেড়ে বাচলাম।
রিয়াদঃ একটু পরে জানাবি মানে।
প্লিজ ভাই কাউকে কিছু জানাস না, আমি কোন পরিস্থিতিতে পরে বিয়ে টা করেছি মা নিশ্চয়ই তকে বলেছে।তাছাড়া আমি রিয়া কে ভালোবাসি। কয়েক দিন পরেই নীলাকে ডিভোর্স দিয়ে আমি রিয়া কে বিয়ে করবো।
সিহাবঃ না কিছু না।আচ্ছা এখন এসব কথা বাদ দে তো যা ফ্রেস হয়ে আয় সবাই এক সাথে নাস্তা করবো।তকে ছাড়া তো কেউ আমায় নাস্তা দিবে না।
রিয়াদঃ ওকে।
ফ্রেস হয়ে ওয়াস রুম থেকে বের হলাম। তখন সিহাব আবার বলতে শুরু করলো।
সিহাবঃ ভাই বলতে হবে বউয়ের মতো একটা বউ পেয়েছিস।আমি বাড়িতে এসে কতো করে ভাবির মুখ টা দেখতে চাইলাম কিন্তু উনি দেখালেনই না।
রিয়াদঃ আসলে নীলা অনেক পর্দা করে চলে ভাই। সে জন্যই হয়তো তকে মুখ টা দেখায়নি।তর কথা কি বলবো আমি এই বাড়িতে এতো গুলো দিন ধরে ওর সাথে ছিলাম, তবু ও আমায় একদিম মুখ দেখায় নি।কাল রাতে বিয়ে হওয়াতে প্রথম মুখ টা দেখতে পেয়েছি।
সিহাবঃ তা ভাবির চেহারা টা কেমন তর মুখ থেকেই শুনি।বাস্তবে তো দেখতে পাবো বলে মনে হয় না।
রিয়াদঃ দেখতে পুরো পরির মতো।এরকম সুন্দর মেয়ে আমি আমার সারা জীবনে একটা দেখলাম।
সিহাবঃ রিয়ার থেকে ও সুন্দর?
রিয়াদঃ হুম অনেক।( নীলার কথা ভাবতে ভাবতে অন্য মনস্ক হয়ে পরেছিলাম। তাই ভুলে সত্যি কথা টা মুখ দিয়ে বেরিয়ে গেছে।যখনি বুঝলাম আমি কি বলেছি।তখনি,,,)
রিয়াদঃ না মানে রিয়ার থেকে একটু কম সুন্দর। ( আমতা আমতা করে কথা টা বললাম
)
সিহাবঃ থাক হয়েছে আর মিথ্যা বলতে হবে না।যা বুঝার আমি বুঝে গেছি।এখন নিচে চল তর বউ আবার তর জন্য কখন থেকে ওয়েইট করছে।
রিয়াদ কে নিয়ে ডাইনিং টেবিলের পাশে চলে এলাম।
রিয়াদঃ ডাইনিং টেবিলের সামনে গিয়ে দেখি মা, রিমি- রায়হান ওরা খাবার টেবিলের পাশে বসে আছে আর নীলা মার পাশে দাড়িয়ে আছে।
আমাকে ডাইনিং টেবিলের সামনে আসতে দেখেই নীলা মার কাছ থেকে আমার কাছে এসে একটি চেয়ার এগিয়ে দিলো বসার জন্য।নীলার এরকম কাজ কর্মে অনেক টাই অবাক হলাম।কারন যে মেয়ে কাল সকালে ও আমার খাবার সময় ১০ হাত দূরে থাকতো,সে মেয়ে আজ আমার এতো কাছে দাড়িয়ে আছে।কিছু না বলে আমি সে চেয়ারে বসে পরলাম আর সিহাব আরেক টা চেয়ারে।
নীলা সবাইকে খাবার বেরে দিচ্ছে সুধু সিহাব কে বাধে। আমি খাবার খাওয়ায় খুব মনোযোগি ছিলাম যার জন্য নীলা যে সিহাব কে খাবার দিচ্ছে না তা খেয়ালি করিনি।
হঠাৎ সিহাবের গলার আওয়াজ শুনে ওর দিকে তাকালাম।
সিহাব ঃ কি বেপার আন্টি ভাবি কি আমায় খাবার দিবে না নাকি।সেই কখন থেকে খাবার প্লেট নিয়ে বসে আছি।
মাঃ এ বেপারে আমাকে কিছু বলে লাভ নেই।কারন নীলা আমায় আগেই বলে দিয়েছে রিয়াদের অনুমতি ছাড়া কাউকে খাবার দিতে পারবে না।মানে কোনো পরপুরুষ কে বুঝলি।
সিহাবঃ ও আচ্ছা বুঝেছি, আমি তো ভুলেই গিয়েছিলাম আমার ভাবিটা আবার অনেক স্বামী ভক্ত। সে তো রিয়াদের অনুমতি ছাড়া আমায় খাবারই দিবে না।কিরে রিয়াদ তুই দেখি এখনো ভাবিকে আমায় খাবার দিতে বলছিস না।আমাকে কি আজ না খাইয়ে রাখবি নাকি।
রিয়াদঃ নীলার প্রতিটা কাজে আমি শুধু অবাকের ওপর অবাক হচ্ছি।এরকম মেয়ে ও কি এই যুগে আছে যে কিনা স্বামীর অনুমতি ছাড়া কাউকে খাবার টা ও বেরে দেয়না।
সিহাব কথা টা বলার পর রিমি আর মা ও অনেকবার নীলাকে বলল খাবার টা বেরে দিতে। কিন্তু নীলা কারো কোনো কথা না শুনে চুপ করে আমার পাশেই দাড়িয়ে রইলো।তাই আমিই কোনো উপায় না পেয়ে খাবার টা দিতে বললাম, তারপর গিয়ে নীলা সিহাব কে খাবার টা দিলো।
খাবার খাওয়া শেষ করে যে যার রুমে চলে গেলো।আমি ও সিহাব কে বিদায় দিয়ে রুমে চলে আসলাম।
দুপুরের দিকে লান্চ করে বেলকনিতে বসে আছি।তখনি আমার মোবাইলে কল এলো।মোবাইলের স্ক্রিনে তাকিয়ে দেখি আরিফ( আমার বন্ধু) ফোন দিয়েছে। ফোন টা রিসিব করলাম।
রিয়াদঃ হ্যালো কেমন আছিস দোস্ত।
আরিফ ঃ হে ভালো আছি সাথে অনেক রেগে ও আছি।
চলবে।।।।।
গল্প: অবহেলা
পর্ব_৪
লেখনিতে: MH Riad
.png)
0 Comments