উনাকে ( নীলাকে) তো একজন ভাগ্যমান মানুষই তার বউ হিসেবে পাবে।( মনে মনে বললাম।)
রিয়াদঃ ঠিক আছে আপনার যেটা ভালো লাগে সেটাই নিন।( নীলাকে বললাম।অমনি উনি দুটো দুই রংয়ের বোরকা পছন্দ করে নিলেন)
শপিং মলে যখন এসেই গেলাম তখন রিয়ার জন্য গিফট টা এখান থেকেই নিয়ে নেই।নাহলে তো আজ আমার রক্ষা নেই।যে পরিমান রেগে বোম হয়ে আছে।আমি আজ খালি হাতে গেলেই সে বোম টা আমার ওপর পরবে।
নীলা আপনার কি বোরকা নেওয়া হয়েছে।
নীলাঃ জ্বি হয়েছে।
রিয়াদঃ তাহলে চলুন আমার সাথে।
কাপড়ের দোকানের দেনা পাওনা মিটিয়ে সেখান থেকে একটি গয়নার দোকানে চলে এলাম।সেখানে দাকানের কর্মচারীদের কয়েক টা ডায়মন্ড রিং দেখাতে বললাম।
রিয়াদঃ এখান থেকে একটা রিং পছন্দ করুন তো।( নীলা কে বললাম)
নীলাঃ আমার এসবের কোনো দরকার নেই।আমি এগুলো কখনো পরি না।
রিয়াদঃ আমি জানি আপনার এগুলোর কোনো দরকার নেই।তাছাড়া আমি রিং টা আপনার জন্য না আমার গার্লফেন্ডের জন্য পছন্দ করতে বলছি।আসলে আমার চয়েজ তেমন একটা ভালো না।
নীলাঃ আপনার গার্ল ফ্রেন্ড ও আছে।(কিছু টা অবাক হয়ে
)
রিয়াদঃ হুম, কেনো কোনো সমস্যা?
নীলাঃ না মানে বিয়ের আগে কোনো মেয়ের সাথে মেলামেশা করাটা কি ঠিক?( আসতে করে বললাম কথা টা)
রিয়াদঃ কিছু বললেন আপনি?( নীলা আসতে করে কি যেনো বলল,যা আমি ভালোভাবে বুঝতে পারিনি।তাই জিগ্যেস করলাম)
নীলাঃ না কিছু না, এই রিং টা অনেক সুন্দর। আপনি বরং এই রিং টাই নিন।
নীলা একটি রিং আমার দিকে এগিয়ে দিয়ে কথা টা বলল।রিং টা দেখতে খুব সুন্দর তাই নিয়ে নিলাম।
রিয়াদঃ ধন্যবাদ।
কোনো রিপ্লে দিলো না সুধু একটু হাসলো নীলা।
শপিংয়ের পর নীলাকে বাড়িতে পৌছে দিয়ে অফিসে চলে এলাম।
দুপুরের দিকে আমি আর সিহাব এক সাথে লান্চ করছি সাথে দুজনে গল্প ও করছি।
সিহাব ঃ রিয়াদ আজ তর অফিসে আসতে এতো লেট হলো কেনো?
রিয়াদঃ শপিংয়ে গেছিলাম।
তুই শপিংয়ে গেয়েছিলি,কিন্তু তুই তো শুক্রবার ছাড়া কখনো শপিংয়ে যাস না।
রিয়াদঃ ইচ্ছে করে যাইনিরে এক প্রকার বাধ্য হয়ে এক জনের সাথে যেতে হয়েছে।
সিহাবঃ ভাই তকে আগেই বলেছিলাম রিয়া মেয়াটার থেকে দূরে দূরে থাক।এখন দেখলি তো মেয়েটা কতো বড় ফাজিল অফিস টাইমে তকে নিয়ে শপিংয়ে যায়।( অনেক টা রেগে
)
রিয়াদঃ আরে ভাই তুই রেগে যাচ্ছিস কেনো।আমি রিয়া কে নিয়ে শপিংয়ে যাইনি।আমি অন্য আরেক টা মেয়েকে নিয়ে শপিংয়ে গিয়েছিলাম।
সিহাবঃ কি তুই অন্য আরেক টা মেয়েকে নিয়ে শপিংয়ে গেছিলে। কাকে নিয়ে?( আমি তো অবাক রিয়াদ কিনা রিয়া কে ছেড়ে অন্য আরেক টা মেয়ের সাথে শপিংয়ে গেছিলো
)
রিয়াদঃ হুম,তকে তো বলাই হয়নি।কাল একটা মেয়েকে আমি রাস্তায় ফুটপাতের পাশে পাই,তারপর ওকে বাড়িতে নিয়ে যাই।সিহাব কে সব কিছু খুলে বললাম।
সিহাবঃ ও আচ্ছা আমি ভেবেছিলাম তর হয়তো এতো দিনে একটু জ্ঞান বুদ্ধি হলো। তাই রিয়া কে ছেড়ে অন্য আরেক টা ভালো মেয়ের প্রেমে পরেছিস।
রিয়াদঃ আরে এসব কিছু না।তবে নীলা মেয়েটা কিন্তু অনেক ভালো।নম্র - বদ্র সাথে অনেক পর্দাশীল।মেয়েটার বিহেভিয়ার দেখলে যে কেউ ওকে প্রেম না সরাসরি বিয়ে করতে চাইবে।( খাবার খেতে খেতে বললাম)
সিহাবঃ তাহলে তুই নীলাকে বিয়ে করে নে না।অন্তত ঐ লোভি রিয়ার হাত থেকে বেচে যাবি।দেখ ভাই আমি সুধু মাএ তর বন্ধু না আমি তর ভাই।আমি কখনো তর খারাপ চাইবো না।এর আগে ও তকে বলেছি রিয়া কে ছেড়ে দে এখনো বলছি।কারন মেয়েটা একে বারে সুবিধার নয়।তাছাড়া আমি অনেকের মুখে শুনেছি রিয়ার অনেকের সাথে সম্পর্ক আছে।
রিয়াদঃ আমি জানি তুই রিয়াকে একে বারে সহ্য করতে পারিস না।তাই বলে ওর নামে মিথ্যা বলবি এটা তর কাছে আমি কখনো আশা করিনি।
সিহাবের কথা গুলো শুনে খাবার খাওয়ার ইচ্ছে টাই মরে গেলো।তাই কেন্টিন থেকে খাবার না খেয়েই চলে এলাম।
রাত ৯ টার দিকে অফিস থেকে বেরিয়ে সোজা রিয়ার বলে দেওয়া রেস্টুরেন্টে চলে এলাম।
সেখানে গিয়ে দেখলাম রিয়া আমার আগেই রেস্টুরেন্টে চলে এসেছে।ওর পাশে গিয়ে বসলাম একটা চেয়ার টেনে।আমাকে ওর পাশে বসে থাকতে দেখে ও কিছু টা দূরে সরে বসলো।আমি আবার ওর একেবারে কাছে যেয়ে বসলাম।ও এবার ও আমার থেকে দূরে সরে বসতে চাইলো কিন্তু আমি দূরে সরতে দিলাম না।তার আগেই ওর হাত টা ধরে টেনে আমার কাছে নিয়ে এলাম।
রিয়াদঃ কি হয়েছো রিয়া তোমার তুমি এমন করছো কেনো।বললাম তো কাল অনেক বিজি ছিলাম তাই আসতে পারিনি।সে জন্য কি এখন তুমি রাগ করে বসে থাকবে।?
রিয়াঃ না আমি রাগ করতে যাবো কেনো।তুমি আমার কে যে তোমার উপর রাগ করে বসে থাকবো।( অভিমানী শুরে
)
রিয়াদঃ বুঝলাম আমার জান টা আমার উপর অনেক রেগে আছে।তবে জানোতে আমার জানটার রাগ কি ভাবে ভাঙ্গাতে হয় তা আমি খুব ভালো করেই জানি।জান তুমি চোখ দুটো বন্ধ করো তো।
রিয়াঃ কেনো।?( অভিমান এখনো ঝারি আছে
)
কথা না বলে চোখ দুটো বন্ধ করই না।জোর করে রিয়ার চোখ দুটো বন্ধ করালাম।এরপর ওর জন্য শপিংমল থেকে যে রিং টা এনেছিলাম সেটা ওর সামনে ধরলাম।
রিয়াদঃ এবার চোখ খোলো।রিয়া চোখ খুলল।
রিয়াঃ ওয়াও এতো সুন্দর ডায়মন্ড রিং আমার জন্য। প্রাইস কতো এটার।( খুশি তে চেয়ার থেকে লাফিয়ে উঠলাম
)
আগেই জানতাম রিয়া রিং টা দেখলে অনেক খুশি হবে।
রিয়াদঃ সেটা তোমার না জানলে ও চলবে।আগে তুমি এটা বলো রিং টা ভালো লেগেছে তো।আর আমার উপর রাগ টা কমেছে কিনা।
রিয়াঃ রিং টা অনেক অনেক সুন্দর, আমার খুব ভালো লেগেছে।আর আমি কি আমার বাবুটার ওপর রাগ করে থাকতে পারি নাকি।আমি তো আমার বাবুটা কে অনেক ভালোবাসি।লাভ ইউ বাবু।( বলেই রিয়াদ কে জরিয়ে ধরলাম)
রিয়াদঃ ( রিয়াকে নিজের কাছ থেকে ছাড়িয়ে নিলাম)বিয়ের আগে এসব করার কোনো ধরকার নেই বুঝলে।বিয়ের পর যা ইচ্ছা তাই করো।
রিয়াঃ তোমার এসব ঢং আমার একদমি ভালো লাগে না রিয়াদ।ভালোবেসে জাস্ট একটা হাগ করলাম এতে ও কি বাধা দেওয়ার খুব ধরকার ছিলো।
রিয়াদঃ তবু ও রিয়া বিয়ের আগে এগুলোর কোনো ধরকার আছে বলে আমার মনে হয় না।আচ্ছা এসব বাদ দেও এখন কি খাবে সেটা বলো আমি অর্ডার দিচ্ছি।
রিয়াঃ রিয়াদ আমার পেতে খাওয়ার মতো একটু জায়গা ও খালি নেই।আজ ডিরেক্টর স্যারের সাথে আমার একটা মিটিং ছিলো।সেখানে একটু আগে ডিনার করেছি।তুমি বরং আমায় কিছু খাবার পেক করে দিয়ে দিতে বলো সেগুলো বাসায় গিয়ে তমা কে ( রিয়ার ছোট বোন) দিয়ে দিবো।
রিয়াদঃ ঠিক আছে।
ভেবেছিলাম আজ রিয়া আর আমি এক সাথে ডিনার করবো।তাই মা কে ও ফোন করে বলে দিয়েছিলাম যে আজ আমি বাহির থেকে খেয়ে আসবো।
খাবার পেক করার জন্য ১০ মিনিট আগে এই রেস্টুরেন্টের এক লোক কে বলেছিলাম।উনি খাবার গুলো নিয়ে এখনো আসেন নি।এদিকে রিয়া আমার সামনে একটা ছেলের সাথে হেসে হেসে কথা বলতেছে।জিগ্যেস করেছিলাম ছেলেটা কে।রিয়া বলল ওরা এক সাথেই কাজ করে।সেজন্য কিছু বললাম না তবে মনে মনে খুব রাগ হচ্ছে এটা ভেবে যে কি ধরকার আরেক টা ছেলের সাথে এভাবে হেসে হেসে কথা বলার
এই জন্যই মা রিয়া কে সহ্য করতে পারেন না।এর মধ্যে খাবার গুলো চলে এলো।খাবার গুলো রিয়ার হাতে ধরিয়ে দিয়ে চুপ চাপ সেখান থেকে সোজা বাড়ি চলে এলাম।কারন রিয়া কে এখন ঐ ছেলের জন্য কিছু বললেই ন্যাকামি কান্না শুরু করে দিবে।
রেস্টুরেন্ট থেকে বের হওয়ার সময় রিয়া আমাকে অনেক বার ডেকেছে। কিন্তু আমি ওর কোনো কথা না শুনে সেখান থেকে চলে এলাম।বয়ফ্রেন্ড কে একা একা বসিয়ে রেখে উনি আরেক জনের সাথে হেসে হেসে কথা বলবেন আবার উনাকে কিছু বললে ন্যাকামি কান্না ও করবে।
এভাবে ১৫ টি দিন কেটে গেলো।
সকাল বেলা অফিস,সন্বাহে রিয়ার সাথে দেখা করে ওকে অনেক গুলা গিফট দেওয়া, আর সকালে নীলার কুরআন তেলওয়াত শুনে ঘুম ভাঙ্গা এভাবে দিন গুলো খুব ভালো কাটছে।
আজ সকালেও নীলার মধুর কন্ঠে কুরআন তেলওয়াত শুনে ঘুম টা ভেঙ্গে গেলো।কিছুখন নীলার কুরআন তেলওয়াত দরজার বাহিরে দাড়িয়ে শুনলাম,।তারপর বাগানে কিছুখন হাটা হাটি করে ঘরে এসে ঘুমিয়ে পরলাম।
অবাক করা বেপার হলো এটা যে এই পনেরো দিনের মধ্যে নীলা মেয়েটার চেহারা একবার ও দেখতে পারিনি।কেনো জানিনা নীলার চেহারা টা দেখতে খুব ইচ্ছে করে।ইচ্ছে করে দেখতে কি আছে ঐ মেয়েটার গলার শুর,চেহারার মধ্যে যে প্রতিনিয়ত ওর দিকে আমায় আকৃষ্ট করছে।
নাস্তার টেবিলে আমি,মা, রায়হান -রিমি আমরা চারজন এক সাথে বসে নাস্তা করছি আর নীলা আমাদের থেকে কিছু টা দূরে দাড়িয়ে আছে।
মাঃ নীলা মা আমাদের সাথে বসেই নাস্তা টা করে নে না।( নীলাকে বললাম)
নীলাঃ না আন্টি আপনারা বরং করে নিন তারপর আমি নাস্তা করবো।
মাঃ কেনো নীলা তুমি পরে নাস্তা করবে কেনো।আমাদের সাথে বসেই তো নাস্তা টা করতে পারো।
রিমিঃ কেনো আবার তোমার ছেলের জন্যই তো নীলা আপু নাস্তা করতে পারে না।আপু ভয় পান যদি তোমার ছেলে নীলার আপুর খাওয়ার সময় উনার মুখ টা চুরি করে দেখে ফেলেন সেই জন্য।
নীলাঃ এই না আন্টি তেমন কোনো কিছু না।রিমি আপু তুমি সুধু সুধু আমার নামে মিথ্যা বলছো কেনো।
রিমিঃ
রিয়াদঃ
মাঃ থাক আমি বুঝে গেছি নীলার সমস্যা টা কোথায়।আসলে নীলা খুব লাজুক প্রকৃতির মেয়ে তো তাই রিয়াদের সামনে খেতে বসে না।তবে চিন্তা করো না আর কিছু দিন পরেই এমন ব্যবস্থা করবো যে তুমি রিয়াদের সাথে বসেই নাস্তা করতে পারবে।( মুচকি হেসে
)
নীলাঃ আন্টির কথার মানে টা কিছুই বুঝলাম না।
রিয়াদঃ এতোখন যাবত তিন জনের কথা চুপ করে শুনলাম।আসলে মা এই পনেরো দিনে নীলাকে নিজের মেয়ে ভেবে নিয়েছে।তাই আমার থেকে ও বেশি নীলাকে ভালোবাসেন।
মা এই পনেরো দিনে নীলাকে এতো টাই আপন করে নিয়েছেন যে আমাকে ছাড়া ৫ দিন থাকতে পারবেন।কিন্তু নীলাকে ছেড়ে ১ ঘন্টা ও থাকতে পারবেন না।
এসব ভাবছিলাম তখনি মা বলে উঠলেন,,,,
মাঃ রিয়াদ আমি তর বিয়ে ঠিক করে ফেলেছি।কয়েক দিন পরেই তর বিয়ে।
রিয়াদঃ (মার কথা টা শুনে গলায় খাবার আটকে গেলো।তারাতারি টেবিলের ওপর থেকে এক গ্লাস পানি নিয়ে খেয়ে নিলাম) মা তুমি কি বললে আমার বিয়ে তা ও কয়েক দিন পর( অনেক টা অবাক হয়ে
)
নীলাঃ আন্টির কথা শুনে আমি ও অনেক টা অবাক হলাম।কিছুখন পর আবার নিজেকে সামলে নিলাম এটা ভেবে হয়তো উনার বিয়ে উনার গার্লফ্রেন্ডের সাথেই ঠিক হয়েছে।
মাঃ হে তোমার বিয়ে তাও কয়েক দিন পরে।
রিয়াদঃ কি আবল তাবল কথা বলছো তুমি মা।বিয়ে কি এতো সোজা নাকি।বিয়ে করাতে হলে প্রথমে মেয়ে দেখতে হবে।তারপর মেয়ে রাজি কিনা সেটা জানতে হবে।এরপর না বিয়ে।।
মাঃ মেয়ে আমি অনেক আগেই দেখে ফেলেছি।তাছাড়া আমি জানি তর জন্য যে মেয়েকে আমি দেখেছি সে কখনো আমার কথা ফেলবে না।আমি যাকে বিয়ে করতে বলবো সে তাকেই চোখ বুঝে বিয়ে করে নিবে।আমি ঠিক বললাম তো নীলা।( নীলার দিকে তাকিয়ে)
নীলাঃ হুম।
রিয়াদঃ কিন্তু মা আমি তো,,,আর কিছু বলতে পারলাম না তার আগেই কে যেনো দরজা টা নোক করলো।
রিমি দরজা টা খুলতেই কয়েক টা পুলিশ আমাদের বাড়িতে ঢুকে পরলো।
চলবে।।।।
অবহেলা
লেখকঃ MH Riad
Part :4
রিমি দরজা টা খুলতেই কয়েক টা পুলিশ আমাদের বাড়িতে ঢুকে পরলো,সাথে একজন পুরুষ আর একজন মহিলাম ও আছে।
মা আমি আমরা সবাই উনাদের দেখে বসা থেকে উঠে দারালাম।খেয়াল করলাম নীলা ঐ মহিলা আর পুরুষ টাকে দেখে মার পিছনে গিয়ে দাড়ালো।নীলার হাপ ভাব দেখে মনে হচ্ছে ও অনেক টা ভয় পাচ্ছে, কিন্তু কেনো পাচ্ছে সেটা বুঝতে পারলাম না।
এরি মধ্যে পুলিশ অফিসার বলতে শুরু করলো,,,,
পুলিশ ঃ সরি স্যার আপনাদের ডিস্টার্ব করতে চলে আসলাম।
রিয়াদঃ ইটস ওকে সমস্যা নেই, তা কি জন্য এখানে আসা সেটা কি জানতে পারি।
পুলিশ ঃ আসলে স্যার আপনার নামে একজন কমপ্লেইন করেছে।( ভয়ে ভয়ে কথা টা বললাম
)
পুলিশের কথা টা শুনে মূহুর্তেৈ মাথা টা গরম হয়ে গেলো।
রিয়াদঃ কি আমার নামে কমপ্লেইন করেছে কে।কার এতো বড় সাহস।?( অনেক টা রেগে
)
পুলিশ ঃ স্যার উনি কমপ্লেইন করেছেন। আপনি নাকি উনার স্ত্রীর বোনকে আপনার বাড়িতে জোর করে রেখে দিয়েছেন।
( পুলিশের সাথে আশা লোকটির দিকে তাকিয়ে কথা টা বললো)
রিয়াদঃ কি সব আল্তু ফাল্টু কথা বলছেন। আমি কেনো উনার স্তীর বোনকে আমার বাড়িতে জোর করে রাখতে যাবো।অফিসার এখানে তেমন কিছুই হয়নি আপনি উনাদের নিয়ে আসতে পারেন।
পুলিশ ঃ স্যার আপনার মার পিছনে যে মেয়ে টা দাড়িয়ে আছে সে মেয়েটা কে।লোক টা দাবি করছেন উনিই নাকি তার স্ত্রীর বোন ।লোকটি আরো বলেছেন আপনারা তাকে ভয় দেখিয়ে জোর করে এই বাড়িতে রেখেছেন।
রিয়াদঃ আপনি,,,,
মাঃ রিয়াদ তুই চুপ কর আমি দেখছি বেপার টা।
রিয়াদঃ ওকে
মাঃ আচ্ছা উনাদের মন্তব্য অনুযায়ী আমরা তাদের বোন বা শালীকে এখানে জোর করে রেখেছি তাই তো।কিন্তু আমরা তো তেমন কিছুই করিনি। আপনি চাইলে নীলাকে জিজ্ঞেস করতে পারেন।( পুলিশ কে বললাম)
নীলার দুলাভাই ঃ না অফিসার উনি মিথ্যা কথা বলতেছে। উনারা সবাই মিলে হয়তো নীলাকে ভয় দেখিয়েছেন, যাতে ও আপনাদের সামনে মিথ্যা কথা বলে।
মাঃ দেখুন ভয় কিন্তু আমরা দেখাইনি বরং নীলা আপনার ভয়ে বাড়ি থেকে পালিয়ে এসেছে।বেশি বারাবারি করবেন না নয়তো যে পুলিশ দিয়ে আপনি আমাদের ধরে নিতে এসেছেন না সেই পুলিশ দিয়েই আপনাকে হাতকড়া পড়াবো বলে দিলাম।
তাছাড়া নীলা এখন প্রাপ্তবয়স্ক ওর যেখানে ইচ্ছা যার সাথে ইচ্ছা থাকতে পারে।
নীলা মা তুমি পুলিশদের কাছে বলে দেও তো আমরা তোমাকে এখানে জোর করে রেখেছি না তুমি ইচ্ছে করেই এখানে থাকছো।
নীলাঃ আমি এখানে নিজের ইচ্ছায় থাকছি।( ভয়ে ভয়ে কথা টা বলেই ফেললাম
)
মাঃ নীলার নিজের মুখেই শুনলেন তো অফিসার।এবার আপনারা উনাকে নিয়ে যেতে পারেন।
দুলাভাই ঃ ঠিক আছে মানলাম নীলা নিজের ইচ্ছায় এখানে আছে।তবে কি পরিচয়ে আছে ও এখানে।আজ উনারা নীলার সাথে ভালো ব্যবহার করছেন বলে যে সব সময় ভালো ব্যবহার করবেন সেটার কি কোনো নিশ্চয়তা আছে।হতে পারে কয়েক দিন পর উনারা নীলার একটা ক্ষতি করে দিলেন। তখন কি আপনারা সেই ক্ষতির ক্ষতি পূরন দেবেন।তাই বলিকি উনাদের বলুন নীলাকে আমাদের কাছে ফিরিয়ে দিতে।( পুলিশ কে বললাম)
পুলিশ ঃ উনি ঠিক কথাই বলেছেন মেডাম উনি ( নীলা) আপনাদের এখানে তো কোনো পরিচয় ছাড়াই আছেন।সে জন্য এটাই ভালো হয় আপনারা উনাকে( নীলাকে) উনার পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দিন।
মাঃ কে বলল নীলা আমাদের এখানে কোনো পরিচয় ছাড়া থাকছে।ওর এখানে একটা পরিচয় আছে।আর সেটা হলো নীলা আমার ছেলের হবু বউ।আর আজই ওদের বিয়ে হবে।
রিয়াদের মার কথা শুনে তো সেখানে উপস্থিত সবাই অবাক বিশেষ করে রিয়াদ আর নীলা।
রিয়াদঃ মা এমন একটা কথা বলবে আমি কখনো ভাবতেই পারিনি।আমার বিয়ে তাও আবার নীলার সাথে।(
অনেক টা অবাক হলাম)
মাকে কিছু বলতে ও পারছি না। কিছু বলতে নিলেই আমাকে হাতের ইশারায় চুপ থাকতে বলছে।কিছু খন পর মা আমাকে নিয়ে আলাদা একটা রুমে গেলেন।
রিয়াদঃ মা এসবের মানে কি তুমি সবার সামনে এটা কেনো বললে যে নীলার সাথে আমার বিয়ে?তুমি নাস্তা করার সময় বললে আরেক টা মেয়ের কথা আর এখন নীলার কথা বলছো।
মাঃ কারন তর নীলার সাথেই বিয়ে হবে সে জন্য সবার সামনে তোদের বিয়ের কথা বলেছি।আর সকালে যে মেয়ের কথা বলছিলাম সে আর কেউ নয় আমাদের নীলাই ছিলো।
রিয়াদঃ কিন্তু মা আমি তো রিয়া কে ভালোবাসি তোমার ভয়ে সে কথা এতো দিন বলতে পারিনি।( রিয়ার কথা বলাতেই দেখলাম মা কিরকম যেনো রেগে গেলো।তবে আমায় তেমন কিছু বলল না)
মাঃ তকে এর আগে ও বলেছি ঐ রিয়া মেয়েটাকে আমার পছন্দ না।অন্তত আমি বেচে থাকতে তর সাথে ওর বিয়ে কখনোই হবে না।সো রিয়া কে ভুলে যা আর আমার কথা মতো নীলাকে বিয়ে কর।না হলে আমার মরা মুখ দেখবি।
তুই কি জানিস না নীলা মেয়েটা কতো টা ভালো।ওর মতো আর একটা মেয়ে পাবি এই যুগে বল।তাছাড়া একটি বার ভেবে দেখেছিস এখন তুই যদি নীলাকে বিয়ে না করিস তাহলে ওর কি হবে।নীলার খারাপ দুলাভাই টা ওকে নিয়ে গিয়ে আবার অত্যাচার করবে।তুই কি এটা চাস।
রিয়াদঃ না কখনোই চাই না।
মাঃ তাহলে বেস হয়ে গেলো, আমার কথাটাই ফাইনাল তুই নীলাকে বিয়ে আজই করছিস।
রিয়াদঃ আজই নীলাকে বিয়ে করছি মানে,,,,
মা আমাকে আর কিছু বলতে না দিয়ে ড্রয়িং রুমে চলে গেলেন।আমি ও মার পিছনে পিছনে সেখানে গেলাম।
মাঃ অফিসার এখন তো আপনাদের কারো কোনো অভিযোগ নেই আমাদের বিরুদ্ধে?
পুলিশ ঃ না মেডাম।তাহলে আমরা আসি।
মাঃ ঠিক আছে যান তবে আপনার সাথে যারা এসেছেন তাদের কে থেকে যেতে বলুন।যতই হক উনারা তো মেয়ের অভিভাবক, বিয়েতে উনাদের অনেক ধরকার হতে পারে।
সন্বাহের দিকে বিয়ে টা হয়ে গেলো।
নীলাঃ আন্টি আমি আপুর সাথে একটু কথা বলবো।
মাঃ আন্টি না এখন থেকে আমাকে মা বলে ডাকবে মনে থাকবে।
নীলাঃ জ্বি।
মাঃ ঠিক আছে যাও আপুর সাথে কথা বলে এসো।
নীলাঃ চারি দিকে তাকিয়ে দেখলাম দুলাভাই কোথাও আছে কিনা।তারপর আপুর কাছে চলে গেলাম।আপু আমাকে দেখা মাএই কান্না শুরু করে দিয়েছে।আমার ও একি অবস্থা আপুকে দেখা মাএই কান্না শুরু করে দিয়েছি।
দৌড়ে গিয়ে আপুকে জরিয়ে ধরলাম আর কাদতে লাগলাম।১০ মিনিটের মতো এভাবেই দু বোন কিছুখন কান্না করলাম।
এরপর আপু আমার চোখ উনার আচল দিয়ে মুছে দিলেন।
নীলাঃ কেমন আছো আপু?( কান্না করতে করতে)
আপুঃ ভালো নারে, তকে ছাড়া এই প্রথম এতো গুলো দিন একা একা থাকলাম।জানিস তকে ছাড়া এতো গুলো দিন থাকতে আমার অনেক কষ্ট হয়েছেরে।
নীলাঃ আমার ও আপু অনেক কষ্ট হয়েছে( বলে আরো জোরে জোরে কাদতে লাগলাম।)
আপুঃ এই পাগলি আবার কান্না করছিস কেনো,কান্না থামা।
এতো ভালো শ্বাশড়ী,এতো ভালো হাসব্যান্ড পেয়ে কেউ কান্না করে নাকি। নীলার চোখের পানি আবার মুছে দিলাম।
নীলাঃ হুম সত্যিই উনারা অনেক ভালো।
আপুঃ আচ্ছা শোন আমি এখন চলে যাচ্ছি, তুই সাবধানে থাকিস।আরেক টা কথা ভুলে ও একা আমাদের বাড়ি যাবি না।যদি আমাকে দেখতে ইচ্ছে করে তাহলে আমাকে কল করবি আমি এসে তর সাথে দেখা করে যাবো।
নীলাঃ হুম।
সব সময় স্বামীর কথা শুনে চলবি।আর স্বামীর সেবা করবি ঠিক আছে?
নীলাঃ আচ্ছা
আপুঃ আমার লক্ষী বোন।( নীলার কপালে একটি চুমু দিয়ে সেখান থেকে চলে এলাম।আসার সময় ওর শ্বাশুড়ির সাথে ও দেখা করে এলাম)
রাত ১২ টা বাজে আমি এখনো ছাদে একা একা দাড়িয়ে আছি।আজকের ঘটে যাওয়া ঘটনা টা আমি এখনো মেনে নিতে পারছি না।রিয়া যদি এ বেপারে যানতে পারে তাহলে কি আমায় কোনো দিন মাফ করবে।ওকে কি আমি বোঝাতে পারবো আমি কোন পরিস্থিতিতে নীলাকে বিয়ে টা করেছি।
চাইলে রিয়াকে এ বেপারে না ও বলতে পারি। তবে আমি চাই না রিয়ার কাছ থেকে কিছু লুকাতে।কালই ওকে সব সত্যি কথা বলে দিবো,এরপর ও মাফ করবে কি করবে না সেটা ওর বেপার।
রিয়ার বেপারে আমি যত টা না চিন্তিত হচ্ছি তার চেয়ে ও বেশি চিন্তিত হচ্ছি এটা ভেবে।যে নীলার সাথে তো আমার ইসলামি শরিয়ত মতে বিয়ে টা হয়ে গেলো।এখন যদি ও আমার কাছে স্ত্রীর অধিকার দাবি করে,তাহলে তো আমি ওর অধিকার পূরন করতে বাধ্য।
চলবে।।।।।
গল্প: অবহেলা
পর্ব_৩
লেখনিতে: MH Riad
.png)
0 Comments