Header Ads Widget

Responsive Advertisement

অবহেলিত স্বামী - পর্ব ২

আজমাইন- প্রথম যখন তোমাকে দেখেছি তখন থেকেই নিজের ওয়াইফ হিসেবে নিজের মনে জায়গা দিয়েছি। কিন্তু আজকে তোমার মুখে এমন কথা শোনার পর খুব খারাপ লাগলো। তারপরও আমি সবটাই মেনে নিয়েছি, আমি জানি ভালোবাসা জোর করে হয় না, আর সেটা জোর ক নিয়েছি হয় না সম্ভাব না, কিন্তু তুমি কোনটাই বেছে নিতে পারছো না। তুমি সময় নাও যতো সময় লাগে নাও, আমি তোমাকে কোনো প্রেসার দিবো না। তোমার যদি মনে হয় কখনো যে চলে যাবে থাকবে না, তাহলে চলে যেতে পারো। আমি তোমাকে সাহায্য করবো।



আজমাইন বেশ কষ্ট লাগছিলো কথাগুলো বলতে, তারপরও বেশ স্বাভাবিকভাবেই বললো।
আজমাইন - আচ্ছা শুনুন তুমি যেহেতু যাবেন না, আর আমাকে স্বামী হিসেবে মানবেন না। তাহলে আমার এইটুকু কথা রাখো। আমার আব্বু আম্মুর সাথে কোনো খারাপ ব্যবহার করোনা, ওরা তোমাকে যোখারাপ ওরা তোমাকে অনেক পছন্দ করেছে। যেদিন তোমাকে প্রথম দেখেছিলাম আমার খুব ভালো লেগেছিলো তাই আমি হ্যা বলে দিয়েছিলাম। আমার আব্বু আম্মুকে নিজের আব্বু আম্মু ভাবতে না পারো কিন্তু ওদের সাথে কোনো খারাপ কিছু বিহেভ করোনা, যেনো ওরা কষ্ট না পায় । এখন কান্না থামাও আর শুয়ে পড়ো।
- কথাটা বলেই আজমাইন একটা বালিশ আর চাদর নিয়ে তারপর নিচে বিছানা করে শুয়ে পড়লো। আরিজা বারবার নাক টানছিলো তাই ও বললো।

আজমাইন - কি হলো শুয়ে পড়ো। দেখো ভাগ্যের কাছে আমরা অসহায় সেখানে আমাদের কোনো হাত থাকে না। যেটা হয়েছে সেটা মেনে নেয়ার চেষ্টা করো। জানি মানতে কষ্ট হবে, কিন্তু মেনে নিতে হবে।
আজমাইন কথাগুলো শুনে, আরিজা চোখ গুলো মুছে নিয়ে শুয়ে পড়ে, তারপর ও আজমাইন বলা কথাগুলো বারবার ভাবতে থাকে। একটা মানুষ কতটা ভালো হলে এভাবে মন খুলে কথা বলতে পারে। আরিজা আজমাইন শেষ কথাটা বারবার ভাবছে, যে ওকে ভালোবাসতে না পারলে চলে যেতে পারে। ওকে মনতে না পাড়লে তাও ওর আব্বু আম্মুর সাথে যেনো কোনো বাজে বিহেভ না করে।

দুইটা মানুষ আজকে দুদিকে শুয়ে আছে কারো চোখে ঘুম নেই। আজমাইন ওর এই অদ্ভুত রকমের সম্পর্কের কথাগুলো ভাবছে আর নিজে নিজেই হাসছে।সেদিন রাতটা কোনো রকমে কেটে গেলো, পরদিন খুব সকাল সকাল ঘুমটা ভেঙ্গে যায়। ভোররাতের দিকে একটু ঠাণ্ডা পড়েছিলো তাই ও উঠে বসে আর খেয়াল করে আরিজা একদম বাচ্চাদের মত করে ঘুমাচ্ছে। কালকে ওকে যেভাবে দেখেছিলো ঠিক তেমনি ভাবে গহনা পড়েই ঘুমিয়েছে। ওর মুখটা একদম মায়াবী, যে কেউ প্রথম দেখাতেই প্রেমে পড়ে যাবে। আজমাইন একটা তাচ্ছিল্যের হাসি দেয় আর ভাবে প্রথমবার দেখেই তো আরিজা প্রেমে পড়েছিলাম।সেজন্য ভালোবাসার কথা না বলে বিয়ের প্রস্তাব দিয়েছিলাম, আর এমনটা হলো। সারাটা জীবন কি এভাবে একা একাই যাবে। ও কাউকে ভালোবাসে না চেষ্টা করেছিলো কাউকে ভালোবাসার কিন্তু হয়ে উঠেনি। আর কেউ ওকে নিজের জীবনের সাথে জড়াইনি। শেষ পর্যন্ত একটা মেয়েকে ভালো লাগলো সেও কিনা অন্য একজনকে ভালোবাসে। আর আজকে ফুলশয্যার রাতে এরকম কথা বললো। আজমাইন রাতে ভালো করে ঘুমাতে পারেনি তাই আলমারি থেকে একটা চাদর বের করে তারপর গায়ে জড়িয়ে নিয়ে আবার শুয়ে পড়ে।একটু পর মিষ্টি রোদের আলোয় এসে আরিজা মুখে পড়তেই ওর ঘুমটা ভেঙ্গে যায়, ও উঠে বসে আর খেয়াল করে আজমাইন গুটিসুটি মেরে ফ্লোরে শুয়ে আছে। ওকে এই অবস্থায় দেখে আরিজা একটু মায়া লাগে। ও বুঝতে পারে আজমাইন ফ্লোরে থাকতে খুব কষ্ট হচ্ছে। আসলেই ওর এসবের অভ্যাস নেই, বড়লোকের ছেলে তাই কষ্ট কি কখনো সেটা বোঝেনি। আরিজা বেশ কিছুক্ষণ ওর দিকে তাকিয়ে রইলো তারপর হঠাৎ করেই রাফিনের কথা মনে পরতে ওর মনটা খারাপ হয়ে যায়। আরিজা ওর আব্বু আম্মু কথা ভেবে নিজেকে স্বাভাবিক করে নিয়ে বিছানা ছেড়ে উঠে ওয়াশ রুমে চলে যায়।

একটা লম্বা শাওয়ার নিয়ে, তারপর একটা নীল শাড়ি পরে বের হয়। আরিজা ওর ভেজা চুলগুলো মুছতে মুছতে আয়নার সামনে যেতে লাগলো তখন ওর চুলের পানি এসে আজমাইন মুখে পড়তেই ওর ঘুমটা ভেঙ্গে যায়। আজমাইন তখন চোখ খুলে খুলতেই দেখে আরিজা ওর ভেজা চুলগুলো মুছতে মুছতে ড্রেসিং টেবিলের সামনে যাচ্ছে। আজমাইন মুখতে আরিজাকে এই দেখে আজমাইন খুব ইচ্ছা করছিলো ওকে পেছন থেকে জড়িয়ে ধরতে একটু আদর করতে। কিন্তু রাতের কথাগুলো মনে পড়তে আজমাইন মুখটা ফ্যাকাসে হয়ে যায়, আরিজা খেয়াল করলো আজমাইন ঘুমটা ভেঙ্গে গেছে, ও ওয়াশ রুমের দিকে যেতে গেলে তখন আরিজা বললো।

আরিজা - আচ্ছা আপনার রাত্রে ফ্লোরে থাকতে খুব কষ্ট হয়েছিলো
তাইনা ?
- আজমাইন একটা তাচ্ছিল্যের হাসি দিয়ে বললো।
আজমাইন - সমস্যা নেই এখন থেকে তো অভ্যাস করতেই হবে।

আজমাইন কথাটা বলে ওয়াশ রুমে ঢুকে গেলো। ওর কথায় আরিজা বেশ খারাপ লাগলো। ও বুঝতে পারছে আজমাইন ভেতর কতটা খারাপ লাগছে। নতুন বিয়ে করে আনা বউ যদি এরকম কোনো কথা বলে তাহলে খারাপ লাগাটায় স্বাভাবিক। আরিজা ডেসিং টেবিলের সামনে বসে নিজেকে একটু গোছাতে লাগলো কারন একটু পরে হয়তো ওর শাশুড়ি ওকে ডাকতে আসবে। আজমাইন বেসিনের সামনে হয়তো ওর শাশুড়ি ও দাড়িয়ে ভাবে ফ্রেশ হয়ে বের হবে কিন্তু না আবার ভাবলো গোসল করে বেরোনোর ঠিক হবে। যদি কেউ কিছু জিজ্ঞেস করে তাই গোসল করে তারপর বের হয়ে দেখে। আরিজা সুন্দর করে সেজেছে। আজমাইন একবার ওর দিকে তাকিয়ে তারপর রেডি হয় নেয়। এর মাঝে আম্মু এসে দরজা ধাক্কা দিয়ে ওদের ডাকতে লাগলো।
আম্মু - আজমাইন, বৌমা সকাল হয়ে গেছে উঠে আর নিচে আসো সবাই তোমাদের জন্য অপেক্ষা করছে।
- আম্মুর কথায় আজমাইন একবার আরিজা দিকে তাকায় তারপর - কিছু বলতে যাবে তার আগেই আরিজা বলতে লাগলো।

আরিজা - আম্মু তুমি যাও তোমার ছেলে রেডি হচ্ছে আমরা একটু পরে আসছি।
আম্মু- আচ্ছা ঠিক আছে।
আরিজা কথায় আজমাইন অনেকটাই অবাক হয়েছে। আসলেই আরিজা ভেবেছে আজমাইন সাথে এক বিছানায় থাকতে না পারুক, ওকে স্বামীর অধিকার দিতে না পারুক, কিন্তু ওর আব্বু আম্মুর সাথে স্বাভাবিক ভাবেই কথা বলবে। আর ওদেরকে আপন করে নেয়ার চেষ্টা করবে।
আজমাইন - ধন্যবাদ আম্মুর সাথে স্বাভাবিকভাবে কথা বলার জন্য ।
আরিজা - এটা এখন আমার কর্তব্য।

আজমাইন - আমি কিন্তু তোমাকে কর্তব্য থেকে মুক্তি দিতে চেয়েছিলাম কিন্তু তুমিই যেতে চাওনি। আবারো বলছি তুমি চলে যেতে চাইলে চলে যেতে পারো। আমি আমার আব্বু আম্মুকে আর তোমার আব্বু আম্মুকে ম্যানেজ করে নিবো। দরকার পড়লে আমি তোমার বয়ফ্রেন্ডের সাথে কথা বলবো, তাও এভাবে শুধু শুধু কষ্ট করার কথা কোনো মানেই হয়না।

আরিজা - ওই যে বললাম আমি নিরুপায়।
আজমাইন রেডি হয়ে তারপর আরিজাকে বলে।
আজমাইন - শোনো আম্মু ডেকে গেছে নিচে চলো, সবাই আমাদের জন্য অপেক্ষা করছে।
আজমাইন কথাটা বলতেই আরিজাও ওর পেছনে পেছনে যেতে লাগলো, ওরা নিচে আসলে আম্মু বললো ।
আম্মু - এইতো আমার ছেলে আর বৌমাটাকে অনেক মানিয়েছে। আমার ছেলের পচ্ছন্দ আছে বলতে হয়।
আম্মুর কথা শুনে আরিজা একটু অবাক হয় তখনই আজমাইন ওকে ইশারা কোনো রিয়েক্ট করতে বারণ করে। আজমাইন একটা চেয়ারে বসতে বসতে বলে।

আজমাইন - আম্মু খেতে দাও তো খুব খিদে পেয়েছে।
আজমাইন কথা ঘুরানোর জন্য বললো।
আম্মু - বৌমা তুমি বসো দাড়িয়ে আছো কেনো ?
আরিজা - আম্মু প্রতিদিন তো তুমি সবাইকে বেড়ে দাও আজকে আমি সবাইকে বেরে দেই, তুমি বসো।
আম্মু - সেকি বৌমা তোমাদের কালকে বিয়ে হয়েছে আর আজকে তুমি কাজ করবে। এটা হয় নাকি, কয়েকটা দিন যাক তারপর না হয় আমি না হয় তখন সবটা তোমার ওপর ছেড়ে দিয়ে ঝাড়া হাত পা হয়ে যাবো। সবটা কিন্তু তোমাকে সামলাতে হবে পারবে তো।

আরিজা - জ্বি আম্মু।
আম্মু - এখন কথা না বলে বসোতো তোমার বরের পাশে বসো।
আম্মুর মুখের বর কথাটা শুনে আজমাইন মনে পরলো। ওর নাকি কালকে বিয়ে হয়েছে, ওর খুব হাসি পাচ্ছিলো। যেখানে আরিজা ওকে স্বামী হিসেবে মানেনা সেখানে আবার বর। আম্মু খাবার বেরে দিলে আরিজা খেতে লাগলো, ও একবারও আরিজা দিকে তাকাচ্ছে না। ওর চোখে মুখে কেমন একটা বিষন্নতার ছাপ। হওয়াটা কি স্বাভাবিক নয়। আজমাইন খাওয়া শেষ করে রুমে চলে আসলো। এর মাঝে আজমাইন বন্ধু আলামিন মেহেদী ওরা বাসায় এসে আম্মুকে জিজ্ঞেস করে।

মেহেদী - আন্টি আজমাইন কোথায়।
আম্মু - দেখো হয়তো রুমে গেছে।
আলামিন মেহেদী রুমে গিয়ে দেখে আজমাইন বিছানায় আধশোয়া হয়ে কপালের উপর হাত দিয়ে বসে আছে। ওরা আজমাইন সামনাসামনি বসতেই আজমাইন ওদের উপস্থিতি টের পেয়ে ওদের দিকে তাকালো, তখন আলামিন বলতে শুরু করে।

আলামিন - কিরে কালকে বিয়ে হলো আর এভাবে মনমরা হয়ে দেবদাসের মতো বসে আছিস কেনো? ঘটনা কি বলতো, রাতে কি ঘুমাতে দেয়নি নাকি ?

মেহেদী - আরে হ্যাঁ হ্যাঁ তাই হবে। ভাবীকে দেখেই মনে হল খুব রোমান্টিক মুডে আছে। কালকে রাত্রে হয়তো অনেকগুলো রাউন্ড হয়েছে তাই এখন শরীরটা একটু দুর্বল লাগছে।

আজমাইন - তোরা থামবি কিছু না জেনে না শুনে এভাবে উল্টা পাল্টা বকিস নাতো? এমনিতেই মন মেজাজটা ভালো নেই তার ওপরে এসেই শুরু করে দিয়েছিস।

আলামিন - সেকি মন এলো নেই মানে কি। তোর পছন্দের। মেয়ের সাথেই তো তোর বিয়ে হলো।তাহলে বিয়ের পরদিনই এভাবে মন মেজাজ খারাপ থাকার মানেটা কি।

মেহেদী - ওয়েট ওয়েট ভাবি আবার অন্য সব গল্পের মত তোর কাছে আবার ডিভোর্স চায়নি তো।

আজমাইন- ওটা চাইলেও বেঁচে যেতাম তার থেকে আরো কঠিন কিছু বলেছে।

আলামিন - ঘটনাটা কি খুলে বলতো। তোর মুখ দেখেই বোঝা যাচ্ছে ডাল মে কুচ কালা হে ।

- আজমাইন একটা দীর্ঘনিশ্বাস ফেলে তারপর কালকে রাতের সব ঘটনা ওদের খুলে বললো। সব শোনার পর আলামিন মেহেদী দুজন দুজনের মুখের দিকে তাকাতে লাগলো।আজমাইন আবার একটা দীর্ঘনিশ্বাস ফেলে বলতে শুরু করলো।

আজমাইন - তোরাতো ছোটবেলা থেকে এ পর্যন্ত আমার বিষয়ে সবই জানিস, কয়েকটা রিলেশন করতে গিয়েও যখন হলো না, তখন এগুলো থেকে বেরিয়ে আসার চেষ্টা করেছিলাম। ভেবেছিলাম যে সব ভালোবাসাগুলো বউয়ের জন্য রাখবো। কিছুদিন আগে আরিজাকে দেখার পর ওকে ভালো লেগেছিলো তাই প্রেমের প্রস্তাব না দিয়ে ওকে একদম নিজের লাইফে আনার চেষ্টা করেছিলাম। সেটা হয়তো হলো কিন্তু আমার কপালে হয়তো ভালোবাসা জিনিসটা নেই। আর কারো সাথে সংসার সেটা হয়তো অনেক দূর। কালকে রাত্রে যখন ও বললো অন্য কাউকে ভালোবাসে আর আমাকে স্বামী হিসেবে মেনে নিতে পারবে না তখন আমার নিজেকে খুব অসহায় লাগছিলো মনে হচ্ছিলো। আমি হয়তো এই জন্যই পৃথিবীতে এসেছি, সবার ভালোবাসা থেকে বঞ্চিত হওয়ার জন্য।

আজমাইন কথাগুলো বলছিলো আর বাইরে দাঁড়িয়ে আরিজা সবটাই শুনছিলো। ও রুমে আসছিলো, আজমাইন যখন কথাগুলো বলতে শুরু করলো ও বাইরে থেকে দাঁড়িয়ে সবটা শুনছিলো। এবার আলামিন আজমাইনর কাধের উপর হাত দিয়ে বলতে লাগলো।

আলামিন - মন খারাপ করিস না বন্ধু সব ঠিক হয়ে যাবে। প্ৰথমে এরকম একটু একটু হয় তারপর ও তোর সাথে থাকতে থাকতে তোকে ভালোবেসে ফেলবে। আর তোকে ছাড়া তখন থাকতে পারবে না। একটা সময় ঠিক তোদের মধ্যে ভালোবাসা হয়ে যাবে ।

আজমাইন একটা তাচ্ছিল্যের হাসি দিয়ে বললো।
আজমাইন - ওর ভালোবাসাটা আমার জন্য নয়রে, ও অন্য কাউকে অনেক আগে থেকেই ভালোবাসে। কালকে আমি আরিজা চোখে অন্য কারো জন্য ভালোবাসা দেখেছি। যার জন্য এতটা কান্না করেছে বুঝতে পেরেছি আরিজা সেই মানুষটাকে কতটা ভালোবাসে।

মেহেদী - বিয়ে করবে না অন্য কাউকে ভালোবাসে সেটা তোকে আগে বলে দিলেই পারতো। তুই আর এত দূর এগোতি না। এই জায়গায় ভাবির একটা বড় ভুল হয়েছে। এটা তুই ওনাকে জিজ্ঞেস করিসনি।

আজমাইন - অনেক কথাই জিজ্ঞেস করেছি। আমার কপালে হয়তো কারো ভালোবাসা নেই তাই হয়তো বউয়ের কাছে এভাবে ছেকা খেলামরে। ভাবিস না আমার জীবনটা কোনো রকম ভাবে চলে যাবে। আমি ওকে বলেছিলাম চাইলে চলে যেতে পারে। আমি ওই চলে নি ছেলেটার হাতে ওকে তুলে দিবো।

মেহেদী - এটা কি বাজারের আলু পটল নাকি যে চাইলেই অন্য কারো হাতে তুলে দিবি ।

আজমাইন - দেখ ভাই ভালোবাসাটা জোর করে হবার নয়। ও আমাকে ভালোবাসতে না পারলে শুধু শুধু ভালোবাসার জন্য জোর করার কোনো প্রশ্নই ওঠে না। আর জোর করে আমি শুধু ওর শরীরটাই পাবো মনটা নয়। তাই ওর থেকে দূরে থাকার চেষ্টা করেছি, আরিজা নাকি ওর আব্বু আম্মুর জন্য এজন্য আমাকে বিয়ে ব করতে বাধ্য হয়েছে। আমি বলেছিলাম আমি ওর আব্বু আম্মুর সাথে কথা বলতাম, কিন্তু ও বললো। ওর আব্বু আম্মু নাকি আমাকে নাহলে অন্য কারো সাথে ওর বিয়েটা দিতো।

আলামিন - তাই বলে কি তোর সাথে এরকমটা করতে হলো।

আজমাইন - বাদ দে না ভাই। কথাগুলো ভেবে খুব খারাপ লাগছিলো তাই তোদের সাথে শেয়ার করলাম। এখন অনেকটা হালকা লাগছে । আমি তো সব সহ্য করে নিতে পারবো চিন্তা করিস না।
আরিজা বেশ খারাপ লাগছে আজমাইন কথাগুলো শুনে, ও বুঝতে পারছে আজমাইন কতটা কষ্ট পেয়েছে। কালকে রাতে আজমাইন মুখ কষ্ট থেকে এরকম কথা শুনে। আরিজা নিরুপায় রাফিনকে কিছুতেই ভুলতে পারবে না জীবনের প্রথম ভালোবাসাকে কি করে ভুলবে। এভাবেই দিন কেটে যায়। দুপুরের দিকে আরিজা বাসা থেকে ওদের নিতে আসলে আজমাইন ওদের বাসায় যাই। তারপর আরিজা আব্বু আম্মুর সাথে কথা বলে আরিজা সাথে রুমে চলে যায়। আজমাইন রুমে গিয়েই ধপাস করে বিছানায় শুয়ে পড়ে তখন আরিজা বলে।

আরিজা - শুয়ে পড়লেন যে শরীর খারাপ করেছে।
আজমাইন তাচ্ছিল্যের হাসি দিয়ে বললো।

আজমাইন - একটু পরতো আর বিছানায় শুতে পারবো না তাই আগে থেকেই একটু রেস্ট নিয়ে নিচ্ছি।
আজমাইন কথাগুলো আরিজা যতোই শুনছিলো ততোই ও বুঝতে পারছিলো ও ভেতর ভেতরে কতটা কষ্ট পাচ্ছে। আরিজা বেশ কিছুক্ষন আজমাইন দিকে অসহায় দৃষ্টিতে তাকিয়ে থেকে তারপর বাইরে চলে যায়৷ আজমাইন শরীরটা ক্লান্ত থাকায় আর মনটাও বিধ্বস্ত থাকায় ও ঘুমিয়ে পরে। রাত হয়ে গেছে এখনো আজমাইন ঘুমিয়ে আছে। আরিজা হয়ে গেছে এখনো ইমান আম্মু ওদেরকে খাবার জন্য যেতে বললে তখন ও রুমে এসে দেখে, আজমাইন ঘুমিয়ে আছে। আরিজা কি করবে বুঝতে পারছিলো না, ও আজমাইন পাশে বসে দেখে ওর পুরো মুখটা একটা মায়া মায়া ভাব আছে। কোনো মেয়ে খুব কাছ থেকে খেয়াল করে দেখলে সত্যিই ওর প্রেমে পড়ে যাবে ।

চলবে......

অবহেলিত স্বামী

পর্ব_
লেখকঃ আজমাইন হোসেন_ মিস্টার_লেখক_পিচ্চি


(কেউ নেক্স নাইস কমেন্ট করবেন না ,অন্যরকম কমেন্ট করবেন, আপনারে কমেন্ট যে ভিত্তিতে রিয়েকশন কমেন্টে আমি জবাব দিব। আসসালামু আলাইকুম।)

Post a Comment

0 Comments