Header Ads Widget

Responsive Advertisement

অবহেলিত স্বামী - শেষ পর্ব

আরিজা এখনো চুপচাপ আছে, আজমাইন কথাগুলো বলে আর সেখানে থাকতে পারলোনা ওয়াশরুমে গিয়ে চোখের পানি ফেলতে লাগলো। তারপর একটা সময় চোখে মুখে পানি দিয়ে এসে শুয়ে পড়ে। এভাবে আরো দুই তিনটা দিন কেটে যায়। এর মাঝে আজমাইন মনটা আরো বেশী খারাপ হয়ে গেছে। ও আরিজা দিকে তাকাতে পারে না, কেমন সবসময় মন খারাপ করে থাকে। আজমাইন এখন প্ৰায় ভাবে, সব কিছু ফেলে রেখে দূরে চলে যাবে। যে মেয়েটাকে এতোটা ভালোবাসে, ওকে না দেখে থাকতে পারবে না, আর সেই মেয়েটা ওকে মেনে নিতে পারবে না। এটা জানার পর ওর নিজেকে বড় । অসহায় মনে হয়। আজমাইন আড্ডায় বসেছে মন খারাপ করে কথাগুলো ভাবছিলো তখন আলামিন ওকে জিজ্ঞেস করে।



আলামিন - তোর কি হয়েছে বলতো। কয়েকটা দিন ধরেই দেখছি তোর মনটা বেশ খারাপ আর কেমন যেনো অন্যমনষ্ক থাকিস অফিসে নাকি যাস না আন্টি বললো খাওয়া দাওয়াও ঠিক মতো করিস না কি হয়েছে বলতো। ভাবির সাথে কিছু হয়েছে আর হবে
নাই বা কেনো।আমরা তো জানি কি হয়েছে।
বারবার ওরা কথাগুলো জিজ্ঞেস করতে লাগলো তখন আজমাইন ভাবলো, ওদের কথাগুলো বললে হয়তো মনটা হালকা হতে পারে তখন আজমাইন একটা দীর্ঘনিশ্বাস ফেলে ওদের সব খুলে বললো তারপর কিছুক্ষন চুপ করে থেকে আবার বলতে লাগলো।
আজমাইন - মাঝেমধ্যে ভাবি ওর থেকে অনেক দূরে চলে যাবো, কিন্তু পারি না। কি করবো বল ওকে যে ভুলতেও পারবো না। আবার ওকে কাছে টানতেও পারবো না, আমি নিরুপায়।
- আজমাইন আবারো কিছুক্ষণ চুপ করে রইলো, আলামিন ওর মুখের দিকে তাকিয়ে আছে, তারপর একটা সময় অনেক ভেবেচিন্তে হুদী তারপর একটা স মেহেদী বলতে লাগলো।
মেহেদী - আজমাইন শোন ভাবিকে রিয়েলাইজ করাতে হবে এখন ওর পাশে কেউ নেই। ভালোবাসার মানুষটা দূরে সরে গেলে তার কতটা কষ্ট লাগে, এটা তোকে বোঝাতে হবে। তাহলেই দেখবি ও সুড়সুড় করে তোকে মেনে নিবে।
আজমাইন- আরে কি বলছিস এটা কখনোই হবে না।
আলামিন - হবে মানে আলবাত হবে, ওর প্রেমিক যখন অন্য - কাউকে ভালোবাসতে পেরেছে তাহলে ও কেনো বাসতে পারবে না, তাকে করতে কিন্তু তার জন্য তোকে কিছু একটা করতে হবে। কি করা যায় বলোতো।
মেহেদী - শোন তাহলে কি করতে হবে।
মেহেদী আজমাইনকে সবটা বুঝিয়ে দিলো আর আজমাইনও ভাবলো আরিজা থেকে দূরে চলে যাবে, যেহেতু ওকে ভালোবাসতে পারবে না, সেহেতু ওর থেকে দূরে চলে যাওয়াটাই ভালো। আলামিন মেহেদী ওর মন রাখার জন্য কথাগুলো বলছিলো, কিন্তু আজমাইন জানে আরিজা ওকে কখনোই ভালোবাসতে পারবে না। আড্ডা শেষ করে ও বাসায় চলে আসে, তারপর রুমে এসে দেখে আরিজা শুয়ে আছে তখন আজমাইন ওকে বলে।
আজমাইন - আরিজা আমি জানি তুমি আমাকে ভালোবাসতে পারবে না, আর কখনো মেনেও নিবে না আর আমি তোমার কাছে থাকলে কখনো এই কষ্টটা সয্য করতে পারবো না। তুমি হয়তো জানোনা আমি তোমাকে প্রথম দেখাতেই ভালোবাসে ফেলাছিলাম, তাই তোমাকে প্রপোজ না করে বিয়ে করেছিলাম। আমার সব ভালোবাসটা তোমাকে দিতে চেয়েছিলাম, কিন্তু তুমি সেটা একটাবার বোঝার চেষ্টাই করলে না। আর হয়তো কখনো বুঝতেও পারবেনা। তোমাকে আমি অনেকবার বলেছি চলে যেতে, কিন্তু যায়ওনি যেখানে আমাকে কখনো ভালোবাসতে পারবে না, সেখানে এই মিথ্যা সম্পর্ক রাখার মানেই হয়না, কিন্তু তাও তুমি কিছু বলোনি। এখন আমি তোমার কাছে একটা খেলনা হয়ে গেছি, যার কোনো মূল্যেই তোমার কাছে নেই। আসলে কি জানোতো ভালোবাসলে যে এতো কষ্ট পেতে হয় সেটা আমি জানতাম না, তাহলে কখনো ভালোইবাসতাম না। আমাদের মাঝে আদোও কোনো সম্পর্ক ছিলোনা আর না কখনো হবে, তাই তুমি চলে যেও সময় হলে আমি ডির্ভোস লেটার পাঠিয়ে দিবো। একা থেকো ভালো থাকতে পারবে।
কথাগুলো বলে আজমাইন বেলকুনিতে চলে যায়, আর আরিজা চুপচাপ ওর কথাগুলো ভাবতে লাগলো, কিন্তু ওর দিক থেকে কোনো সাড়া নেই। তো আজমাইন পরদিন কাউকে কিছু না বলে ব্যাগ গুছিয়ে নিয়ে খুব সকালে বাসা ছেড়ে বেরিয়ে যায়। সেদিন সকালে আরিজা ঘুম থেকে উঠে দেখে আজমাইন ওর পাশে নেই ভাবে, হয়তো বাইরে গেছে। কিন্তু দেখতে দেখতে দুপুর হয়ে যায় আজমাইন কোনো পাত্তা নেয়, তখন আব্বু আম্মু আরিজাকে জিজ্ঞেস করলে ও কিছু বলতে পারেনা। আরিজা রুমে এসে আজমাইন নম্বরে ফোন দিতে থাকে, কিন্তু ওর নম্বরটা বন্ধ পায় তখন আরিজা ভাবতে লাগলো।
আরিজা - মানুষটা উল্টোপাল্টা কিছু করে ফেলো নাতো, কালকে রাতে উনি হয়তো আমার চুপ করে থাকাতে অনেক কষ্ট পেয়েছে, তাই এভাবে রাগ করে বাসায় আসছে না। সব আমার জন্যই হয়েছে আজকে আমার জন্য উনি কষ্ট পেয়ে হয়তো এভাবে কোথাও চলে গেছে। আজকে বাসায় আসুক খুব করে বকা দিয়ে দিবো।
আরিজা কথাগুলো বলছিলো আর বারবার চোখ মুচ্ছিলো, হ্যাঁ আরিজা কান্না করছে, কিন্তু কার জন্য কান্না করছে সেটা ও জানেনা। দিনটা কেটে রাত আসে, কিন্তু আজমাইন এখনো বাসায় ফিরেনি,আরিজা এখন আজমাইনর জন্য বেশ টেনশন হচ্ছে। ও বারবার আজমাইন কথা ভবছে আবার পরক্ষণেই ওর রাফিনের কথাগুলো মনে পড়ছে। আরিজা এখন কি করবে। ওরা দুজন দুদিক থেকে কষ্ট পাচ্ছে, কিন্তু আরিজা যাকে নিয়ে ওর এতো স্বপ্ন ছিলো, সে অন্যকাউকে নিয়ে ভালো আছে। আরিজা পারছে না আজমাইনকে ভালোবাসতে আর রাফিনকেও মন থেকে সরাতে। রাত হয়ে গেলো, কিন্তু আজমাইন তাও যখন বাসায় আসলো না, তখন আরিজা আলামিন মেহেদীকে ফোন দিলো, ওরাও কিছু বলতে পারলো না। এবার আরিজা প্রচন্ড ভয় হতে লাগলো আর ও বারবার ভাবছিলো।
আরিজা- (কান্না করে করে) আজমাইন কিছু করে ফেললো নাতো, আজকে আমার ওপর রাগ করে উনি বাসায় আসছে না। জানিনা এখন মানুষটা কোথায় আছে। মানুষটা আমাকে ভালোবাসে বলে কষ্ট পাচ্ছে, আর আমি ওনাকে দিনের পর দিন কষ্টটা দিয়েই যাচ্ছি। আমি এখন কি করবো। আমি ওনাকে ভালোবাসতেও পারছিনা আর নিজের করে নিতে। আজকে মানুষটার কিছু হয়ে গেছে তার জন্য দায়ি থাকবো আমি।
আরিজা কথাগুলো ভেবে চোখের পারনি ফেলছে, এর মাঝেই কেউ একজন খুব জোরে জোরে হাসতে লাগলো। আচমকা হাসির শব্দে আরিজা একটু ঘাবড়ে যায়, আর ভয়ে পেয়ে বলে।
আরিজা - কে... কে...।
- আরিজা সামনে তাকিয়ে দেখে, সেদিনের সেই মেয়েটা অর্থ্যাৎ আরিজা বিবেকটা দাড়িয়ে হাসছে তখন ও বলতে লাগলো।
আরিজা - (কান্না করে করে) তুমি এভাবে হাসছো কেনো? প্লিজ হেসো না, আমার অসস্থি লাগছে।
বিবেক - তোকে দেখে আমার খুব হাসি পাচ্ছে তাইতো না হেসে পাড়লাম না।
আরিজা - (কান্না করে করে) প্লিজ তুমি হেসো না, আমি এমনিতেই অনেক টেনশনে আছি।
বিবেক- মিথ্যে, তুই মিথ্যে বলছি। তুই কারো চিন্তা করিস না, তুই শুধু নিজের কথা ভাবিস, আর যে তোকে ভুলে গিয়ে অন্য কাউকে নিয়ে সুখে আছে তার কথা ভেবে কষ্ট পাস, আর সেই কষ্টের ভাগিদারটা অন্য কাউকে করিস।
আরিজা - (কান্না করে) এসব তুমি কি বলছো ?
বিবেক - আমি ঠিকিই বলছি। অস্বিকার করতে পারবি তুই রাফিনের জন্য কষ্ট পাচ্ছি না, আর সেই কষ্টটা তোর স্বামীকে দিচ্ছিস। ও আমিতো ভুলেই গেছিলাম আজমাইন তোর কিসের স্বামী, তুইতো ওকে কখনো স্বামী হিসাবে মানিস নি। আসলে তুই অনেক বড় একটা সার্থপর
আরিজা - (কান্না করে করে) আমি কেনো সার্থপর হতে যাবো, আমিতো ওনাকে বলেছি আমি ওনাকে ভালোবাসতে পারবো না।
বিবেক - তা পারবি কেনো, তুই যে সার্থপর সেটা প্রমান করতে হবে না। একটা কথা কি জানিস সার্থপর তো তার জন্য হতে হয়, যে তোকে সত্যিকারের ভালোবাসে। কিন্তু তুই সেই মানুষটার জন্য সার্থপর হয়েছিস যে তোকে কখনো ভালোই বাসেনি আর যদি বাসতো, তাহলে তোকে ভুলে গিয়ে অন্য কাউকে নিয়ে সুখে থাকতে পারতো না। আচ্ছা রাফিন যদি কাউকে ভালোবেসে সুখে থাকতে ভাল পারে, তাহলে যে মানুষটা তোকে এতো ভালোবেসে কষ্ট পাচ্ছে তাকে তুই ভালোবাসতে পারছিস না কেনো? আসলে তুই রাফিনের থেকেও সার্থপর। রাফিন তো যে ওকে ভালোবাসতো তুই ওর থেকে মুখ ফিরিয়ে নিতেই তাকে ভালোবাসতে পেরেছে, তাহলে তুই কেনো আজমাইনকে ভালোবাসতে পারছিস না। একবার কি ভেবে দেখেছিস, মানুষ কতোটা ভালোবাসলে তার ভালোবাসাটাকে অন্যে হাতে তুলে দিতে চায়, কিন্তু তুই সেটা মানুষটার এতো কাছে থেকেও বুঝলি না। আরিজা নিজে ভালো না থেকেও যে তোকে ভালোবাসে তাকে ভালো রাখার নামও কিন্তু ভালোবাসা। তাহলে কি কখনো ভেবেছিস, আজমাইন তোকে কতোটা ভালোবাসে যে তুই ভালো থাকবি বলে, তোকে তোর ভালোবাসার কাছে তুলে দিতে গিয়েছিলো। সেক্রিফাইস করার নামও কিন্তু সম্পর্ক যেটা তুই মানিস না। যায় হোকে তোকে এসব বলে কোনো লাভ হবে না, কারন তুই বোঝার মেয়ে না। যদি তাই হতো তাহলে আজমাইন এভাবে বাসা ছেড়ে যেতো না। আজকে মানুষটার যদি কিছু হয়ে যায় তার জন্য একমাত্র তুই দায়ী থাকবি।
আরিজা - (কান্না করে) তুমি কি সব বলছো।
বিবেক - হ্যাঁ... হ্যাঁ... হ্যাঁ তুই দায়ী থাকবি, সব দোষ তোর ।
- আরিজা আর মেয়েটার কথাগুলো শুনতে পারছিলো না, তাই দুই হাতে কান চেপে ধরে চোখ বন্ধ করে নিলো, আর মেয়েটা হাসতে লো এভাখ করে হাসতে মিলিয়ে গেলো। এভাবে কেটে গেলো কয়েকটা দিন কিন্তু এর মাঝে আজমাইন আর বাসায় ফেরেনি। ওদের যতো আত্মীয় স্বজন বন্ধু বান্ধব ছিলো আব্বু আম্মু সবার কাছে খোঁজ খবর নিয়ে দেখেছে, কিন্তু আজমাইন কোথাও যায়নি। আরিজা প্রতিটা দিন টেনশন বেড়েই যাচ্ছে, কিন্তু আজমাইন ফিরছে না। আরিজা বারবার মনে হচ্ছে আজমাইন যদি কিছু হয়ে যায় তাহলে তার জন্য দায়ী থাকবে ও।
এভাবে ১০টা দিন কেটে গেছে, কিন্তু আজমাইন কোনো খোঁজখবর নেই, তাই আরিজা মনটাও তেমন ভালো নেই। ও বারবার ভাবছে আজমাইন ওর জন্য বাসা ছেড়ে চলে গেছে। এদিকে আব্বু আম্মু কেমন পাগলের মত হয়ে গেছে, তেমনি আরিজাও কোনো কিছুতেই মন দিতে পারছে না, এটা ভেবে যে ওর জন্যই আজমাইন কোথাও চলে গেছে। ১০ দিনের মাথায় আরিজা আজমাইন আব্বু আম্মুর কাছে গিয়ে অনেক কান্নাকাটি করে, তখন ওরা আরিজাকে সান্ত্বনা দেয়। কিন্তু আরিজা তারপরও বললো না, ওদের মধ্যে কেমন সম্পর্ক, বললো।
আম্মু - দেখো মামনি আজমাইন হয়তো কোনো কারনে তোমার ওপর রাগ করে বাসা ছেড়ে চলে গেছে, ও এখানে গেছে। ও ঠিক ফিরে আসবে কান্না করো না। তোমার যদি এখানে থাকতে কষ্ট হয় তুমি কিছুদিনের জন্য তোমার আব্বু আম্মুর কাছ থেকে আসতে পারো।
আব্বু আম্মু অনেক জোরাজুরি করার পরে আরিজা বাসায় - চলে যায়। এভাবে দেখতে দেখতে আরো ১৫ টা দিন কেটে গেলো তাও আজমাইন আর কোনো খোঁজ খবর পাওয়া যায়নি। তাই আরিজার ! মনটা বেশ খারাপ, ও এখন শুধু আজমাইনকে নিয়েই ভাবে না। অবিশ্বাস্য হলে এটাই সত্যি। আরিজা রাফিনের কথা এক প্রকার ভুলেই গেছে, যেদিন থেকে আজমাইন চলে গেছে, সেদিন থেকে আরিজা শুধু ওকে নিয়েই ভাবতে শুরু করেছে। রাফিন অন্য কাউকে নিয়ে সুখে আছে, তাহলে ও কেনো পারবে না। আজমাইন চলে যাওয়াতে আরিজা সেটা রিয়ালাইজ । করতে পেরেছে, কিন্তু কিছুতেই আজমাইনকে ভালোবাসতে পারছেনা। মাঝে পার হয়ে গেলো আরো ১৫ টা দিন, আর আজমাইন নিখোজের এক মাসের বেশি সময় হয়ে গেছে।
অরিজা এখন প্রত্যেকদিন আজমাইন বাসায় ফোন দিয়ে জিজ্ঞেস করে ও বাসায় ফিরেছে কিনা, কিন্তু ওর কোনো খোঁজ খবর কেউ দিতে পারে না, তাই আরিজা ধরে নিয়েছে আজমাইন শুধু একমাত্র ওর জন্যই বাসা ছেড়ে চলে গেছে। কথাগুলো ভেবে আরিজা নিজেকে অপরাধী মনে হয়। অদ্ভুতভাবে আরিজা এখন রাফিনের কথা ভুলেই গেছে, আরিজা এখন এতটাই আজমাইনকে নিয়ে ভাবে যে, ওর জন্য কান্না করে, তাই রাফিনের কথাগুলো ভুলে যেতে শুরু করেছে। মাঝেমধ্যে মনে পড়ে, কিন্তু আবার পরক্ষণেই ভাবে যে ও অন্য কাউকে নিয়ে ভালো আছে।
তারপর আবার যখন মনে পড়ে, আজমাইন ওর দেওয়া কষ্টটা সহ্য করতে না পেরে হয়তো অন্য কোথাও চলে গেছে তখন আরিজা ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কান্না করে। এটাই সত্যি হ্যাঁ এখন আরিজা আজমাইন জন্য কান্না করে বালিশ ভেজায়, ওর চলে যাওয়ার পেছনে একমাত্র নিজেকেই দায়ী করে। আরিজার আব্বু আম্মু অনেক আগেই বিষয়টা জানতে পেরেছে তাই ওর সাথে কথা বলার চেষ্টা করে আর আরিজাকে বোঝানোর চেষ্টা করে, কিন্তু আরিজা নিজেকে দোষারোপ করছে। আরিজা আম্মু ওকে শান্তনা দেয়ার জন্য রুমে আসে দেখে ও বিছানায় শুয়ে শুয়ে কান্না করছে তখন আম্মু ওর কাধের উপর হাত দিতেই আরিজা একটা মায়া ভরা দৃষ্টিতে আম্মুর দিকে তাকায়, আর উঠে বসে বলতে শুরু করে।
আরিজা - আম্মু জানোতো আজমাইন শুধু আমার জন্য বাসা ছেড়ে চলে গেছে। আমি ওনাকে বুঝতে পারিনি সব আমার দোষ, সবকিছু আমার জন্য হয়েছে। আমি ওনাকে অনেক কষ্ট দিয়েছি।
আরিজা আম্মু - মামনি শান্ত হও আর কন্না থামাও। দেখো আজমাইন যখন বলেছিলো,তুমি ওর সাথে ভালো নেই তখন আমরা রাফিনের সাথে তোমার সম্পর্কটা মেনে নিতে চেয়েছিলাম। আর আমরা জনি আজমাইন অনেক চেষ্টা করেছিলো রাফিনের কাছে তোমাকে ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য, কিন্তু রাফিন নাকি অন্য কাউকে বিয়ে করে নিয়েছে।আজমাইন এটাও আমাদের বলেছে। তুমি ওকে মেনে নিতে পারবে না, আর সেটাই হয়েছে।
আরিজা - আম্মু জানোতো আজমাইন শুধু আমার জন্য বাসা ছেড়ে চলে গেছে। আমি ওনাকে বুঝতে পারিনি সব আমার দোষ, সবকিছু আমার জন্য হয়েছে। আমি ওনাকে অনেক কষ্ট দিয়েছি।
আরিজা আম্মু - মামনি শান্ত হও আর কন্না থামাও। দেখো আজমাইন যখন বলেছিলো,তুমি ওর সাথে ভালো নেই তখন আমরা রাফিনের সাথে তোমার সম্পর্কটা মেনে নিতে চেয়েছিলাম। আর আমরা জনি আজমাইন অনেক চেষ্টা করেছিলো রাফিনের কাছে তোমাকে ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য, কিন্তু রাফিন নাকি অন্য কাউকে বিয়ে করে নিয়েছে।আজমাইন এটাও আমাদের বলেছে। তুমি ওকে মেনে নিতে পারবে না, আর সেটাই হয়েছে।
আরিজা আম্মু - আজমাইন যখন বুঝতে পেরেছে তুমি ওকে ভালোবাসতে পারবেনা তখন তোমার জীবন থেকে হারিয়ে গেছে। আর রাফিন সে হয়তো অন্য কাউকে ভালোবাসে অন্য কারো সাথে ভালো আছে, তাহলে তুমি কেনো পারবে না, একবারো কি সেটা ভেবেছো। তুমি হয়তো ওর সাথে সুখে থাকতে পারবে না, আর ও তোমার কাছে থাকলে কষ্ট পাবে, তাই তোমাকে ছেড়ে অনেক দূরে চলে গেছে। এখন বুঝতে পারছো তো যে ভালোবাসার মানুষের অবহেলাটা কতটা কষ্টকর। সেইজন্য আজমাইন তোমাকে ছেড়ে চলে গেছে, এখন আর এভাবে কান্না করে লাভ কি বলো। আজমাইন তোমার কাছে থাকলে তুমিতো ওর ভালোবাসাটার মূল্যটা দিতে পারোনি, এখন আর কান্না করে কি হবে বলো।
আরিজা - আম্মু আমি বুঝতে পারিনি আজমাইন আমাকে এতোটা ভালোবাসে। রাফিনের ভালোবাসাটা হয়তো মিথ্যে ছিলো, তাই রাফিন আমাকে ভুলে গিয়ে অন্য কাউকে ভালোবাসা পেরেছে। কিন্তু আমি এখন বুঝতে পারছি উনি আমাকে কতটা ভালোবাসে যার জন্য আমার বিহেভিয়ারে কষ্ট পেয়েছে। আমি কি করবো বলো, আমিতো ওনাকে ভালবাসতে পারছিনা।
আরিজা আম্মু - মামনি তুমি ওকে অলরেডি ভালোবেসে ফেলেছো, তোমার মুখ বলছে এই কথা আর মন অন্য কথা জানান দিচ্ছে। তুমি হয়তো এতদিন ধরে রাফিনকে ভালোবেসে এসেছো সে,জন্য তোমার মনে হচ্ছে তুমি আজমাইনকে ভালোবাসতে পারবেনা। সেটা শুধু মুখে বলছো। তুমি যদি ওকে ভালো না বাসতে তাহলে ওর জন্য কান্না করতে না, এখনো রাফিনের জন্য কান্না করতে। কিন্তু শুধু তুমি এটা ভেবে কান্না করছো যে আজমাইন তোমার জন্যেই কষ্ট পেয়ে তোমাকে ছেড়ে চলে গেছে। সেই অপরাধবোধ থেকে তুমি কান্না করছো, তুমি ওকে ভালোবাসো, ভেবে দেখো ঠিক বুঝতে পারবে।
আরিজার আম্মু অনেকক্ষণ ওকে বোঝালো, তারপর একটা সময় ওরা চলে গেলো। এভাবে আরো ৭দিন কেটে যায়, এর মাঝে আরিজা পুরো পাগল হয়ে গেছে আর এখন ও হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছে যে ও আজমাইনকে ভালোবেসে ফেলেছে। রাফিনের কথাটায় ঠিক দ্বিতীয়বারও কাউকে ভালোবাসা যায়। কথাগুলো ভেবে আরিজা নিজেকে শান্ত করতে পারছে না, ও আর আজমাইনকে ছাড়া থাকতে পারছে না, তাই ভাবে আজমাইন বাসায় গিয়ে ওর জন্য অপেক্ষা করবে। তাই আজমাইন বাসায় চলে যায়, আর ওর আব্বু আম্মুকে সব খুলে বললে তখন আব্বু আম্মু বলে ওরা অনেক আগে থেকেই বিষয়টা জানে। আরিজা তখন ওদের কাছে অনেক মাফ চায় তখন আম্মু বলে।
আম্মু - মামুনি দেখো তুমি যেটা করেছো সেটা করাটাই স্বাভাবিক কিন্তু আমার ছেলে তোমাকে ভালোবেসে কষ্ট পেয়ে এভাবে চলে গেছে। তাই হয়তো এখন তুমি সেই কষ্টটা আবার ফেরত পাচ্ছো। তুমি অপেক্ষা করো যদি তুমি আজমাইনকে সত্যিকারের ভালোবাসো আর তোমার ভালোবাসা সত্যি হয়ে থাকে তাহলে ও ঠিক ফিরে আসবে।
এভাবে দিন কেটে যাচ্ছে আর এখন আরিজা আজমাইনর জন্য বালিশে মুখ গুঁজে কান্না করে। ওর একটা ছবি বুকে জড়িয়ে একা একা ওর সাথে কথা বলার চেষ্ট করে।
আরিজা - (কান্না করে করে) আজমাইন,এই আপনি কোথায় চলে গেলেন আমাকে একা রেখে। আপনিতো আমাকে ভালোবাসেন, তাহলে ছেড়ে কেনো গেলেন। আপনি জানতেন না, আমি আপনাকে একটা সময় ভালোবাসবো, তাহলে কেনো আমাকে ছেড়ে গেলেন। আমি যে আর পারছিনা আপনাকে ছাড়া থাকতে, আপনি আমাকে আপকানো এভাবে অ বুঝিয়ে দিয়েছেন ভালোবাসা কাকে বলে। প্লিজ আমার কাছে ফিরে আসেন একটাবার আমাকে বুকে জড়িয়ে নেন, আমিও যে এখন আপনাকে ভালোবাসি।
অন্যদিকে এর মাঝেই আজমাইন সাথে মেহেদী আর আলামিনের সাথে কথা হয়েছে, কিন্তু বিষয়টা ওরা আজমাইন বাসায় জানায়নি। আজমাইন হয়তো রাগ করে চলে গেছিলো, কিন্তু এখন আর আরিজাকে না দেখে থাকাটা ওর পক্ষেও সম্ভব হচ্ছে না, তাই ও বাসায় ফিরে আসছে। ও ভাবছে আরিজা ওকে ভালোবাসুক আর না বাসুক বাসায় ফিরে আসবে। আব্বু আম্মু কথা ভেবেই আজমাইন পরদিন বাসায় চলে আসে, তারপর কলিংবেল দিতেই আম্মু গিয়ে দরজা খুলে দেয়। তারপর আজমাইনকে দেখার সাথে সাথে অনেক বকাবকি করতে শুরু করে দেয়, আর কান্না করে দেয়, আজমাইন আম্মুকে অনেক বোঝাতে লাগলো। অন্যদিকে আরিজা বিছানায় শুয়ে কান্না করছিলো, এর মাঝে কারো চেচামেচির শব্দ শুনে ও উঠে বসে আর বোঝার চেষ্টা করে কে কথা বলে। ওদিকে আজমাইন আম্মুকে বলছিলো।
আজমাইন - আম্মু প্লিজ রাগ করোনা, আমিতো ফিরে আসছি দেখো আর কক্ষনো এরকম হবে না ।
আরিজা আজমাইন কথার শব্দ শুনে বোঝার চেষ্টা করে, এটা কি আজমাইন নাকি অন্য কেউ, ও বেশ কয়েকবার আজমাইন কথা শুনে বুঝতে পারলো এটা আর কেউ নয় পারলোনা, দৌড়ে রুম থেকে বেরিয়ে ডাইনিং রুমে আসতেই দেখে রম যে নয়, তখন ও আর বসে থাকতে আজমাইন আম্মুর সাথে কথা বলছে। আজকে এতগুলো দিন পর আরিজা আজমাইন দেখার পর ওর বুকের ভেতর ধক করে ওঠে, ও আর নিজেকে কন্ট্রোল করতে পারে না, দৌড়ে গিয়ে আজমাইনকে আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে ধরে ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কান্না করে দেয়।
ঘটনার আকস্মিকতায় ও স্তব্ধ হয়ে যায় আর সেখানে পাথরের মূর্তির মতো দাঁড়িয়ে বোঝার চেষ্টা করে ওর সাথে কি হচ্ছে। কিন্তু যখন বুঝতে পারলো না তখন বললো।
আজমাইন - আম্মু এই মেয়েটা কে।
- আম্মু একটা মুচকি হাসি দিয়ে বললো।
আম্মু- পাগল ছেলে এটা তোমার বউ, আর তুমি জানো এখন আরিজা মামনিও তোমাকে ভালোবাসে। এখন নাও তোমার বউকে তুমি সামলাও, এই কয়েকটা দিন আমাদের খুব কষ্ট হয়েছে ওকে
সামলাতে।
আম্মু চলে গেলে, আর আজমাইন এখনো একটা ঘোরের মধ্যে আছে, তাই আম্মুর কথাগুলো ওর কাছে কেমন স্বপ্নের মতো লাগছিলে। এবার আজমাইন আরিজাকে জোর করে ছাড়িয়ে নিয়ে দেখে ও বাচ্চাদের মতো ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কান্না করছে আর চেহারাটার অবস্থা বারোটা বাজিয়ে ফেলেছে তাই ও বললো।
আজমাইন - একি কান্না করছো কেনো, আর কান্না করার কথাতো আমার, সেখানে আমি তোমার ভালোবাসাটা পাইনি। আর সেখানে তুমি আমাকে না ভালোবাসো কান্না করছো? ওওওও বুঝতে পেরেছি রাফিন তোমাকে ফিরিয়ে দিয়েছে, তাই সেই কষ্টটা আমাকে বোঝাচ্ছল তাইতো। আসলে আমার বাড়িতে আসাটাই ভুল হয়েছে, এখন আর এসব নাটক দেখতে ইচ্ছা করে না।
আজমাইন কথাটা শেষ করার আগেই আরিজা আবারো ওকে জড়িয়ে ধরে।
আজমাইন - এই কান্না করছো কেনো, আর কান্না করছো তো করো, সেটা তোমার বয়ফ্রেন্ডকে জড়িয়ে ধরে করো। যার ভালোবাসার জন্য কষ্ট পাচ্ছো তার জন্য কান্না করছো, তাও আমাকে জড়িয়ে ধরে, ন্যাকামি করা হচ্ছে।
আরিজা - (কান্না করে করে) আই এম সরি আজমাইন, আমি বুঝতে পারিনি আমিও আপনাকে ভালোবেসে ফেলবো। রাফিন সেদিন ঠিকই বলেছিলো, দ্বিতীয়বারও কাউকে ভালোবাসা যায়, হয়তো সময় লাগে। দেখেন এখন আমিও আপনাকে অনেক বেশি ভালোবাসি। আমি রাফিনের জন্য না, শুধু আপনার জন্য কান্না করছি। প্লিজ ন আমাকে আপনার জ আপনি মাফ করে দেন।
- আরিজার এরকম কথা শুনে আজমাইন স্তব্ধ হয়ে গেলো আর বিশ্বাসই হচ্ছে না আরিজা এমন কিছু বলছে, তাই আজমাইনওকে ছাড়িয়ে নিয়ে বললো।
আজমাইন - মানে কি, আপনি কি আমার সাথে মজা করছেন। নাকি আপনার আমাকে দেখে জোকার বলে মনে হচ্ছে।
- আরিজা বুঝতে পারছে আজমাইন ওর ওপর কতটা রেগে আছে, তাই বারবার ওকে এভাবে ছাড়িয়ে নিচ্ছে আর আজমাইন ওকে এতো সহজে মাফ করবে না। এবার আরিজা হঠাৎ করেই আজমাইন পাগুলো জড়িয়ে ধরে কান্না করে দিয়ে বলতে লাগলো।
আরিজা - (কান্না করে করে) আমি জানি আপনি আমার উপর কতটা রাগ করে আছেন। আমি কি করবো বলেন, আমি আপনাকে ভালোবাসতে পারছিলাম না, তাই বারবার দূরে সরিয়ে দিচ্ছিলাম। কিন্তু এখনতো আমিও আপনাকে ভালোবাসি, প্লিজ আপনি এমন কথা বলবেন না। আম্মু ঠিকই বলেছে আমিও আপনাকে সত্যি অনেক বেশি ভালোবাসি, এই একটা মাসই আপনার চলে যাওয়াতে আমি সেটা বুঝতে পেরেছি। প্লিজ আমাকে মাফ করে দিন, আর একবার আপনার বুকে জড়িয়ে নিন। আমি এখন আপনার থেকে স্ত্রীর অধিকারটা চাই, প্লিজ আমাকে সেই অধিকারটা দিন।
আজমাইন - দেখেন ম্যাডাম এসব পাগলামি করবেন না। আর আপনিতো নিজেই বলেছেন আপনি আমাকে স্বামী হিসেবে মানেন না, যেখানে বিয়েটাকেই মানেন না। আর আমাকে কখনো ভালোবাসতেও পারবেন না, সেখানে এইসব কথা বলে আর মজা করবেন না।
- আজমাইন কথায় আরিজার কান্না গতিটা বেড়ে যায় ও ফুপিয়ে ফুপিয়ে বললো।
আরিজা - (কান্না করে করে) আমি জানি আপনি আমার উপর কতটা রাগ করে আছেন প্লিজ এইভাবে আমাকে দুরে সরিয়ে দিবেন না । আমি এখন সবকিছু মানি আমি আপনাকে স্বামী হিসেবে মানি বিয়েটা মানি আর আপনাকে অনেক বেশি ভালোবাসি। আর এখন আপনাকে নিজের অস্তিত্ব ভাবি ।আপনি না থাকলে আমার অস্তিত্ব থাকবে না প্লিজ বিশ্বাস করেন। প্লিজ একবার আমাকে মাফ করে দিন আমি আপনাকে ছাড়া থাকতে পারবো না। এই একটা মাস আপনি আমার কাছে ছিলেন না এই একটা মাসে আমি বুঝতে পেরেছি দ্বিতীয়বার কাউকে ভালোবাসা যায়। সেটা আপনি আমাকে শিখিয়েছেন। আপনি হয়তো আমার জীবন থেকে চলে গিয়েছিলে বলে আমি কষ্ট পেয়েছি কিন্তু আপনি না গেলে হয়তো আমি বুঝতে পারতাম না আপনি আমাকে কতটা ভালোবাসেন। আমি এখন আপনাকে স্বামী হিসেবে মানি আর আপনার কাছ থেকেই স্ত্রীর অধিকারটা চাই প্লিজ আমাকে মাফ করে দিন। আপনিও যদি আমাকে ফিরিয়ে দেন তাহলে আমি কিন্তু সত্যি মরে যাবো এবার আর বাঁচতে পারবো না।
এবার আজমাইন আরিজাকে উঠিয়ে ওর মুখের দুই পাশে হাত দিয়ে বলতে লাগলো।
আজমাইন - চুপ একদম চুপ এসব আজেবাজে কথা আর বলবে না। আমি ভাবতাম তুমি আমাকে কখনোই ভালোবাসতে পারবে না, তাই তোমার উপর রাগ থেকে চলে গিয়েছিলাম। কিন্তু আলামিন মেহেদী বলেছিলো আমি তোমার থেকে চলে গেলে হয়তো তুমি আমাকে ভালোবাসতে পারবে, আর আজকে সেটা বুঝতে পারছি। তোমার কান্নটা বলে দিচ্ছে তুমি আমাকে কতটা ভালোবাসো।
আরিজা - (কান্না করে) আই এম সরি।
আজমাইন - ঠিক আছে, কিন্তু এরপর আবার অন্য কাউকে পেয়ে আমাকে ভুলে যাবে নাতো ।
আরিজা - (কান্না করে করে) সেটা আর সম্ভব নয় আপনি আমাকে বিয়ে করে নিয়েছেন। তাহলে অন্য কাউকে ভালোবাসবো কি করে। আর আপনার যদি তাও সন্দেহ হয় তাহলে এক কাজ করতে পারেন।
- আরিজা ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে বাচ্চাদের মতো মুখ করে কথাগুলো বলছে দেখেই আজমাইন খুব হাসি পচ্ছিলো তারপরও হাসিটাকে চেপে রেখে বললো।
আজমাইন - কি কাজ করতে পারি বলতো।
আরিজা - (কান্না করে করে) আপনার যদি আমাকে হারানোর ভয় থাকে, তাহলে আমাকে আপনার বেবির আম্মু বানিয়ে দিন। আমি তোমাকে ছেড়ে যেতে পারলেও, আমাদের বেবিটাকে ছেড়ে যেতে পারবো না।
আজমাইন - ওওওও তার মানে তুমি আমাকে ভালোবাসো না, আমাকে অপশন হিসেবে বেছে নিয়েছে তাইতো। রাফিন তোমাকে ছেড়ে চলে গেছে তাই তুমি আমাকে এখন নিজের পাশে চাইছো
- আজমাইন কথায় আরিজা কান্নার গতিটা আরো বেড়ে গেলো।
আরিজা - (কান্না করে করে) প্লিজ আপনি বিশ্বাস করেন আমি ওই ভাবে বলতে চাইনি। আমি আপনাকে ভালোবাসি সেটা বিশ্বাস করাতে চেয়েছি। আর আমার বেবি হয়ে গেলে আমিতো কাউকে ছেড়ে যেতে পারবো না। আপনার যদি তাও বিশ্বাস না হয় আমি তাহলে প্রমান দিচ্ছি।
- আরিজা আজমাইন মুখের দিকে তাকিয়ে রইলো।
আজমাইন - হুম দাও প্রমাণ দাও, কতটুকু ভালোবাসো দেখি।
এবার আরিজা যেটা করলো তার জন্য আজমাইন কখনো প্রস্তুত ছিলোনা। ও আজমাইন শার্টের কলারটা ধরে ওদের চার ঠোঁট এক করে দিলো। আরিজা আজমাইন ঠোটগুলো পাগলের মত চুষছে তাই আজমাইন বুঝতে পারলো পাগলিটা খেপেছে। আজমাইন ওকে শান্ত করার জন্য ওর কোমর জড়িয়ে ধরে ওর সাথে রেসপন্স করতে লাগলো, তারপর একটা সময় আরিজাকে ছেড়ে দিয়ে বুকের সাথে শক্ত করে চেপে ধরে বললো।
আজমাইন - সত্যি ভালোবাসোতো কখনো ছেড়ে যাবে নাতো।
আরিজা - (কান্না করে করে) আপনি আমার দ্বিতীয় ভালোবাসা তাই বলে প্রয়োজন নয়, প্রিয়জন। আপনাকে ছেড়ে যাওয়ার কথা কখনো কল্পনাও করবোনা। আই লাভ ইউ জান।
আজমাইন - আই লাভ ইউ টু পাগলি। তো ভাল থাক ভালোবাসার মানুষগুলো, এরপর কি হতে পারে সেটা হয়তো আপনারা জানেন তাই বাকিটা বললাম না। পরবর্তী গল্প আসা পর্যন্ত সুস্থ থাকুন ভালো থাকুন এবং আমাদের গল্প লেখক কিং সাথেই থাকুন। আল্লাহ হাফেজ।

,,,,,,,,,,সমাপ্ত,,,,,,,,

অবহেলিত স্বামী
শেষ পর্ব
লেখকঃ আজমাইন হোসেন_ মিস্টার_লেখক_পিচ্চি

Post a Comment

0 Comments