Header Ads Widget

Responsive Advertisement

নিষিদ্ধ নারী - পার্ট ১

কলকাতার নাম করা গাইনোকোলজিস্ট ডক্টর দেখাতে সিরিয়াল দিয়ে বসে আছে রিতিকা। নিয়ম করে সপ্তাহে একবার রুটিন চেক আপ করাতে হয় তাকে। গাইনোকোলজিস্ট এর চেম্বারে আজ ভিড় অতিরিক্তই বেশি। তাই সে ক্লিনিক এর করিডরে এসে দাঁড়ালো। মনে মনে সে বিড়বিড় করে বলল, আগে তো এতো ভিড় থাকতো না।কিন্তু আজকাল গাইনোকোলজিস্ট এর চেম্বারে একটু বেশি ভিড় থাকে।কি জানি হতে পারে আমার লাইনে সবাই চলে এসেছে।

রিতিকার লাইনে যারা থাকে তাদের নিয়ম করে সপ্তাহে একবার যোনি পরীক্ষা করে নিতে হয়। রিতিকা একজন পতিতা। কলকাতাতে অবশ্য পতিতা বৃত্তির জন্য যোনি পরীক্ষা করার এতো হাই-লেবেল এর ব্যাপার-স্যাপার নেই। যে সব নারী ভদ্র সমাজে থেকে গোপনে পতিতা বৃত্তির সাথে জড়িত তাদের এই পরীক্ষার ব্যাপারে একটু সচেতন থাকতে হয়। আর তা বাদেও রিতিকা নিজের যৌনস্বাস্থের ব্যাপারে খুবই সচেতন। হাই সোসাইটির কাস্টমার পেতে হলে সাথে ক্লিনিক্যাল ছাড়পত্র রাখতে হয়।



বাইরে ঝুম বৃষ্টি হচ্ছে, বৃষ্টির দিকে মন যেতেই অতীতের ঘটনা রিতিকার চোখে ভেসে উঠে। জীবন কত সুন্দর ছিল আগে। নিজের দোষে মা-বাবা'কে হারিয়ে আজ সে পতিতা। বৃষ্টির দিকে তাকিয়ে থাকতে থাকতে সে হারিয়ে যায় অতীতের স্মৃতিতে।
একটা সময় ছিল যখন এমন ঝুম বৃষ্টির দিনে মায়ের হাতের পাকোড়া আর গরম চা খাওয়া তার অভ্যাস ছিল। বাড়ির বড় মেয়ে হওয়ার জন্য আদরও ছিল অনেক বেশি।
— বাবা-মা, ছোট বোন আভা আর রিতিকা এই নিয়ে ছিল তার ছোট্ট পরিবার। কি ছিল না সেই পরিবারে? মানসম্মান, আর্থিক স্বচ্ছলতা, বাবা-মায়ের ভালোবাসা। সুখে শান্তিতেই তাদের জীবন বেশ কাটছিল । বাবা ছিল হাইস্কুলের মাস্টার। আশেপাশের দশগ্রামের মানুষ তাঁকে সম্মান করতো। কে জানত ওমন নাম করা মাস্টার এর মেয়ে পতিতা হবে? কিন্তু সে তো পতিতা হলো তাও আবার নিজ দোষে।
— বয়ঃসন্ধিকালের প্রেমের সব কিছুই সুন্দর লাগে। রিতিকার প্রেম সম্পর্কে ধারণা না থাকলেও বান্ধবীদের প্রেম দেখে তারও মনে প্রেমের ঝড় উঠে। এমন সময়ে তাদের বাড়িতে আসে অমল।
— অমল ছিল রিতিকার বাবা সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় এর স্কুলের টপার ছাত্র। মুম্বাইয়ের কোন এক কলেজ থেকে পাস করে বেরিয়েছে।
— একদিন সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের সাথে রাস্তায় দেখা হয়ে যায় অমল চ্যার্টাজির। পুরনো স্কুল ছাত্রকে দেখে খুশিতে গদগদ হয়ে বললেন, আরে অমল! গ্রামে কবে ফিরলে?
—মাস্টার মশাই'কে প্রণাম করে অমল জানালো সে কিছুদিন হলোই গ্রামে ফিরেছে।
—সুনীল গল্প করার জন্যই প্রায় জোর করেই নিজের বাড়িতে নিয়ে আসে অমলকে। বাড়িতে এনে বাইরে থেকে স্ত্রী রত্নাবর্তী'কে ডাকলেন।
—রত্নাবর্তীর সাথে বড় মেয়ে রিতিকা আর ছোট মেয়ে আভা বেরিয়ে আসে।
—রত্না দেখ কাকে সাথে নিয়ে এসেছি। আমার স্কুলের সেরা ছাত্র অমল।যার কথা মাঝে মাঝেই তোমাকে বলি। বাবা ছাড়া সন্তান কি ভাবে শুধু নিজ মেধার বলে উপরে উঠতে পারে, অমলকে না দেখলে বোঝা যায় না।
—রত্নাবর্তী বললেন,বাইরে দাঁড় করিয়ে রেখেছ কেন ভেতরে নিয়ে এসো। অতিথি আনবে আগে বললেই তো আমি জল খাবার তৈরি করতাম।
—আরেহ জলখাবার কি বলছো রত্না! আজ তো রাতের খাবার অমলের সাথেই খাব। তুমি রান্না তুলে দাও।
—অমল অনেকবার না বললেও শেষ পযন্ত মাস্টার মশাই এর কথার অমান্য করতে পারে না। কথাই কথাই সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় জানতে পারলেন, কিছুদিন দিন অমল গ্রামেই থাকবে চাকরি না পাওয়া পযন্ত।
—রাতে খেতে বসে তাই সুনীল তার প্রিয় ছাত্রকে বললেন, তার বড় মেয়ে রিতিকা'কে যেন অমল পড়ায়। তার জন্য মাসে কিছু টাকাও তাকে দেওয়া হবে। চাকরি কবে হবে সেই আশায় বসে না থেকে প্রাইভেট পড়ালে অমলের মাস শেষে কিছু টাকাও আসবে।
—এমন প্রস্তাব অমলের কাছে ভালোই লাগে। আজকাল বাড়িতে মায়ের টাকায় সংসার চলা বেশ কষ্টকর হয়ে দাঁড়িয়েছে। ছোট বোনের পড়ার খরচ চালাতেও হিমশিম খেতে হচ্ছে মায়ের। অমল তাই মাষ্টার মশাই এর প্রস্তাবে রাজি হয়ে যায়।
—শুরু হয় রিতিকার প্রাইভেট পড়া। প্রত্যেক দিন বিকালবেলা অমল পড়াতে আসতো।
******
—পেশেন্ট নাম্বার ১৪, পেশেন্ট নাম্বার ১৪ ডাক শুনে অতীত থেকে বাস্তবে ফিরে আসে রিতিকা।
—"পেশেন্ট নাম্বার" ১৪ রিতিকা স্যানাল। ডক্টর অদিতির এসিস্ট্যান্ট এর ডাক শুনে পেছন ফিরে রিতিকা বলল, এইতো আসছি। ডক্টরের চেম্বারে ঢুকতে ইতস্তত বোধ করে রিতিকা।
_কয়েক মাস আগের ঘটনা। রিতিকার করাইনিক পায়োমেট্রা হয়েছিল। ডক্টর তার পুরো জরায়ু ওয়াশ করে দিয়েছিল, সে কি ব্যথা। ভাবলে এখন শরীরে কাঁটা দিয়ে উঠে। সেই থেকে গাইনী ডক্টর এর চেম্বারে ঢুকতে ভয় লাগে তার । কিন্তু কিছু করার নেই, নিজের স্বাস্থ্যের কথা চিন্তা করে হলেও সপ্তাহে একবার দেখাতে আসতেই হবে তাকে।
—আর তাছাড়াও গাইনেকোলজিস্ট এর ছাড়পত্র সাথে থাকলে কাস্টমার নিশ্চিন্তমনে শুইতে চলে আসে।পতিতা বৃত্তিতে কাস্টমার খুশি তো সব খুশি। কাস্টমার খুশি না হলে যে, তার পেট খালি থাকে।
—চেম্বারের ভেতর ঢুকে রিতিকা ভাবে না জানি ওই সাদা এপ্রন পড়া গাইনী ডক্টর আবার কি না কি করে বসে আজ!যোনি ওয়াশ করা খুব কষ্টের। চেম্বারে ঢুকে সে দু পা তুলে চেয়ারে বসে। ডক্টর এর এসিস্ট্যান্ট এসে স্টেপস দিয়ে ওর পা দুটো চেয়ারের দুপাশের ফ্রেমে বেঁধে দেয়। তারপর কোমরে বেল্ট পরিয়ে ওকে আটকে দেয়। এই মুহুর্তটাই ওর কাছে সবচেয়ে ভয়ের। পা ও কোমর বাঁধা অবস্থায় ও কেবল ডক্টর অদিতির দয়ার উপরই নির্ভরশীল। মিষ্টি চেহারার নতুন ডক্টর অদিতি এসে ওর সামনে দাঁড়ালো।
—কি ব্যাপার মিস রিতিকা। কেমন আছেন? রিতিকা ভয়েভয়ে উত্তর দিলো, "সেটাতো আপনিই ভাল বলতে পারবেন ম্যাম। গতবারের মতো কিছু না হওয়ায় ভালো।
— সেটা বুঝতে হলে আমাকে আপনার যোনি একবার ভাল করে চেক করে দেখতে হবে। আগের ডক্টর এর থেকে নতুন এই ডক্টর'কে ভালোই লাগে রিতিকার কাছে। কারণ আগের ডক্টর রিতিকার দিকে হেয় চোখে তাকাতো। আর ডক্টর অদিতি তাকে আপনি বলে সম্বোধন করে, যা রিতিকার খুব ভালো লাগে।
কথা বলতে বলতেই ডক্টর অদিতি হাতে গ্লাভস আর মুখে মাস্ক পরে নেয়। তারপর যোনিতে একটা স্পিকিউল ঢুকিয়ে যৌনিটা মেলে ধরে আর একটা পেন্সিল টর্চের আলো ফেলে পুরোটা খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখে।
—পুরোটা সময় ধরে রিতিকা চিন্তা করে। আগের অসুখ টা যদি আবার ধরা পড়ে তাহলে আজকের কাস্টমার'কে না বলতে হবে। মাসের শেষ এর দিকে এখন হাতে আসা লক্ষী দূরে গেলে, সে বোনকে কি ভাবে টাকা পাঠাবে!
নানা কথা ভাবতে ভাবতে একসময় সে অনুভব করে ডক্টর অদিতি, স্পিকিউলটা বের করে নিচ্ছে। ভয় যেন আষ্টেপৃষ্ঠে ধরে রিতিকা'কে,এখন ডক্টর যদি বলে আপনাকে তো ছাড়পত্র দেওয়া যাবে না। তখন রিতিকার কি হবে?
—ডক্টর অদিতি কাজ শেষে রিতিকা'কে বিশেষ কিছু না বলেই হাত ধুতে চলে যায়। রিতিকা স্ট্রেপের বাধনে আটকে চেয়ারেই পরে থেকে অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করে, কখন ডক্টর এসে বলবে আপনাকে ছাড়পত্র দেওয়া হবে।
—অবশেষে ওয়াশরুম থেকে বেরিয়ে হাসি মুখ নিয়ে ডক্টর অদিতি বলল, দেখে তো ভালই মনে হলো। আপনাকে মেডিক্যাল ছাড়পত্র দিতে আমার কোন আপত্তি নেই। তবে প্রতি সপ্তাহে রুটিং চেক আপ করাতে ভুলবেন না, এটা আপনার স্বাস্থ্যের জন্যেই ভালো। আজকাল যোনি ক্যান্সার বেশি হচ্ছে। ডক্টর দের এই এক সমস্যা, তাঁরা মনের ভেতর সুন্দর করে ভয় ঢুকিয়ে দিতে পারে।
—ডক্টর এর চেম্বার থেকে বেড়িয়ে বড় করে নিশ্বাস ছাড়ে রিতিকা। তার এমন জীবন ভালো লাগে না। কিন্তু কিছুই করার নেই, এই পেশা তাকে আষ্টেপৃষ্টে জড়িয়ে ধরেছে। সে নিজে ভালো থাকতে চাইলেও সমাজ এর জন্য ভালো সে থাকতে পারবে না।
—বাইরে এসে রিতিকা দেখলো এখনো ঝমঝমিয়ে বৃষ্টি হচ্ছে।সন্ধ্যাতে তার কাস্টমার এর সাথে ডেট আছে। বড়লোক পার্টি, সন্ধ্যা থেকে সাড়া রাতের জন্য বুক করেছে রিতিকা'কে। টাকার পরিমাণ ও একটু বেশি,নইতো রিতিকা কখনো এক কাস্টমার'কে পুরো রাত দেয় না।
—বৃষ্টি ছাড়ার নাম নেই, তাই মেজাজ টা তার খারাপ হলো। সে সময় মতো কি করে পৌঁছাবে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে এই চিন্তা করছে। আগে নিজের বাড়ি যেতে হবে, বাড়ি বলতে ২ রুম, এর্টাচ বাথরুম, ডাইনিং আর একটা কিচেন, ছোট্ট ফ্লাটে থাকে রিতিকা। আগে তার ছোট বোন আভা থাকতো কিন্তু যখন থেকে সে এই পেশায় নাম লিখিয়েছে তখন থেকে বোনকে বাইরে পাঠিয়ে দিয়েছে। আভা পূজোতে আসার জন্য বায়না করে কিন্তু রিতিকা আল্যাউ করে না। রিতিকা চায় না, তার ছোট বোন তার এই অভিশপ্ত জীবনের অংশ হোক।
—নানান কথা মনে বিড়বিড় করতে করতে ক্লিনিক এর গেইট থেকে বৃষ্টির মাঝেই নামতে ধরেছে, তখনি একটা গাড়ি এসে সামনে দাঁড়ায়। রিতিকা বিড়বিড় করে মুখ খিস্তি করে ব'লে। বড়লোকদের এই এক সমস্যা। যখন তখন যার তার সামনে এসে গাড়ি দাঁড় করিয়ে হাঁটাচলা পথ বন্ধ করে দেয়। এদের দেখে মনে হয়, রাস্তা এদের বাপের।

মনে মনে যখন রিতিকা গাড়ির মালিককে গালি দিয়ে সাইট কেটে যেতে নিয়েছে, ঠিক তখনি ফোনটা বেজে ওঠে। রিতিকা বেশ বিরক্তই হলো।নিশ্চয়ই হারামজাদা দালালটা ফোন করেছে। এই ভেবে বিড়বিড় করে দালাল কেউ চার'টা গালি দিয়ে, সে ব্যাগ থেকে ফোন বের করলো। ফোন বের করে দেখল আননোন নাম্বার।এতক্ষণ তাহলে দালাল টাকে বিনা কারণেই সে গালি দিয়েছে, ভেবে রিতিকা হাসে। হাসি থামিয়ে ফোন রিসিভ করতেই ওই পাশ থেকে এক পুরুষ ঝাঁঝালো কণ্ঠে বলল, আপনার কি মাথায় কোন সমস্যা আছে? ফোন ধরতে এতো সময় লাগে?গাড়িতে উঠে বসুন।
—রিতিকার ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে বলল, কে আপনি? আর গাড়িতে উঠে বসবো মানে?
—রিতিকার কথার কোন উত্তর না দিয়ে ফোনটা কেটে দেয় ওই পাশে।
ফোন কেটে যাওয়ার পর রিতিকা খেয়াল করলো দালাল এর একটা মেসেজ এসেছে।
" কাস্টমার নাকি আজ বিকেল থেকেই এক সপ্তাহের জন্য রিতিকা কে চায়। কাস্টমার সেই জন্য তাকে নিতে নিজেই ক্লিনিকে আসবে।
দালালের মেসেজে রিতিকা বেশ ভালোভাবেই বুঝতে পারে কাস্টমার বড়লোক । বড়লোক যেহেতু তার মানে টাকার অংক টাও বড়, খুশি হয়ে যায় রিতিকা। এক লোকের সাথে টানা সাত দিন শুয়ে যদি পাঁচগুণ টাকা পাওয়া যায় এটা তো সেলিব্রেট করার মতো। নিজের মনে চিন্তা করতেই যখন ব্যস্ত রিতিকা,তখন সেই চিন্তার ছেঁদ পড়ে গাড়ির হর্ণের তীব্র শব্দে। রিতিকার কানের পর্দা ফেটে যাওয়ার উপক্রম হলো।
রাগে যখন গালি দিতেই নিয়েছে, তখনি তার হুঁশ হল; আরেহ কাস্টমার তো তাকে নিতেই ক্লিনিকে আসার কথা। এটা ভেবেই সে জিভে কামড় দিল। এতক্ষণে রিতিকা বুঝতে পারলো, গাড়িতে আসলে তার কাস্টমার বসে আছে।
এই প্রথম কোন কাস্টমার তাকে নিজে ফোন করেছে। বেশ বড়লোক না হলে কারো গাড়ি থাকে না এটা রিতিকা ভালোই জানে। আজ যদি এই কাস্টমার'কে সে খুশি করতে পারে তাহলে ভালো বোনাস পাওয়া যাবে।
—রিতিকার এমন দাঁড়িয়ে থাকা দেখে গাড়ির ভেতর থেকে ড্রাইভার ছাতা নিয়ে বেড়িয়ে এলো। গাড়ি থেকে বের হয়েই বলল, আপনার সমস্যা কি? তাড়াতাড়ি গাড়িতে উঠে বসতে পাচ্ছেন না?
—রিতিকার মাথায় যেন এবার আকাশ ভেঙে পড়লো। একটা ড্রাইভার এমন সহজ ভাবেই গলা উঁচিয়ে কথা বলছে মানে এটাই কাস্টমার। কারণ অনেক সময় কাস্টমার এমন গলা উঁচিয়ে কথা বলে। অনেকে তো খিস্তি করে বলে, কিরে মাগী আজকে তুই আমার;এই বলে হে হে করে হাসেও তারা। এমন গলার আওয়াজের সাথে সে খুব ভালো ভাবেই পরিচিত। কিন্তু আফসোস হল এতোক্ষণ সে আকাশ কুসুম ভাবতে ছিল এই ড্রাইভারটা কে নিয়ে। ফোনে যে কন্ঠ টা সে কিছুক্ষণ আগে শুনেছে, অবিকল সেই কন্ঠ। তার মানে কোন সন্দেহই নেই এই ড্রাইভার'টাই তাকে বুকিং করেছে! ড্রাইভার এর এতো টাকা এলো কোথায় থেকে? সাত দিনের জন্য বুকিং!কম টাকা না তো।আর তা বাদেও রিতিকার রেট বেশি, এক জন এর সাথে এক ঘন্টা শুইতে গেলেই দুই-হাজার টাকা সে পায়। সেখানে সাত দিনের জন্য দালাল নিশ্চয়ই চল্লিশ হাজার এর নিচে ডিল করেনি। এতো টাকা এই ড্রাইভার পাবে কোথায় থেকে?
—ড্রাইভার উচ্চ তীক্ষ্ণ কন্ঠে আবার বলল, আপনার কি কানেও সমস্যা আছে নাকি? শুনতে পাচ্ছেন না গাড়িতে উঠে বসুন।
—রিতিকার মন ভেঙে গেল, সে ভেবেছিল বড়লোক পার্টি হবে;বকশিস টকশিস ভালো পাওয়া যাবে কিন্তু এখন তো দেখছে সামান্য একটা ড্রাইভার। বকশিস তো দূরের কথা হয়তো নিজের শখ মেটাতেই অনেক কষ্টে এই সাত দিনের বুকিং এর টাকা জমিয়েছে। এখন আর রিতিকার কিছু করার নেই, এই সাত দিন কোন বকশিস এর আশা ছাড়াই এই ড্রাইভার এর বিছানা গরম করতে হবে। রিতিকা সাত-পাঁচ আর না ভেবে ড্রাইভার এর পাশের সিটে গিয়ে বসে।
—ড্রাইভার যখন গাড়িতে বসে গাড়ি র্স্টাট করতে নেয় তখন রিতিকা নিজের এক পায়ের উপর আর এক পা তুলে দিয়ে আবেদনময়ী হয়ে বসে ড্রাইভার এর দিকে তাকায়।এরপর মিষ্টি হাসি দিয়ে মধুর স্বরে বলে ওঠে, ডার্লিং তুমি কি রাগ করেছো? এতো ঝাঁঝালো কণ্ঠ তোমার এই সুন্দর চেহারায় মানায় না। মুখে এতো মিষ্টি সুরে কথা বললেও, মনে মনে সে বিড়বিড় করে বলছে; হারামজাদা আমার সাত দিন মাটি করলো।
—ড্রাইভার এবার ইতস্তত বোধ করল। ঢুকি চিপে নরম সুরে বলল,আপনার কোথাও ভুল হচ্ছে স্যার আপনাকে বুকিং করেছে।
—ড্রাইভার এর কথা শুনে চমকে উঠে রিতিকা। স্বাভাবিক হয়ে বসে পেছন দিকে তাকাতেই অবাক হয়ে যায় সে। পেছনে চাপ দাড়ির সুর্দশন এক যুবক বসে আছে। রিতিকা মুগ্ধ হয়ে তাকিয়ে থাকে যুবকটির দিকে। রিতিকার চাপ দাড়ির ছেলে বেশ পছন্দের। কপাল যে আজ তার এতো ভালো সে ভাবতেও পারেনি। সে বোকার মতো একটা ড্রাইভারকে কি না কি ভেবে বসেছিল। সে যাইহোক, রিতিকা অনেক খুশি হয়ে যায় কারণ সচারাচর এমন সুর্দশন যুবক পাওয়া যায় না। বেশিরভাগ সময়ই বুড়া হাড্ডি কড়কড় করে এমন বড়লোক পুরুষ এর বিছানা গরম করতে হয় তাকে। আর এখন তো আগামী সাত দিন এই সুর্দশন পুরুষ এর বিছানায় সে থাকবে।
—রিতিকা সরি বলে গাড়ির পেছনের সিটে বসার জন্য গাড়ি থেকে নামতেই যাচ্ছিলো। ঠিক তখুনি আবার ড্রাইভার বলে ওঠে,নামতে হবে না আপনার।আপনি এখানেই বসুন।
—রিতিকা ভ্রু কুঁচকিয়ে ড্রাইভার এর দিকে তাকিয়ে কিছু বলতে নিয়েছে তখন ড্রাইভার আবার বলল, স্যার তাঁর পাশে কারো বসা পছন্দ করে না। আপনি এখানেই বসুন।
—রিতিকা বেশ বিরক্ত হলো, কিন্তু এমন বড়লোক পার্টির কিছু আজাইরা ভাব থাকিবে এটাই স্বাভাবিক।হুঁহ বিছানায় আমার সাথেই শুতে হবে অথচ পাশে নাকি বসা তাঁর পছন্দ না। নিজের মনেই বিড়বিড় করে রিতিকা মুচকি হাসলো।
—গাড়ি ফুল স্পিডে সামনে এগুচ্ছে।গাড়ির ছোটানো দেখে রিতিকার হাস্যকর একটা কথা মনে আসে। তার মনে হল এই গাড়ির তর সইছে না তার সাথে বিছানায় যাওয়ার জন্য। কথাটা পুরোপুরি সত্য না হলেও অর্ধেক সত্য এটা তো মানতেই হবে। গাড়ির মালিক বিছানায় তাড়াতাড়ি যাওয়ার জন্যই, গাড়িকে দ্রুত ছোটানোর হুকুম দিয়েছে বলেই রিতিকার ধারণা।
—রিতিকা এবার নিজেকে নিয়ে ভাবে।এমন কাস্টমার যদি টানা ৬মাস পাওয়া যায় তাহলে এই পতিতাবৃত্তি কাজ তাকে আর বেশি দিন করতে হবে না। সারাজীবন পতিতা হয়ে থাকতে চায় না সে। তাই নিয়মিত ব্যাংকে টাকা জমাচ্ছে। এ পর্যন্ত গেল দুই বছরে প্রায় ৫ লক্ষ টাকা জমিয়ে ফেলেছে। ২০ লক্ষ টাকা জমানো হয়ে গেলেই ও সেটা ফিক্সড ডিপোজিট হিসেবে জমা করেই, এই ঘৃণ্য পেশা ছেড়ে বাকি জীবন ছোট্ট বোনের সাথে চায়নাতে গিয়ে থাকবে।
শুনেছে সেখানে নাকি সহজে কাজ পাওয়া যায়। তারা দু-বোন মিলে নিজদের ছোট্ট সংসার পাতবে সেখানে। অবশ্য তার জীবনের এতো চড়াই-উৎরাই পরও আজও সে স্বপ্ন দেখে,তার নিজস্ব একটা পছন্দের মানুষ থাকবে। নিজের পছন্দের ছেলে'কে বিয়ে করবে। তখন টাকার জন্যে নয়, বরং ভালবাসার জন্যেই প্রতি-রাতে সে যৌনতায় লিপ্ত হবে। কাস্টমারের তৃপ্তির জন্যে তখন আর টেনশন করতে হবে না তাকে, বরং ওর স্বামী ওকে প্রতিরাতে তৃপ্ত করবে।
—নিজের কল্পনার জগতে ব্যস্ত ছিল রিতিকা। পেছনে বসে থাকা যুবকের প্রশ্নে, ভাবনার জগৎ থেকে বাস্তবে ফিরে আসে । যুবকের কন্ঠে দ্বিতীয় বারের মতো মুগ্ধ হয়ে যায় রিতিকা। নিজেকে সামলে নিয়ে জিজ্ঞেস করল, কিছু বললেন?
—আপনার রিপোর্ট কি? মেডিকেল ক্লিয়ারেন্স পেয়েছেন?
—রিতিকা পেছনে বসে থাকা যুবকটির দিকে তাকালো। তারপর মিষ্টি হাসি দিয়ে মধুর স্বরে বলল, ডার্লিং ডোন্ট ওয়ারি। তোমার কোন ভয় নেই, ফুল ক্লিয়ারেন্স পেয়েছি। তোমাকে তৃপ্ত করার জন্য আমি পুরোপুরি রেডি।
আমাকে তুমি শুধু বাড়িতে নামিয়ে দাও। তোমার জন্য নিজেকে আবেদনময়ী রূপে তৈরি করে মাত্র ১ ঘন্টায় ফিরে আসবো।
—রিতিকার কথায় কান না দিয়ে যুবকটি বলল, রেডি হওয়ার বিশেষ প্রয়োজন নেই। আপনি শুধু ব্যাগ গুছিয়ে দশ মিনিটের ভেতর চলে আসবেন।
—ওহ ডার্লিং, তোমার তো দেখছি খুব তাড়া।
—রিতিকা'কে থামিয়ে দিয়ে পেছনের যুবকটি বলল। কল মি, রণক। ভদ্রতা বজায় রেখে কথা বলুন। আপনারা এতো সস্তা হন কি ভাবে? কিছুক্ষণ আগেই দিপকে ডার্লিং বলে সম্বোধন করলেন আর এখন আবার আমাকে ছিঃ।
—রিতিকা অবাক হয়ে যায়। সেই সাথে অনেক রেগেও যায়। কিন্তু কাস্টমার কে সরাসরি কিছু বলা যাবে না। তাই মনে মনে বিড়বিড় করে বলে, হারামজাদার সমস্যা কোথায়! ডার্লিং ডাকব না তো, কি ডাকব খোকা। আমার মুখে ডার্লিং শোনার জন্য কাস্টমারেরা অস্থির হয়ে উঠে। আর এই জানোয়ার টা বলে কি না এতো সস্তা হলাম কি করে? বাড়িতে ঢুকেই যে আগে প্যান্টের চেইন খুলবে।সে গাড়ির ভেতর ডার্লিং বলতে মানা করছে। হুঁহ যত্তসব বস্তাপচা সস্তার লেকচার। অদ্ভুত এই পৃথিবীতে কত রকমের মানুষই না আরও দেখতে হবে।

গাড়ী এসে থামলো কলেজ রোডের পাঁচ নাম্বার গলির মুখে। কিছু না বলেই রিতিকা গাড়ি থেকে নেমে চলে গেল। রিতিকা কোনো কথা বলার প্রয়োজন বোধ করেনা। কারণ ইতিমধ্যে যে টুকটাক কথাবার্তা হয়েছে তাদের মাঝে, এতে রিতিকা বেশ ভালোভাবেই বুঝতে পেরেছে।এই পুরুষ মুখোশধারী ভদ্র-সমাজের। ঠিক যেমন ওর দালাল।বাইরে অসাধারণ ব্যক্তিত্বের একজন মানুষ আর ভেতরে এক হিংস্র পশু। ওই হিংস্র পশুর সুবাদে এমন কত মুখোশধারী ভদ্র- সমাজের পুরুষ রিতিকা দেখেছে তার ঠিক নেই। তাই রণককে নিয়ে মাথা ঘামানোর মতো কিছুই দেখছে না রিতিকা। জায়গা মতো পৌঁছানোর পর এই মুখোশধারী ভদ্র- সমাজের পুরুষ, প্যান্টের চেইন খুলতে দু সেকেন্ডও সময় নিবে না।এ কথা সে ভালো করেই জানে। নিজের মনেই তাচ্ছিল্যের একটা হাসি দিয়ে, গলির ভেতর সাত নাম্বার বাড়িতে ঢুকে রিতিকা।
—এই দিকে রণক যেন হাঁফ ছেড়ে বাঁচলো। এমন নষ্টা মেয়ের সংস্পর্শে আসতে হবে রণক তা কখনোই ভাবেনি। জল যদি মাথার উপর না উঠতো তাহলে রণক কোন দিন এই পথে পা বাড়াত না। ড্রাইভার গাড়ি সাইট করতেই রণক বাইরে বের হয়ে আসে। কিছুক্ষণ আগেই বৃষ্টি থেমেছে, এমন আবহাওয়া রণকের বেশ ভালোই লাগে। কিন্তু আবার এই আবহাওয়াই কাজের সময় খুবই বিরক্তিকরও লাগে।
রণক সিগারেট ধরিয়ে লম্বা একটা টান দিয়ে বলল, তুই কী শিউর যে এই মেয়ে সিকিউর?ইনফিউচার আমাদের কোন সমস্যা তে তো আবার পড়তে হবে না! এমনিতেই মাথার উপর অলরেডি জল উঠে আছে। মিডিয়ায় যদি এই কথা লিক হয় তাহলে মানসম্মান আর রক্ষা করা যাবে না।
—দিপেশ নিজেও একটা সিগারেট ধরিয়ে বলল, আমি খোঁজ নিয়েছি এই মেয়ের সম্পর্কে। এটা গোপন ব্যবসা এই মেয়ের, হাই সোসাইটির লোকদের সার্ভিস দেয়। হাইক্লাস প্রস্টেটিউট বুঝলি, হা হা হা। তাই আমাদের কাজ এর জন্য এই মেয়ে কে বাছাই করেছি আমি । কাকপক্ষীও কিছু জানতে পারবে না।
—তুই এই মেয়ের খোঁজ কোথায় পেলি?
—আরেহ এর যে দালাল আছে সব কিছু সেই বলেছে।
—দিপেশ তুই কি পাগল হয়েছিস? সামান্য একটা দালাল এর কথায় বিশ্বাস করে, এতো বড় রিস্ক এর কাজ করার সিদ্ধান্ত তুই নিলি কীভাবে?
—আরেহ রণক তুই বেশি চিন্তা করিস না তো। তোর এই গরীব বন্ধুর উপর বিশ্বাস রাখতে পারিস। আমি ড্রাইভার হতে পারি কিন্তু মাথার বুদ্ধি আমার দুর্দান্ত কাজ করে।
—দিপেশ তুই ব্যাপারটা বুঝতে পাচ্ছিস না। তোকে আমি বলে ছিলাম এমন কাউকে খুঁজতে যাকে দিয়ে গোপনে কাজটা করে নিব। কিন্তু সমাজের কেউ কিছু জানতেও পারবে না।
—তো আমি তো সেই কাজেই এই মেয়ে ঠিক করেছি। তুই একবার আশে-পাশে তাকিয়ে দেখত আমরা কোন এলাকায় আছি?
—রণক ভ্রু কুঁচকিয়ে বলল, কেন কলেজ রোডে।
—ভুল বললি আমরা কলেজ রোডের পাঁচ নাম্বার সোসাইটি তে আছি।
—মানে? এখানে তুই সোসাইটি কোথায় পেলি?
—তুই দেখি আসলেই কম চিনিস রাস্তা-ঘাট। দোস্ত কলেজ রোডের পাঁচ নাম্বার সোসাইটির পেছন এরিয়া এটা। আমরা যদি সামনের রোড দিয়ে আসতাম তাহলে মিস রিতিকা সমস্যা হতো। তাই পেছন গলিতে এসে নামিয়ে দিয়েছি,এই জন্য তুই চিনতে পাচ্ছিস না। আমরা সোসাইটির পেছন রোডে আছি।
—হোয়াট দ্যা ফাঁক! আমি তো এটা আগে ভাবিনি। একজন পতিতা কি ভাবে হাই-সোসাইটি তে থাকতে পারে?
—কারণ দোস্ত মিস রিতিকার যে দালাল সে হলো ফাইভ স্টার হোটেল এর মালিক মিস্টার রাজিব রয়। আর রিতিকার পরিচয় হলো মিসেস রাজিব রয়।
—তুই এই সব কি বলছিস? এতো বড় বিজনেস ম্যান এর ওয়াইফ প্রস্টেটিউট কেন হতে যাবে? আর হাসবেন্ড নিজেই দালালী বা কেন করবে? তোর কথা আমার মাথার উপর দিয়ে যাচ্ছে। একেত নিজের টেনশন আমি নিতে পাচ্ছি না, তার ভেতর এতো প্যাচানো কথা আমার সহ্য হবে না। দিনের বেলায় খেয়ে বের হয়েছিস নাকি?
—আরেহ দোস্ত এই বউ অর্জিনাল না। রিতিকা সুন্দরী আর আমরা তো ভালো করেই জানি হোটেলে উচ্চ বিত্তবান শ্রেণীর ব্যক্তিদের জন্য নানান ফ্যাসেলিটি থাকে। এটাও সেই ফ্যাসেলিটির মাঝেই পড়ে। মিস্টার রাজিব রয় মেয়েদের দিয়ে ব্যবসা করায়, আর রিতিকার ডিমান্ডও বেশি। তাই এই পাঁচ নাম্বার সোসাইটি তে নকল পরিচয় দিয়ে, ছোট একটা এপ্যারমেন্ট রিতিকাকে নিয়ে দিয়েছে। যখন ওকে কোথাও পাঠাতে হয় সেখানে রিতিকা নিজেই চলে যায়। সোসাইটি মানুষ এই সব ব্যাপারে কিছুই জানে না।
—তুই এই সব কোথায় জানতে পেরেছিস?
—কোথায় আবার জানতে পারবো। রাজিব নিজেই বলেছে, হাই-ক্লাস কাস্টমারদের এই গল্পটি বলেই হাতে নেয় শালা পারর্ভাট।
—গল্পের সত্যতা যাচাই-বাছাই করেছিস?
—অবশ্যই, তোর কি মনে হয়; কারও মুখের কথাই আমি এই ডিল করবো? আমি নিজে এই সোসাইটিতে খোঁজ নেওয়াইছি। সত্যি এখানকার মানুষজন রিতিকাকে মিসেস রয় হিসাবে চিনে।
—আমার মনে হচ্ছে আমি নতুন কোন পৃথিবীর মানুষ এর সম্পর্কে শুনতেছি। আমাদের সমাজে এতো কিছু হয়? আগে জানা ছিল না।
—তুই ভুল বলছিস রণক, আমাদের সমাজে এর থেকেও খারাপ অনেক কিছুই হয়। সব কিছু না জানলেও প্রস্টেটিউট এর অন্য আরও এক লাইন এর কথা তুই জানিস।
—রণক সিগারেটে লম্বা টান দিয়ে বলল, তোর কেমন লেগেছিল যখন এই হাই-ক্লাস প্রস্টেটিউট তোর পায়ের উপর হাত দিয়ে ডার্লিং বলেছিল?
—দিপেশ কাঁচুমাচু হয়ে বলল, তুই কোন কথা থেকে কোন কথাই যাচ্ছিস? জানিসই তো এই সবে আমার ফিলিংস আসে না।আমি আমার অক্ষরা কে নিয়েই সুখে আছি।
—দিপেশ পাল্টা প্রশ্ন করে এই হাই-ক্লাস প্রস্টেটিউটে তোর ফিলিংস কি?
—ছিঃ! ছিঃ! ছিঃ! কি যা-তা বলছিস দিপেশ?
—আজব যা-তা বললাম কখন? সেম ক্রোশ্চিন তো তুইও আমাকেও করেছিস।
—আমি করেছি কারণ তোর অভিজ্ঞতা আছে এই সবে। একটু আগেই তো ভুলে যাওয়া অতীত তুই মনে করে দিলি আমাকে। ভাবলাম নতুন করে তোকে একটু যাচাই করে নেই।
—রণক এর কথা শেষ না হতেই দিপেশ এর চোখ ঝাপসা হয়ে আসে। ঘনঘন টান দিয়ে সিগারেট শেষ করে দিপেশ বলল, তোকে না কতবার বলেছি অতীত নিয়ে কথা বলবি না।
—কি আজব! আমি কোথায় বললাম? তুই তো বললি আমি নাকি আরও একটা কাহিনী জানি। রণক তার কথা শেষ করেই হা হা হা করে হেসে উঠে।
—দিপেশের হাসি পায়না, অন্যের জীবনের কথা বলতে বলতে কখনো যে দিপেশ নিজের অতীতেই চলে গেছে বুঝতেই পারেনি। আকাশের দিকে শূন্য দৃষ্টিতে তাকিয়ে আরও একটি সিগারেট ধরিয়ে লম্বা টান দেয় দিপেশ। রণকের বাড়িতে আশ্রিত সে, বাড়ির সবাই দিপেশকে কাজের লোক ভাবলেও রণক ভাবে বন্ধু। ছোট বেলা থেকে একি সাথেই বড় হয়েছে তারা। তাই দিপেশ এর অতীত সম্পর্কে রণক সব কিছুই জানে।
—রণক দিপেশ এর মনের অবস্থা বুঝতে পেরে কথা ঘোরাতে বলল, এই মেয়ে কি সব কিছু জানে? কেন আমরা সাত দিনের জন্য তাকে নিয়ে যাচ্ছি?
—দিপেশ বলল, কেন আবার নিয়ে যাচ্ছি মানে? ওর যা কাজ সেই কাজেই তো নিয়ে যাচ্ছি।
—না দিপেশ তুই কি সবটা খুলে বলেছিস? পরে যদি না বলে।
—আরেহ এরা টাকার জন্য সব করে, তোর এতো ভাবতে হবে না। তুই ভাবেক এই সাত দিনের মাঝেই আমাদের ঝামেলাটা চুকিয়ে, ব্যাপারটা যেন ধামাচাপা দিতে পারি।
—ওই সব নিয়ে ভাবতে হবে না। বাড়িতে বাবা-মা ফেরার আগেই, এই মেয়েটাকে কাজে লাগিয়ে সব সব সমস্যা সমাধান করেই আমরা বাড়ি ফিরে আসবো । দিপেশ মেয়েটাকে ফোন দেতো, দেখত এতো সময় লাগছে কেন? আকাশের অবস্থা দেখে তো মনে হচ্ছে আবার বৃষ্টি নামবে। আমাদের সন্ধ্যার আগেই যত তাড়াতাড়ি সম্ভব পৌঁছাতে হবে। নয়তো বৃষ্টির ভেতর গ্রামের অন্ধকার রাস্তায় যাওয়া অসম্ভব হয়ে দাঁড়াবে।

To be continued.....


গল্প: নিষিদ্ধ নারী (প্রেম কাহিনী)

পার্ট:-০১
লেখনীতে: সামিনা সামি

Post a Comment

0 Comments