Header Ads Widget

Responsive Advertisement

নিষিদ্ধ নারী - পার্ট ৯

অপরার অতীত বিচরণ ১
-----------------------------------
কিরে এই মাগী এই তোকে না কতবার কইছি, একটু ফিটফাট হয়ে থাকবি। তিন মেয়ের সামনে স্বামীর মুখে এমন ভাষায় কথা শুনে আলোকা দেবী ঘোমটা আড়াল করে দু'ফোঁটা চোখের জল ফেলে। ঘোমটার আড়ালে মায়ের চোখের জল এর সে কথা অপরা ভালো করেই জানে। অপরার মাঝে মাঝেই ইচ্ছে করে মা'কে নিয়ে দূরে কোথায় চলে যেতে। কিন্তু পরক্ষণেই মনে পড়ে পৃথিবীতে কি তাদের মতো মেয়ে লোকের কোথাও জায়গা হবে?
মায়ের কূলে কেউ নেই। রব্বুল দাস পান থেকে চুন খসলেই আলোকা দেবীর চুলের মুঠি ধরে পিঠে এলোপাতাড়ি কিল-ঘুষি মারতে মারতে চিৎকার করে বলে রোগাপটকা মাগীক তিনশো ট্যাকা দিয়ে আনায় ভুল হয়ছে । কামের কাম করতে পারেনা। এক মক্কেল এর সাথে শুইতেই মাগী হাঁপিয়ে ওঠে



অপরার বয়স তখন অল্প, সব কথার মানে সে না বুঝলেও এটা বুঝে তার মায়েরে কিনে নিয়ে আসা হয়েছে। অপরা লোকনাথ দেবতার ভক্ত ছিল। সন্ধ্যার সময় তার মা যখন তাদের তিন বোন'কে পেছনের ঘরে বন্ধ করে রাখে। তখন সে জাগ্রত দেবতা লোকনাথ এর কাছে মনের জমে থাকা সব কথা বলে। অপরা দেবতার কাছে জানতে চায় বাজারে এতো এতো জিনিস থাকতে মেয়েদের কেন বিক্রি করা হয়? লোকনাথের কাছে নানা নানীর নরক বাসের প্রার্থনা সে করে। মায়ের মুখে শুনেছে তার নানা নিজে নাকি অলোকা দেবী'কে তার বাবার কাছে বিক্রি করেছে। অপরা লোকনাথ এর থেকে প্রচুর টাকা পয়সা দাবী করে বলে, আমাকে যদি অনেক টাক্যার মালিক না বানাও তাইলে তোমার পূজা করা ছেড়ে দিমু। পাশে বসে তার দু'বোন মাথা নাড়িয়ে বলে, আমরাও পূজা করুম না দিদি।
—এই ভাবেই বছরের পর বছর কেটে যায়। এখন অপরা ষোড়শী যুবতী। আজকাল রব্বুল দাস মেয়ের দিকে ঘনঘন তাকায় আর ভাবে। অলোকা দেবীর বুক শুকিয়ে আসে। আজকাল মক্কেল আর তেমন একটা আসে না। শরীরে বেঁধেছে নানান অসুখ। অসুখের শরীর নিয়ে বিছানায় মক্কেলদের সুখ দিতে পারে না অলোকা দেবী। স্বামী রব্বুল দাস এর নজর যে এখন বড় মেয়ে অপরার দিকে তা বুঝতে বাকী থাকে না অলোকা দেবীর। মনে মনে সে পণ করে, বড় মেয়ে অপরার সাথে এমন কিছুই করতে দিবেননা উনি। মেয়ের এমন অন্ধকার জীবন কোনভাবেই মেনে নেওয়া সম্ভব না। অলোকার দেবীর মনে মনে চলা কথা এতো তাড়াতাড়ি বাস্তব রূপ নিবে তা কল্পনাও করেননি উনি। ভাতের থালায় হাত ধুইতে ধুইতে রব্বুল দাস বলল, মেয়েকে পাত্রপক্ষ দেখতে আসবে। ভালো কইরে তৈরি করে রাখবি ওরে।
—পাত্রপক্ষ আসার নাম শুনেই অলোকা দেবী আৎকে উঠে। তারপর কাঁপা কাঁপা গলায় বলে, ছেলে কোন গ্রামের? আমার মেয়েকে আশেপাশের গ্রামে বিয়া দিমু না।
—রব্বুল এর চোখ ছানাবড়া হয়ে যায় অলোকা দেবীর কথা শুনে। তোর মাথা ঠিক আছে তো? মেয়ে'কে বিয়ে দিবিনা তো কি বাড়িতেই ব্যবসা করবি নাকি? লোকে কি কইবো?
—আমি কি আপনারে বলছি যে মেয়েকে বাড়িতে ব্যবসায় নামামু? আমি বলছি যে আশেপাশের গ্রামে বিয়া দিমুনা। আমি চাইনা আমার জীবনের মতো আমার মেয়ের জীবন ডা নষ্ট হোক।
—তোর কি মাথা ঠিক আছে? ষোলো বছর হলে পালছি মেয়েকে। বিয়ে না দিলে ট্যাকা আসবি কোণ থেকে? বেশি কথা বইলা মাথাটা নষ্ট করে দিস না। যা বলি তাই শোন মেয়ে'কে ভালো কইরা তৈরি করে রাখবি। আমি পাত্রপক্ষক সাথে করে নিয়ে আসুম
—দরজার আড়াল থেকে অপরা সব কথায় শুনে। অদ্ভুত ব্যাপারটা হলো তার খারাপ লাগে না। ছোট থেকে মায়ের কষ্ট দেখতে দেখতে সে পাথরে পরিণত হয়েছে। রব্বুল দাস চলে যাওয়ার পর মায়ের কাছে এসে অপরা বলে। তুমি কোন চিন্তা কইরো না মা। আমাকে বেঁইচা যে ট্যাকা আসবো ওইডা দিয়া তুমি তোমার শরীর এর চিকিৎসা করিও। মেয়ের কথা শুনে অলোকা দেবীর চোখে জল চলে আসে। মেয়ের হাত শক্ত করে ধরে উনি বললেন, তোরে বেইচা আমার চিকিৎসা করান লাগবো না সোনা' মা । আমি তোকে দূরে পাঠামু। নিজের মতো করে জীবন গড়াইয়া নিবু। আশেপাশের দশ গ্রামে তোর ছায়াও যেন না পড়ে। মা তুমি পাগলের মতো কথা ক্যান কইতেছ? গ্রামে না থাকলে থাকমু কই?
—শুনেছি কলকাতা শহর অনেক বড়।তোর থাকনের জায়গা তুই ঠিক ব্যবস্থা করতে পারবি। যেই ভাবা সেই কাজ। মেয়ের হাতে কিছু টাকা দিয়ে বাড়ি থেকে চলে যেতে বলে অলোকা দেবী।
—মায়ের দিকে তাকিয়ে বলে। আমাকে দিয়ে পাঠালে বাপে তোমাক মাইরা ফেলবে । তুমি না থাকলে অনু আর রপ্পিতার কি হবে?
—তোর এত ভাবা লাগব না। আমাকে মাইরা ফালানের সাহস তোর বাপের নাই। আমি ছাড়া কামাই তোর বাপ কি দিয়া করবে?
—সেই দিন মায়ের অনুরোধে অপরা বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে স্টেশন আসে। কিন্তু ভগবান ভাগ্যে ভালো কিছুই লিখে ছিল না। তাই পথিমধ্যে রব্বুল হাতে ধরা পড়ে অপরা। সেইদিন এর পর অপরা তার মায়ের মুখ কোন দিন দেখেনি। রব্বুল দাস অপরার'কে বিশ হাজার টাকায় বিক্রি করে দেয়। অলোকা দেবীর চোখের আড়ালে তার বড় মেয়ে বিক্রি হয়ে যায়।
—যে লোকটি অপরা'কে কিনে ছিল তার বয়স হবে আনুমানিক চল্লিশোর্ধ্ব। দূর্গা মায়ের সামনে বুড়ো লোকটির সাথে বিয়ে হয় অপরার। বুড়ো লোকের নামে তার সিঁথিতে উঠে সিঁদুর। হাতে শাঁখা-পলা।
লোকটির সাথে চলে যাওয়ার আগে নিজের বাবার কাছে অপরা একটা আর্জি করে। তাকে যে বিক্রি করে দেওয়া হয়েছে এই কথা যেন তার মা'কে জানানো না হয়।
—অপরা তার সতীত্ব হারায় চল্লিশোর্ধ্বের স্বামী হারাধনের কাছে। অপরা বুঝে উঠতে পারে না। এটা তার ফুলশয্যা ছিল নাকি ছিল ধর্ষন। গভীর রাতে হারাধনের পাশে শুয়ে অপরা চিন্তা করে। এ কেমন বিয়ে! স্বামী বিয়ের পর স্ত্রী'কে দিয়ে শরীর এর ব্যবসা করায়। নিজের জন্ম দেওয়া সন্তান'কে বিক্রি করতে বুক কাঁপে না বাবার। এমন অদ্ভুত সমাজ ব্যবস্থার হাত থেকে বাঁচার উপায় কি আদৌ আছে?
ঘর আছে স্বামী সন্তান সব কিছু থাকার পরও কতিপয় গ্রামের সমাজ ব্যবস্থাই নারীকে টকার জন্য বিলিয়ে দেওয়া হয় অন্য পুরুষের বিছানায়। তাহলে এই ঘর সংসার থেকে লাভ কি? এর থেকে তো নিষিদ্ধ পল্লী ভালো।
—কিছুদিন সংসার এর পর অপরার ঠাঁই হয় নিষিদ্ধ পল্লীতেই। অপরা তখন জানতে পারে রব্বুল দাস হলো নিষিদ্ধ পল্লীর দালাল। মেয়েদের কিনে প্রথম কিছুদিন নিজে ভোগ করার পর মোটা অংকের টাকায় বিক্রি করে দেয় নিষিদ্ধ পল্লীতে। নিষিদ্ধ পল্লীতে এসে অপরার চোখে হু হু করে জল আসে। বদ্ধ এই পতিতালয় এর থেকে তখন তার নিজের গ্রামের সমাজ ব্যবস্থাই ভালো বলে মনে হয়। সব নারী সেখানে দেহ ব্যবসা করলেও তাদের স্বামী সন্তান থাকে। নিজেকে নাজিয়া খালার নিষিদ্ধ পল্লীতে মানিয়ে নিতে পারে না অপরা। কত নির্যাতন সহ্য করার পর শেষ পযন্ত নিজ হাতে সে খুন করেছিল নাজিয়া খালা'কে।
—শিক্ষিত অরুনিকার সংস্পর্শে এসে নিজের গ্রাম্য ভাষার পরিবর্তে সভ্য সমাজের ভাষা বলতে শিখে অপরা। নাজিয়া খালার খুনের পর সুযোগ বুঝে পালানোর সময় অপরা সাথে নেয় অরুনিকা'কে। কেন জানি অরুনিকার মুখের দিকে তাকালে মনে পড়ে যায় ছোট্ট বোন অনুর কথা। অপরা নিজের বোনের মতোই ভালোবাসতে শুরু করে অরুনিকা'কে।

—নিষিদ্ধ পল্লী থেকে পালিয়ে সভ্য সমাজে কিছুদিন থাকার পরই তারা আবার বন্দী হয় ভদ্র মুখোশধারী নারীদের দালাল রাজীব এর হাতে। অবশ্য রাজীব তাদের জীবনে অনেক পরিবর্তন নিয়ে এসেছিল। নিষিদ্ধ পল্লীর পতিতা থেকে তারা হয়ে উঠে সমাজের উঁচু স্তরের ধনাঢ্য ব্যক্তিদের রাতের সঙ্গী।ততদিনে অরুনিকা আর অপরা দুজনেই তাদের এই জীবন মেনে নিয়েছিল। হটাৎই অপরা মেয়েদের প্রতি কামনার টান অনুভব করে। সে উপলব্ধি করে ছেলে মেয়ে উভয়কেই বিছানায় সঙ্গী রূপে তার ভালো লাগে। বাই-সেক্সুয়াল অপরাকে রাজিব তখন পাঠাতে শুরু করে ধনাঢ্য পুরুষ এর পাশাপাশি সমকামী নারীদের কাছেও। সব কিছুকিছু ঠিকঠাক চলছিল হটাৎ করেই এক কাস্টমার এর সাথে প্রণয় সূত্রে আবদ্ধ হয়ে পড়ে অপরা। কর্ণভ'কে সে এতটা ভালোবেসে ফেলে যে নতুন করে সভ্য সমাজের বাকী আর সব নারীদের মতো ঘর সংসার করতে ইচ্ছে করে তার।  

করিডরে দাঁড়িয়ে রিতিকা বলল, আপনাকে কি বলে ধন্যবাদ দিব আমার জানা নেই। আমার অনুপস্থিতিতে আপনি নিজ দায়িত্বে অপরা'কে খুঁজে বেড় করেছেন। আমার বোন আভা'কে দেখাশোনা করেছেন। আমি সত্যি কৃতজ্ঞ। কিন্তু অপরা কর্ণভ এর হাতে কীভাবে পৌঁছালো? এটা বুঝতে পাচ্ছি না।
—রণক করিডরে গ্রিল ধরে বলল, কৃতজ্ঞ তো আমি তোমার কাছে। তুমি আমার চোখের কালো পর্দা সরিয়ে দিয়ে মানুষ যে মানুষের জন্য এটা বুঝতে শিখিয়েছ। অপরার অপহরণ হয় তোমার মৃত্যুর খবর শোনার এক সপ্তাহ পর। তোমার মৃত্যুর খবরে অপরা ভেঙে পড়ে। আর আমি, ভাইয়ের মতো দিপেশের ষড়যন্ত্রের কথা, আর তোমার মৃত্যুর খবর এই সব জানতে পেরে ভেতর থেকে ভেঙে পড়ি। অপরা উষা'কে বেশ ভালোভাবেই সামাল দিচ্ছিল। আভাও ছিল তখন সেখানে। আভা তোমার খুনের মামলা করতে থানায় যেতে চাচ্ছিল আর আমার উষার ট্রিটমেন্টের রিপোর্ট নিতে ডক্টর এর কাছে যাওয়ার প্রয়োজন ছিল। তাই অপরার কাছে উষাকে রেখে আমি আর আভা বেড়িয়ে পড়ি। ফিরে যখন আসি তখন না ছিল উষা আর না ছিল অপরা।
আর তার দু'দিন পর আমাদের বাড়ির বাগান থেকে উষার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। উষার কথা বলতেই রণক কেঁদে ওঠে। জানো অরু আমার উষা'কে ওরা নির্মমভাবে হত্যা করেছে।
—রণক'কে কাঁদতে দেখে অরুনিকা কাছে এগিয়ে গিয়ে কাঁধে হাত রেখে বলল, কাঁদবেন না। যারা উষা কে খুন করেছে তারা সবাই নিজেদের প্রাপ্য শাস্তি পাবে।
—পেছন ফিরে রণক জড়িয়ে ধরে অরুনিকা'কে। ।
—রণকের পিঠে হাত বুলিয়ে দিতে দিতে অরুনিকা ব'লে , কেউ ছাড় পাবে না। না দিপেশ, ফিরোজা আর না কর্ণভ।
—রণক নিজের চোখের জল মুছে অরুনিকা'কে জিজ্ঞেস করে। কর্ণভ এর সাথে অপরার কিসের শত্রুতা ছিল অরু?
—কোন শত্রুতাই ছিল না। কর্ণভ নিজেও একজন পতিতা-দের দালাল।
—ভালোবেসে কর্ণভ এর হাত ধরে পালিয়ে যায় অপরা। সভ্য সমাজের ভদ্র মুখোশধারী কিছু পুরুষ আর নারী আছে যারা সমাজের ভেতর থেকেই বিভিন্ন অনৈতিক কাজের সাথে জড়িত। রাজিব তাদের মধ্যেই একজন। সে সমাজের উচ্চবৃত্ত পুরুষ ও নারীদের কাছে আমাদের পাঠাতো। এখন সমকামী যৌন চাহিদা অনেক বেশি। সেইদিক থেকে অপরা ছিল রাজিব এর এই ব্যবসার জন্য রত্ন। অপার ছিল বাইসেক্সুয়াল। ওকে নারী পুরুষ উভয়ের কাছেই পাঠাতে পারত রাজিব। তাই অপরার পালিয়ে যাওয়া ছিল রাজিব এর জন্য লসের। রাজিব এর মাথায় তখন আগুন, ওর হাতের নিচ থেকে কর্ণভ কি করে অপরা'কে নিয়ে গেল।
—তখন জানা যায় রাজিব এর ভাই হলো কর্ণভ। কর্ণভ এর ব্যবসা করার নিয়ম ছিল আলাদা। সে প্রেমের জালে ফাঁসিয়ে রাজিব এর আন্ডারে থাকা মেয়েদের পালিয়ে নিয়ে যেত। তারপর তাদেরকে দিয়ে ব্যবসা করাতো। যদি সেই মেয়ে ব্যবসা করতে না চাইত তখন বিকৃত মস্তিষ্কের কর্ণভ বিভিন্নভাবে সেই মেয়েদের শারিরীক টর্চার করে মেরে ফেলত।
— অপরা যদি রাজিব এর ছোট ভাই যে কর্ণভ এই আভাস আগে পেত তাহলে পালিয়ে যাওয়ার ভুল সে করত না। রাজিব এর কাছে প্রাণের নিরাপত্তা আছে কিন্তু কর্ণভ এর কাছে প্রাণ সংশয়ের আশংকা বেশি।
—কর্ণভ এর সাথে পালিয়ে যাওয়ার পর একবার শুধু অপরার সাথে যোগাযোগ হয়েছিল। আমি যখন রাজিব আর কর্ণভ যে দুই ভাই সেই কথা বলি। তখন অপরা বলে, কর্ণভ আমাকে ভালো রেখেছে ওর পরিচয় যাইহোক না কেন। তাতে কিছু যায় আসে না।
—এরপর আর যোগাযোগ হয়নি আমাদের। আমি ভেবেছিলাম তাহলে হয়তো ভালো আছে অপরা। এরপর কয়েক বছর পর অপরা আমার বাড়িতে সাহায্য চাইতে আসে। যেদিন আপনি আমাকে হায়ার করে ছিলেন সেই-দিন। অপরা বলেছিল, কর্ণভ নিজে বিকৃত মস্তিষ্কের তো ছিলই ও যেসব কাস্টমার আনত তারাও ছিল বিকৃতি মস্তিষ্কের।রাতের পর রাত চল বিকৃত যৌন চাহিদা মেটাতে হতো অপরার। ধীরে ধীরে অপরা জানতে পারে সে যে বাড়িতে ছিল সেই বাড়িতে ওর মতো অনেক মেয়েকেই রাজিব এর আন্ডার থেকে ফুসলিয়ে নিয়ে এসে নিজের ব্যবসায় লাগিয়েছে কর্ণভ। অপরা যখন ওকে বলে, অন্য পুরুষের সাথে শুইতে হবে তাহলে তোমার কাছে বন্দী থেকে কেন এই কাজ করব। রাজিব এর আন্ডারে করব। আর তুমি যদি আমাকে ভালোবাসো তাহলে এই সব বাদ দিয়ে চলো আমরা বিয়ে করি।
—এরপর থেকেই অপরা'কে শারীরিক টর্চার করত কর্ণভ। তারপর সুযোগ বুঝে সে পালিয়ে আসে আমার কাছে। এরপরে ঘটনা তো আপনি জানেনই।
—রনক মাথা নিচু করে ব'লে , বিশ্বাস করো অরু আমি ওদের প্রটেক্ট করতে চেয়েছিলাম কিন্তু ব্যর্থ হয়েছি।
—আমি বিশ্বাস করি আপনাকে। যে নিজেই ষড়যন্ত্রের শিকার তাকে তো দোষ দেওয়া যায় না।
—রণক অরুর দিকে কিচ্ছুক্ষণ তাকিয়ে থেকে বলল, অরু তুমি এতদিন কোথায় ছিলে? ওই ভদ্রলোকটি যা বলল, তা কি সত্যি?
—অরুনিকা উত্তর দিতেই যাচ্ছিল ঠিক তখনি একটা নার্স এসে বলল, আপনাদের পেশেন্ট এর অবস্থা ভালো না। আপনারা তাড়াতাড়ি আসুন। অরুনিকা ছুটে গেল কেবিন এর দিকে। কেবিনে ঢুকতে বুকের ভেতর কেমন জানি ভয়ভয় হয় অরুনিকার। অপরার কিছু হবে না তো! রণক পেছন থেকে অরুনিকা কাঁধে হাত দেয়। অরুনিকার মনের কথা যেন রণক পড়ে ফেলেছে। তাই অভয় দিয়ে বলল, কিছু হবে না অপরার তুমি কিছু ভেবোনা অরু।
রণক এর কথায় খানিকটা ভরসা পায় অরুনিকা। কেবিন এর ভেতর ঢুকে দেখে অপরা ছটফট করেছে। অপরার হাত-পা ছোটাছুটি করায় ডাক্তার নার্স কাছে যেতে পাচ্ছে না। কিছুক্ষণ আগ অব্দি হাতের আঙুল নড়ানোর শক্তি ছিল না যার শরীরে। এখন তার হাত-পা ছোটাছুটি দেখে মনে হচ্ছে,কোথাও থেকে যেন অসীম শক্তি চলে এসেছে তার মাঝে।
—অরুনিকা'কে দেখেই অপরা শান্ত হয়ে যায়। অরুনিকা কাছে যেতেই শক্ত করে জাপটে ধরে ওকে। আমাকে নিতে এসেছে অরু। ওরা আমাকে নিয়ে যাবে। আমাকে ধরে রাখ তুই।আমি যাবো না ওদের সাথে, তোর কাছে থাকব।
—কেউ আসেনি অপরা। তুই শান্ত হো আমি আছি তো পাশে। এইতো ধরে রেখেছি তোকে, তুই আমার কাছেই থাকবি।
—না ওরা নিতে এসেছে। ওই দেখ ওরা তাকিয়ে আছে আমার দিকে। এগিয়ে আসছে আমার দিকে। আমাকে ধরে রাখ অরু। ওরা আসছে।
—অরুনিকা ডাক্তার এর দিকে তাকিয়ে বলল, কিছু করুন ডক্টর, কি হয়েছে আমার অপরার?
—ডাক্তার নার্স কে ঘুমের ইনজেকশন তৈরি করতে বলে।
— জাপটে ধরে থেকেই অপরা ফিসফিসিয়ে বলল, নাজিয়া খালা'কে আমি খুন করেছি অরু। আমার করা কর্মের ফল তোকে ভোগ করতে হয়েছে। আমাকে ক্ষমা করে দিস বোনু। ওরা নিতে এসেছে আর বাঁচার কোন উপায় নেই। ওরা নিতে আসছে বলতে বলতেই অপরা চুপ হয়ে যায়।
—ভালো কর্ম করেছিস বনু৷ নাজিয়া খালার প্রাপ্য তুই তাকে দিয়েছিস। অপরার কোন সাড়াশব্দ নেই। অপরার সারাশব্দ না পেয়ে ভয়ে ভয়ে বলল, এই অপরা কথা বল বোনু। কিন্তু অপরা কথা বলে না। অপরাকে জড়িয়ে ধরে চিৎকার করে অরুনিকা বলে, এই অপরা কথা বল। কথা বল বোনু। দেখ কেউ আসনি এখানে। প্রাণহীন অপরার দেহ বুকের ভেতর জড়িয়ে ধরে চিৎকার করে কাঁদে অরুনিকা।

অপরার মৃত দেহ বুকে জড়িয়ে অঝোরে কাঁদে অরুনিকা। রণক এসে অরুনিকা'কে সামলানোর চেষ্টা করে। কাঁদতে কাঁদতে অরুনিকা বলে, রণক আপনিই ওকে বলুন না কথা বলতে। দেখুন না কথা বলছে না ও। এই অপরা কথা বল বোনু আমার। অরুনিকা দৌড়ে ডক্টর এর কাছে গিয়ে বলে, দেখুন না আমার অপরার কি হলো! কথা কেন বলছে না।
—ডাক্টর বলে, সরি, শি ইজ নো মোর।
ডক্টর এর নো মোর বলা শুনেই অরুনিকা জ্ঞান হারিয়ে পড়ে যায়।
—ডক্টর মৃণাল এর সাথে রণক এর কথা-কাটাকাটি চলতে চলতে এক পর্যায়ে হাতাহাতি শুরু হয়। অপরার বডি নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করার জন্য অ্যাম্বুলেন্স এর ড্রাইভার এর সাথে কথা বলছিল রণক। প্রথম প্রথম রাজি না হলেও পড়ে বেশি টাকার লোভ দেখালে রাজি হয়ে যায়। রণক কেবিনে গিয়ে দেখে অপরার মৃত দেহ নেই। দৌড়ে রিসিপশনে এসে জিজ্ঞেস করায় জানতে পারে। অপরার মৃত্যুর পরপরই ক্লিনিকের নার্স অপরার মৃত দেহ স্ট্রেচারে নিয়ে ক্লিনিক এর বাইরে রেখে এসেছে।
যে দুই নার্স এই কাজ করছে। তাদের কাছে জিজ্ঞেস করলে তারা ডক্টর মৃণালের পারমিশন দিয়েছে বলে। আর এটা নিয়ে ডক্টর মৃণাল এর কাছে গিয়ে বললে। মৃণাল না স্বীকার করে। কিন্তু রণক বিশ্বাস করে না তাই কথা বলতে বলতে হাতাহাতি শুরু হয় তাদের মাঝে। রণক এর চিল্লাপাল্লা করা দেখে ডক্টর অদিতি এগিয়ে আসে।
—থামুন থামুন কি করেছেন এই সব আপনারা।
—উচ্চ স্বরে ডক্টর অদিতি বললেন,দেখুন মিস্টার রণক; এটা ক্লিনিক। আপনার বিহেভিয়ার সংযত করুন। আপনার চেঁচামেচির জন্য অন্য পেশেন্টদের সমস্যা হচ্ছে।
—সরি ডক্টর, কিন্তু আপনাদের ক্লিনিক এর স্টাফ এই ডক্টর মৃণাল এর পারমিশনে একজন মৃত ব্যক্তির বডি নিয়ে কীভাবে এত জঘন্য দুর্ব্যবহার করতে পারে! মেয়েটির মৃত্যুর আধঘন্টাও পার হয়নি, ওরা স্ট্রেচারে বডি নিয়ে ক্লিনিক এর বাইরে রেখে এসেছে।
—ডক্টর মৃণাল আর স্টাফ এর বিহেভিয়ার এর জন্য আমি দুঃখিত। কিন্তু আপনারও ব্যাপারটা বুঝতে হবে। একজন ব্রোথ এর বডি এই ভাবে ক্লিনিকে বেশিক্ষণ রাখতে পারিনা আমরা। আমাদের ক্লিনিক এর একটা গুড ইমেজ আছে। আপনি নিজ ক্ষমতা আর মিডিয়া'কে ব্যবহার করে ক্লিনিকে ভর্তি করিয়েছিলেন। আমরা যথাযথ চিকিৎসাও করেছি তার।
—একটা ব্রোথ কে ওপেনে ক্লিনিকে এডমিট করে নেওয়ার জন্য এমনিতেই কিছু পেশেন্ট এর ফ্যামেলি মেম্বাররা কমপ্লিন করেছিল। আর এখন মৃত্যুর পর ক্লিনিকে বেশিক্ষন রাখলে বাকী পেশেন্ট এর ফ্যামেলি মেম্বারাও কমপ্লিন করবে। আমাদের ক্লিনিক এর রেপুটেশন এর ব্যাপার।
—ডক্টর অদিতির কথা শুনে রণকের রাগ আরও বেড়ে যায়। ডক্টর অদিতি কথার পাল্টা উত্তর দিতেই নিয়েছে ঠিক তখনি পেছন থেকে অরুনিকা ব'লে উঠে।
— পতিতা-দের ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট দিয়ে কারি কারি টাকা নেওয়ার সময় ক্লিনিক এর গুড ইমেজ এর কথা মনে পড়ে না আপনার? তখন কি ক্লিনিক এর রেপুটেশন খারাপ হয় না? যখন একজন পতিতা সরকারি হসপিটালে না গিয়ে আপনার গুড ইমেজ ক্লিনিকে যোনি চিকিৎসা করাতে এসে, পতিতাবৃত্তি করার উপার্জিত টাকা আপনাদের হাতে দেয়। তখন এই রেপুটেশন এর কথা আপনাদের মনে পড়ে না?
—অরুনিকার কথায় ডক্টর অদিতির বেশ রাগ হয়। উনি বললেন, নান অফ ইউ উইল সিমপ্যাথি বাই সিনক্রিয়েট হেয়ার। সো গেট আউট অফ হেয়ার ইউ হোর।
—সিমপ্যাথির কথা শুনে অরুনিকা জবাবে বলল,আমাদের সমবেদনা প্রয়োজন পড়ে না।আমরা সমবেদনা দেখায় আপনাদের ঘরের অবহেলিত পুরুষদের। যারা আপনাদের থেকে মিনিমাম সুখ পায় না তাদেরকে। আবার আমরা আপনাদেরকে সমবেদনা শুধু দেখাই না। সমাজের ঘরে ঘরে আপনাদের মতো নারীদের রক্ষা করি। আপনাদের ঘরে থাকা কিছু বিকৃত মস্তিষ্কের হিংস্র পুরুষদের থেকে। আমরা যদি না থাকতাম তাহলে সমাজ কবেই রসাতলে যেত। পুরুষ সমাজের রাতের হিংস্রতা শিকার হয় পতিতারা।
—শাট আপ ইউ হোর। জাস্ট গেট আউট ফরম হেয়ার।
—ওহ শাট আপ ইউ মাস্কেড ইনহিউম্যানস অফ পলিট সোসাইটি। ইয়েস, আই এম প্রস্টেটিউট বাট নট এন ইনহিউম্যান লাইক ইউ।
এই তো ঘন্টা দুই আগেই, যখন আপনি পতিতার চিকিৎসার বিনিময়ে টাকা পাচ্ছিলেন। তখন এই পতিতার চিকিৎসা করতে নিয়ে, মহৎপ্রাণ মানুষ এর মতো নার্স দু'টোকে রুগীর সেবা করার শিক্ষা দিলেন
নাও হোয়েন দ্যা প্রস্টেটিউট ডেড। দ্যিয়ার উইল বি নো মোর ইনকাম ফরম ডেড বডিস.দ্যেন ইউ আর নোবেল পারসন গিভিং এ্যা স্পিচ এ্যাবাউট দ্যা ক্লিনিক রেপুটেশন। ডিজগাস্টেড বাই ইউর এন্ড ইউর সোসাইটি বিহেভিয়ার।
—অরুনিকা রণক এর দিকে তাকিয়ে বলল। এখানে আর সময় নষ্ট করবেন না। চলুন আমরা যাই অপরা'কে নিয়ে।
অরুনিকার ক্লিনিক থেকে বেড়িয়ে যাওয়ার পথের দিকে উপস্থিত ডক্টর, নার্স আর পেশেন্ট এর ফ্যামেলি মেম্বাররা তাকিয়ে থাকে। হয়তো সবার মনই অরুনিকার বলা কথা যুক্তিসঙ্গত মনে হয়েছে। কিন্তু মুখে কেউ প্রকাশ করে না। কারণ একটাই সমাজের নিয়মকানুন।
—রণক আর ড্রাইভার অপরার দেহ অ্যাম্বুলেন্সে তুলে। অরুনিকা অপরার দেহের পাশে বসে তাকিয়ে আছে অপরার মুখের দিকে।ওর চোখ দিয়ে অঝোরে ঝরে পড়ছে জল। এই পৃথিবীতে আভা আর অপরাই ছিল অরুনিকার কাছের মানুষ। কিন্তু আজ অপরা আর নেই। অরুনিকা'কে একা করে চলে গেল।
—গন্তব্যে ছিল শ্মশান। সেখানে পৌঁছার পর পুরোহিত এর কথা শুনে অরুনিকার পায়ের নিচের মাটি সরে যায়। আকাশ ভেঙে মাথায় পড়ে।
—রণক পুরোহিত কে বোঝানোর চেষ্টা করে যাচ্ছে।
—পুরোহিত কোন ভাবেই অপরার দেহ শ্মশান ঘাটের ভেতর ঢোকাবে না।
—দেখ বাবা আমাদের হিন্দু সম্প্রদায় এর কিছু মাপকাঠি রয়েছে। একটা পতিতার মৃত দেহ কোনভাবেই শ্মশান দাহ্য করা যাবে না। রণক'কে নিয়ম বোঝাতে পুরোহিত মশাই উদাহরণ দিয়ে বলল।
মৃত পুরুষ বা বিধবা মহিলা হলে তাকে সাদা কাপড় পড়াতে হয় আর যদি মহিলা হয় যার স্বামী এখনও জীবিত থাকে তাহলে তাকে লাল কাপড় পড়িয়ে চিতায় চড়ানো হয়। তুমি বলো তোমার নিয়ে আসা ওই মহিলা বিধবা নাকি সধবা? শেষকৃত্য যার করবে তার এই কূলে কেউ আছে? পতিতা-দের না থাকে এই কূল না থাকে ওই কূল। শ্মশানে পতিতা দেহ চিতায় তোলা ঘোর পাপ।
—এখান থেকে ওই দেহ নিয়ে যাও তাড়াতাড়ি। অপবিত্র নাড়ীর ছোঁয়ায় শ্মশান অপবিত্র হয়ে যাবে। ।
—অরুনিকা রাগ সামলাতে না পেরে চেঁচিয়ে বলল, অপবিত্র নারীর এলাকার মাটি ছাড়া মা-দূর্গার সৃষ্টি হয় না। সেখানে এই পুরোহিত এসেছে শ্মশানের অপবিত্র হওয়ার গল্প নিয়ে।
—অরুনিকার কাছে আসা দেখে। তিন কদম পেছনে গিয়ে গঙ্গাজল ছিটিয়ে রাম নাম যপতে যপতে যপতে চলে যায় পুরোহিত।
—পেছন থেকে ড্রাইভার বলে। এটা নতুন কিছু না দাদা বাবু। পতিতার মৃত্যুর পর তাকে কাফন পড়ানো হয়না, জানাযা দেওয়া হয়না। কবরস্থানে তাদের জায়গা দেওয়া হয়না। তাদের জন্যে কোনো মিলাদ দেওয়া হয়না। কোনো শ্মশানে তাদের দগ্ধো করা হয়না। কোনো শ্রাদ্ধ দেওয়া হয়না। মোট কথা পতিতা-দের মৃত্যুর পর ওদের দেহ কোথাও জায়গা পায়না। আপনারা সময় নষ্ট করছেন। এর থেকে এক কাজ করুন বাকী পতিতা-দের লাশ যা করা হয় তাই করুন। বস্তা বন্দী করে ফেলে দিন কোন জঙ্গলে অথবা তা না করলে জঙ্গলে গিয়ে পুঁতে ফেলুন। আর তাও যদি না হয় নদীতে ভাসিয়ে দেন। এই সবই সমাজের পতিতা-দের মৃত্যুর পর পতিতারা করে থাকে।
—অরুনিকা চিৎকার দিয়ে কাঁদতে কাঁদতে বলল, আমার অপরার সাথে এমন কিছুই হবে না। অপরার শেষকৃত্য হবেই হবে। রণক এর কাছে দৌড়ে গিয়ে তার দুই বাহু শক্ত করে ধরে বলল, গঙ্গার তীরের এমন কোন জায়গায় নিয়ে চলেন যেখানে জনমানবশূন্য। খোলা জায়গা প্রকৃতি তার রূপ চারিদিকে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রেখেছে। আমার অপরার শেষকৃত্য আমি নিজে করবো।
— ডক্টর মৃণাল পেছন থেকে বললেন, আমার জানাশোনা এমন জায়গা আছে। ডক্টর মৃণাল'কে দেখে অবাক হলো অরুনিকা। আপনি এখানে!
—হ্যা, আমি। আমি অমানুষ না। আমি ওই নার্সদের পারমিশন দেইনি বডি বাইরে বেড় করার। আমার নামের ব্যবহার করে ডক্টর অদিতি এটা করিয়েছে।
—অরুনিকা কথা না বাড়িয়ে বলল, কোথায় সে জায়গা আছে। নিয়ে চলুন সেখানে।
অ্যাম্বুলেন্সে রণক আর অরুনিকা অপরার দেহের সাথে গন্তব্যে পৌঁছাল। পেছনে নিজের গাড়িতে আসলে ডক্টর মৃণাল।
—রণক আর ডক্টর মৃণাল হাতে হাতে চিতার যাবতীয় সরঞ্জামের ব্যবস্থা করল। অ্যম্বুলেন্স এর ড্রাইভার চিতা সাজালো। গঙ্গার জলে অপরার দেহ স্নান করিয়ে চিতায় তুলে দেয় রণক আর অরুনিকা।
—অপরার দেহ যখন চিতার আগুনে পুড়ছিলো তখন অরুনিকা বলল। হায় ভগবান তুমি কেন এমন পতিতাদের জীবনের শেষ পরিণতি দিয়েছ? পতিতা-দের জীবিত অবস্থার কষ্টের থেকে মৃত্যুর পরের কষ্টই বেশি। এই সমাজ পতিতা-দের শেষকৃত্যেও করতে দেয় না। মৃত্যুর পরও আমাদের নিয়ে এই লাঞ্ছনা কেন ভগবান?

To be continued.....


গল্প: নিষিদ্ধ নারী (প্রেম কাহিনী)

পার্ট:-০৯
লেখনীতে: সামিনা সামি

Post a Comment

0 Comments