Header Ads Widget

Responsive Advertisement

নিষিদ্ধ নারী - পার্ট ৬

 বাগানে হাঁটাহাঁটি করছে রিতিকা। সন্ধ্যা নেমে এসেছে। কিন্তু তারপরও বাড়ির ভেতরে যেতে ইচ্ছে করছে না। মনটা ভিষণ খারাপ হয়ে আছে। সকাল থেকে কতবারই না আভার নাম্বারে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেছে। কিন্তু নাম্বার বন্ধ বলছে। আভার সাথে যোগাযোগ করাটা জরুরি।

—আপনি বিকেল থেকে বাইরে আছেন এটা আপনার শরীর এর জন্য ক্ষতিকর।
—তপনের কন্ঠে চমকে উঠে রিতিকা।
—ভয় পেলেন নাকি!
—না, হটাৎ করেই পেছন থেকে এসে কথা বলেছেন তো তাই একটু আর কি।
—আপনি সেই বিকেল থেকে বাইরে আছেন। আপনার শরীর এর উপর খারাপ প্রভাব পড়বে। চলুন ভেতরে।সন্ধ্যার ঔষধ টা খেতে হবে। কথা গুলো বলেই তপন বাড়ির দিকে মুখ ফিরে যেতে নিয়েছে তখন পেছন থেকে রিতিকা বলে উঠে।



—আমি চলে যেতে চাই। আমার অনেক কাজ পড়ে আছে। আপনি বলছেন আমি কোমায় ছয়মাস ছিলাম। এই ছয়মাসে আমার ছোট বোন এর কি হয়েছে! কোথায় এখন আছে। আমাকে খুঁজতে কলকাতায় এসেছে কি না। এসে থাকলে, বিপদেই পড়েছে কি না! এই সব টেনশন মাথায় রেখে আমি এখানে রেস্ট করতে পারিনা।
—আপনি বাড়িতে সব কিছু খুলে বলুন। আমি এখানে বউ এর অভিনয় করে থাকতে পারব না। আপনি আমাকে কোনো হোমে রাখতে পারতেন। তা না করে নিজের বাড়িতে এনে বউ পরিচয়ে রেখেছেন। কতদিন চলবে এই সব নাটক! আমার দ্বারা নাটক সম্ভব না। যারাই এই সব নাটক করতে চায় তাদের ভেতর গন্ডগোল থাকে। আমি নিজেকে নতুন করে ঝামেলায় ফেলতে চাই না।

—ওর কথা গুলো শুনে তপন ফিরে তাকায় রিতিকার দিকে। কিছুক্ষণ ওর মুখের দিকে তাকিয়ে থেকে, ম্লান হেসে বলল। আপনি যেতে চান! বেশ আজকের রাতটা অপেক্ষা করুন। আগামীকাল সকালে আপনি যেখানে যেতে চান, আমি পৌঁছে দিয়ে আসবো। আমার পরিবার সামনে আপনাকে নাটক করতে হবে না। তাদের কখন সত্যটা খুলে বলতে হবে সেটা আমি ঠিক করবো। কথা গুলো এক নিশ্বাসে বলেই হনহনিয়ে বাড়ির ভেতর ঢুকে যায় তপন।

—তপন এর যাওয়ার দিকে কিছুক্ষণ তাকিয়ে থাকে রিতিকা। হটাৎ করেই নাটক করার কথা বলাটা তার উচিত হইনি বুঝতে পারে। কি অবস্থায় পড়েছিল নদীর ধারে, মনে পড়ে যায় রিতিকার। জানতে ইচ্ছে করে কি কি ঘটেছে এই ছয়মাসে। অপরিচিত এই মানুষটি তাকে সযত্নে রেখেছে জানা স্বত্বেও তার কিছুই করার নেই। কারণ এই বাড়ি তার জন্য না। তাই কষ্ট দিয়ে হলেও এই বাড়ি থেকে যেতে হবে রিতিকার। নিজের বোনের খোঁজ না নিয়ে তো আর এই ভাবে কারো বাড়িতে থাকাও যায় না। তারা যখন জানতে পারবে সে পতিতা। তখন আর এই ভালোবাসা আদর-যত্ন থাকবে না।

*****
দিলাত্রী সেন স্বামীর করুন অবস্থা দেখে মুষড়ে পড়েছেন। বাড়ির পুরোনো কাজের লোক বিমলা দাঁড়িয়ে।
বুঝলি বিমলা কেমন সন্তান জন্ম দিয়েছি ভেবে কূলকিনারা পাই না। যার জন্য আজ আমার স্বামী কারাবাসে। দুশ্চরিত্রা মেয়ের খুনের দায়ে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বোনের দেখাদেখি তে ছেলেটাও হয়েছে বোনের মত নির্লজ্জ। নিজের বোনের কুকীর্তিতে যেন এতো টুকও লজ্জার ছাপ নেই মুখে। বংশের মুখে চুনকালি মেখে একটার তো নরকে স্থান হলো। আর ছেলেটা যে বাপের পাশে দাঁড়িয়ে তালে তাল মিলিয়ে চলবে। তা না করে, নরকে যাওয়ার পথ সন্ধানে ব্যস্ত।
—বাড়ির অন্য এক কাজের লোক এসে ঘরের দরজায় দাঁড়িয়ে চাপা কন্ঠে বলল। দিদি ঠাকরুন দিপেশ এসেছে।

—কোথায় আছে এখন?
—গ্যারেজের ভেতর বসে আছে।
—ভেতরে পাঠিয়ে দে। আর বাইরের কেউ যেন এখন ভেতরে আসতে না পারে। সে দিকে খেয়াল রাখেক তুই।
—দিলাত্রী সেন আলমারি থেকে একটা পেন ড্রাইভ বের করে। বেড সাইড টেবিলে রাখে। হাতে পানের বাটা নিয়ে পা তুলে বিছানায় বসে পান বানায় আর বিমলা কে বলে বাইরে লোকজন কে সজাগ করে দিয়ে আয়।
—দিপেশ ঘরের ভেতর ভয়ে ভয়ে পা রাখে। ভূমেন্দ্র সেন কে দেখে দিপেশ বিন্দু মাত্র ভয় পায় না। কিন্তু দিলাত্রী সেন কে দেখে ভয়ে থরথর করে কাঁপে সে। ইতিহাস সাক্ষী আছে। পুরুষ মানুষের পেছনে ঘরের ভেতর বসে থেকে রাজপাট চালায় নারী। রাজপাট চালানো নারীরা হয় ছদ্মবেশী। দিলাত্রী সেনও তেমনই ছদ্মবেশী এক নারী। এমন মহিলাকে দেখে ভয় পাওয়ারই কথা।
—কাঁপা কাঁপা কন্ঠে দিপেশ বলল। বড় মা আমাকে ডেকেছেন?
—খুন করে কেমন লাগলো!
—এমন প্রশ্নে ভয়ে দিপেশের বুক শুকিয়ে আসে। ঘনঘন ঢোক গিলে গলা ভিজিয়ে নেয়। দিলাত্রী সেন আবার খেলায় নেমেছে। এবার আর সহজ হবে না অক্ষরার আর তার পক্ষে এই বাড়ির সর্বনাশ করা।

—কিরে বললি না যে কিছু। উষার রক্ত দেখে কেমন লাগলো! সুখ অনুভব হলো নাকি আগুন আরও বেশি করে জ্বলে উঠলো?

—আপনি কি বলছেন!আমি কিছু বুঝতেছি না বড় মা। বড় বাবুর হুকুমেই উষার খুন করেছি আমি। আপনাদের জন্য আমি জীবন দিতে পারি। সামান্য খুন করা কি আর এমন।

—এটাই তো মিথ্যা কথা বললি।জীবন দিবি না, তুই জীবন নিতে সব কিছুই করতে পারিস। কি ঠিক বলিনি আমি?

—দিপেশ কি বলবে ভেবে পায়না। বড় মা আপনার কোথাও ভুল হচ্ছে। আমি এই বাড়ির গোলাম। আপনাদের জন্য জীবন দেওয়া আর আপনাদের হুকুমে অন্যের জীবন কেড়ে নেওয়ায় আমার কাজ।
—দিলাত্রী সেন মুখে পান দিয়ে বিছানা থেকে নেমে এসেই দিপেশ এর মাথার চুল খামচে ধরে। সেদিন এর পুচকে হারামজাদা আজ বেশ গুঁছিয়ে কথা বলতে শিখেছিস। তোর কি মনে হয়, আমি কোন খবর রাখিনা তোর ব্যাপারে। তুই কখন কি করছিস না করছিস সব আমি জানি। এতোদিন উষার পেছনে লেগেছিলি তাই মেনে নিয়েছি। পতিতার থলের দুশ্চরিত্রা মেয়ের প্রয়োজন ছিল না আমার কোনো কালেই। তাই এতোদিন কিছুই বলিনি। কিন্তু এখন তোর নজর আমার ছেলের দিকে।

—দিপেশ চোখ ছানাবড়া করে তাকায় দিলাত্রী সেন এর দিকে। এই মাত্র এ-কি কথা তার কানে আসলো। এতোদিন শুধু এই কথা তাকেই শুনতে হতো। কারণ দিপেশ এর মা ছিল একজন রক্ষিতা। তাই তাকে বরাবরই বলা হতো পতিতার থলের সন্তান।
—কিন্তু উষা তো বড় মা এর নিজের সন্তান। তাহলে কেন বলল, পতিতার থলের সন্তান!
—দিপেশ ভাবতে পারে না। চোখ ছানাবড়া করে তাকিয়ে থাকে দিলাত্রী সেন এর দিকে। বুকে সাহস নিয়ে জিজ্ঞেস করে। এটা কি বলছেন বড় মা? উষা আপনার মেয়ে। আপনি তাকে কেন পতিতার!

—দিপেশ এর কথা বলা শেষ না হতেই। উচ্চ স্বরে হেসে উঠে দিলাত্রী সেন। কে বলেছে তোকে উষা আমার মেয়ে! উষা ভূমেন্দ্রের রক্ষিতার মেয়ে। কথাটা বলেই আরও উচ্চ শব্দে খিলখিল করে হাসে। হাসিতে যেন পুরোঘর কেঁপে ওঠে। দিপেশের কান গরম হয়ে উঠে। বুকের ভেতর হটাৎ করেই চিনচিনে ব্যথা শুরু হয় তার।

— কান্না জড়িত ভাঙা ভাঙা কন্ঠে বলে, উষা আমার ছোট বোন!

—দিলাত্রী সেন এর হাসির আওয়াজ যেন আরও বেড়েই চলে। হাসির আওয়াজ পেয়ে বিমলা ঘরের ভেতর আসে।

—এই বিমলা শোন শোন দিপেশ কি জিজ্ঞেস করছে। উষা ওর ছোট বোন কি না।
—বিমলা কথাটা শুনতেই হেসে উঠে।
—দিলাত্রী সেন হাসতে হাসতে বলে, কিরে বিমলা তুই না বলেছিলি দিপেশ অনেক চতুর নাকি হয়ে উঠেছে। এটাই বুঝি ওর চতুরতা। নিজের বোন কে খুন করে আজ এসে জিজ্ঞেস করছে৷ ওটা ওর বোন ছিল কি না!
—দিপেশ চিৎকার করে উঠে। না এটা হতে পারে না। উষা আমার বোন হতেই পারে না। আমার মা মৃত মেয়ে সন্তান জন্ম দিয়েছিল।

—বিমলা তুই এই গর্ধব এর প্রশ্নের উত্তর দে। আমার দ্বারা অসম্ভব এর বাচ্চা সুলভ প্রশ্নের উত্তর দেওয়া।

—বিমলা দিপেশ এর কাছে এগিয়ে এসে বলে। আসলে হয়েছিল কি দিপেশ তোর মা মৃত সন্তান জন্ম দেয়নি। মৃত সন্তানতো জন্ম দিয়েছিল দিদি ঠাকরুন। তোর মায়ের প্রতি দাদা ঠাকুরের একটু বেশি ভালোবাসা উথলে পড়ছিল। মেয়ে সন্তান এর আশায় দিনকে দিন এই ভালোবাসা বাড়তেছিল। দাদা ঠাকুর তো রক্ষিতা ঘরে তোলার পুরো ব্যবস্থায় করে ফেলেছিল। এখন তুই বল, একটা রক্ষিতা কখনো ঘরের বউ এর জায়গা নিতে পারে! এটা হতে দেওয়া যায়?
—তাই ঝোপ বুঝে কোপ টা মেরেছিলাম আমি। দিদি ঠাকরুন এর মৃত্য মেয়ে কে তোর মায়ের কোলে দিয়ে আর তোর মায়ের জীবিত মেয়ে সন্তান কে দিদি ঠাকরুন কোলে দিয়ে দেই। কেল্লাফতে, তোর মা আবার নিজের জায়গায় ফেরত চলে যায়। আর তোর মায়ের মেয়ে দিদি ঠাকরুন এর মেয়ের পরিচয়ে বড় হয়ে উঠে।


আভা এয়ারপোর্টে ইমিগ্রেশন চেকিং এর পর আরও একটি চেকিং এর জন্য বসে আছে। হটাৎ সে একটা পরিচিত মুখ দেখল। মুখটা দেখতেই তার চোখের সামনে ভেসে ওঠে অতিতের দিন গুলি। লোকটির কাছে যাওয়ার জন্য যেতে নিয়েছে। কিন্তু চেকিং চলাকালীন সে কোথাও যেতে পারবে না দেখে সিকিউরিটির লোকেরা তাকে আটকায়। সে জোরে জোরে চিৎকার দিয়ে ডাকে অমল-দা। কিন্তু আভার ডাক তার কাছ অব্দি পৌঁছায় না।
****
আজকাল দি-ভাই কেমন যেন হয়ে গেছে বুঝলে মা। অমল দা আসলে আমাকে ঘরে ঢুকতেই দেয়না। আমিও পড়তে চাই অমল-দার কাছে। দি-ভাই একা একা পড়ে শুধু।
—তোর দি-ভাই বড়ো ক্লাসে পড়ে, তাই পড়া বেশি। তুই গেলে পড়াতে সমস্যা হয় তাই হয়তো যেতে দেয় না। তুই তোর বাবার কাছে পড়লেই পারিস।
—না না না, আমি অমল-দা এর কাছেই পড়বো। বাবার কাছে পড়ব না।
—কেন বুঝতেছিস না অরুনিকার পড়ার চাপ বেশি। তোকে সাথে দিলে, পড়াতে মনোযোগ দিতে পারবে না। তার বদলে না হয় আমি তোর বাবাকে বলে তোর জন্য আলাদা করে একটা মাস্টার দেওয়ার ব্যবস্থা করে দিবনি।
—আভা আর কিছুই বলে না। তার মন কি যেন বলতে চেয়েও থেমে যায়।
—সেইদিন লিপা-দি বাসায় এসে বলল, আভা তোর বোন যখন মাস্টার এর কাছে পড়তে বসবে তুইও বসিস সাথে। বসতে না দিলে মায়ের কাছে গিয়ে বলবি। তারপর লিপা-দি বিড়বিড় করে বলল, এখন যদি পেছন টান না দেওয়া হয়। তাহলে আমার মতো কপাল হবে। বুড়ো মাস্টার এর সাথে প্রেম করে আজ আমি কলঙ্কিত।
—কিছু বললে লিপা-দি?
—না কিছুই বলিনি। থাক আমি আজ উঠি, মনে হয়না তোর বোনের পড়া তাড়াতাড়ি শেষ হবে। অন্য একদিন আসব।
—সেইদিন এর লিপা-দি কথা গুলো মা কে বলতে ইচ্ছে করলেও পরে আর বলা হইনি।
*****
কতদিন পর পরিচিত মুখ দেখল আভা। গ্রাম থেকে বেড়িয়ে আসার বছর আট হচ্ছে। এর ভেতর পরিচিত কোন মুখ দেখেনি সে। দি-ভাই বেঁচে নেই কথাটা জানতে পারলে নিশ্চয়ই অমল-দা কষ্ট পাবে। ছোট থাকতে না বুঝলেও এখন আভা বুঝে অমল-দা আর অরুনিকা দি-ভাইয়ের প্রেম ছিল। কিন্তু দি-ভাই রাতের অন্ধকারে কার সাথে বেড়িয়ে গেছিল সে কথা জানে না আজও সে। অতীত এর কথা, পেছনে ফেলে রেখে চোখে জল নিয়ে চীনে ফিরে যায় আভা।
****
দিলাত্রী সেন ঘরের ভেতর পায়চারি করছে। দিপেশ মাটিতে হাঁটু গেড়ে বসে আছে পাথরের মূর্তির মত। নিজের বোনকে সে খুন করেছে। কতটা বর্বরতার পরিচয় দিয়েছে খুন করার সময়। সে কথা মনে পড়তেই চিৎকার দিয়ে উঠে দিপেশ । না না না এটা হতে পারে না। উষা আমার বোন হতেই পারে না। উষা রণক এর বোন আমি প্রতিশোধ নিয়ে ঠিক করেছি।
—দিপেশের দিকে পেন ড্রাইভ হাতে নিয়ে এগিয়ে গিয়ে দিলাত্রী সেন বলল। পুলিশের কাছে গিয়ে স্যারেন্ডার কর। আমি চাই উনি যেন সসম্মানে মাথা উঁচু করে বাড়ি ফিরে আসে। বেশি চালাকি করলে অক্ষরার মতো তোর ফিরোজাও উপরে চলে যাবে।
—ফিরোজার নাম শুনতেই মাথা উপর দিকে তুলে বলল, আপনি কি করে জানেন ও অক্ষরা না ফিরোজা। ফিরোজা কোথায় বড় মা! ফিরোজার কিছু করবেন না বড় মা। আমি আজকেই গিয়ে স্যারেন্ডার করবো কিন্তু তার আগে আমাকে সব সত্য বলেন বড় মা। আমি কিছুই বুঝে উঠতে পাচ্ছি না। আমি অতীতের সব কিছুই জানতে চাই।
—দিলাত্রী সেন বলে, আমার স্বামী কখন কার সাথে আপোষে বা জোর পূবক বিছানায় যায়। আমি সবার সম্পর্কে জানি। নিজের হাতে খুন করা মানুষগুলোকে তো আর ভোলা যায় না তাইনা দিপেশ।
—দিপেশ ভাবতো ভূমেন্দ্র সেন অক্ষরা কে ধর্ষণ করে খুন করেছে। ঘটনারা একেবারেই গোপন ছিল। ভূমেন্দ্র সেন এর কথা অনুসারেই নিষিদ্ধ পল্লী থেকে ফিরোজা কে নিয়ে এসে অক্ষরা পরিচয়ে এই বাড়িতে রেখেছিল। দিপেশ ভাবতে পারেনা। মাথাটা ঝিমঝিম করছে। এতোদিনের জানা সব ঘটনায় যেন একে একে পরিবর্তন হচ্ছে। দিলাত্রী সেন এর দিকে তাকিয়ে বলে, আমাকে অতীতের সব কিছুই খুলে বলেন বড় মা। আমি আর নিতে পাচ্ছি না।
—অতীত জেনে তোর কাজ নেই। আমি সব ব্যবস্থা করেই রেখেছি। এই জীবনে আর জেলের বাইরে আসতে পারবি না তুই। পেনড্রাইভ নষ্ট করার চিন্তাও করবি না। আমার কাছে আরও অনেক কপি আছে। উষার মৃত্যুর ফুল অফ এইচডি ভিডিও আছে এই পেনড্রাইভে, বলেই হা হা করে হেসে উঠে দিলাত্রী সেন।
*****
—বাড়ির বাইরে রণক এসে চিৎকার চেঁচামেচি শুরু করেছে। তাকে বাড়ির ভেতরে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না। পাহারাদাররা এমন ভাব করছে মনে হচ্ছে তারা কেউ রণক কে চিনেই না।
—বাইরের চেঁচামেচির আওয়াজে দিলাত্রী সেন বাইরে চলে আসে। রণক এর দিকে তাকিয়ে বলল, চেঁচামেচি করছো কেন রণক! তুমি কি ভুলে গেছ এই বাড়ির কিছু নিয়ম-কানুন রয়েছে।
—কিসের নিয়ম মা? যে বাড়িতে নিজের মা-বাবা মেয়েকে মারার হুকুম দেয়। সেই বাড়ির নিয়মকানুন বলে কিছুই থাকার কথা না। আমাকে বাড়ির ভেতরে কেন ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না। আমি এটা জানতে চাই। বাড়ির ভেতরে কে আছে?
—দিলাত্রী সেন কিছু বলতে নিয়েছে। তার কথা না শুনেই পাহারাদারদের ধাক্কা দিয়ে ভেতরে ঢুকে রণক। বাড়িতে ঢুকেই চারিদিকে খুঁজতে শুরু করে। তার ধারনা এই বাড়িতেই দিপেশ আছে। কিছুক্ষণের মধ্যেই দিপেশ বেড়িয়ে আসে দিলাত্রী সেন এর ঘর থেকে। দিপেশকে দেখে নিজেকে আর কন্ট্রোল করতে পারেনা রণক। এলোপাতাড়ি কিল-ঘুষি মারতে মারতে চিৎকার করে বলে। কেন উষাকে খুন করলি। বোন আমার কি ক্ষতি করেছিল তোর! কেন খুন করলি তুই! আমি আমার বোনের চেহারাটাও চিন্তে পারিনি। এতটা পাষাণ কি করে হতে পারলি তুই! ও তো তোরও বোন ছিল। এক সাথে ছোট থেকে আমরা বড় হয়েছি। খুন করার সময় কি একবারও হাতটা কাঁপেনি তোর? কথা গুলো বলতে বলতে পাগলের মত দিপেশকে মারে রণক।
—দিলাত্রী সেন পুলিশ ডেকে এনেছে। পুলিশ এসে দিপেশ কে ধরে নিয়ে যখন যাচ্ছিল তখন করুন দৃষ্টিতে দিপেশ তাকিয়ে থাকে দিলাত্রী সেন এর দিকে।
—দিপেশকে নিয়ে যাওয়ার সময়। রণক বলে ইন্সপেক্টর অপরাকে কোথায় রেখেছে শুনে নিয়ে তারাতাড়ি ওকে রেসকিউ করেন। তখন দিপেশ জোরে জোরে বলে, আমি অপরা কে অপহরণ করিনি। আমার ফিরোজাকে অপহরণ করা হয়েছে।
****
তজশ্রী ব্যানার্জি রিতিকার চুলে তেল দিয়ে দিচ্ছে। তেল দিতে দিতে তজশ্রী বলল। তুমি ফিরে এসে আমার ছেলের অন্ধকার জীবনে আলো ফিরিয়ে এনেছো লতিকা। যখন তুমি চলে গিয়েছিলে। আমেরিকা থেকে ফিরে এসে আমার তপন তখন মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলে। কত স্বপ্ন নিয়ে পাঠিয়ে ছিলাম আমেরিকায়।বড় ডাক্তার হয়ে ফিরে আসবে। ডাক্তার তো হলো ঠিকই কিন্তু বাড়িতে ফিরল মানসিক রুগী হয়ে। অবশ্য ডাক্তাররা বলেছিল এটা সাময়িক। ঠিক হয়ে যাবে তপন। কিন্তু আমি তো মা। তাই এই সাময়িক অবস্থাও ছিল আমার কাছে খুব কঠিন একটা সময়। তোমাকে অনেক খোঁজার চেষ্টা করেছি। কিন্তু কোনদিন তো তোমাকে দেখিনি তাই শুধু নামের উপর ভিত্তি করে খুঁজে পাওয়া ছিল অসম্ভব। অনেক চিকিৎসা করার পর ধীরে ধীরে ছেলেটা আমার স্বাভাবিক হয়ে উঠে। কিন্তু কোনো ভাবেই বিয়ের জন্য রাজি করাতে পাচ্ছিলাম না। সারাদিন-রাত হসপিটালেই থাকত। আর ছুটির সময় এডভেঞ্চার এর জন্য বিভিন্ন স্থানে ঘুরে বেড়াত।
—হটাৎ একদিন এসে বলল, মা আমি লতিকাকে বিয়ে করেছি। ও আমার কাছে ফিরে আসার সময় বড় এক্সিডেন্টে কোমায় চলে গেছে। আমরা তো ভয় পেয়ে গেলাম। তোমার শোকে যদি আবার মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলে। তাই সময় নষ্ট না করে তোমাকে বৌমা মেনে নিয়ে বাড়িতে নিয়ে চলে আসি কোমায় থাকা অবস্থাতেই। ভাবতে পাচ্ছ লতিকা! ছেলেটা আমার তোমাকে কতটা ভালোবাসে। ওকে ছেড়ে আর কখনো যাবে না আমার কাছে প্রতিজ্ঞা করো।
—তজশ্রী ব্যানার্জির কথা শুনে রিতিকার চোখে পানি চলে আসে। পৃথিবীতে এমনো ছেলে আছে। যে সত্যিকারের ভালোবাসতে পারে। এমন মানুষকে কেউ কি ভাবে ছেড়ে যেতে পারে! মেয়েটা নিশ্চয়ই নির্বোধ ছিল। এমন ভালোবাসা কেউ হাতছাড়া করে নাকি। আমিও ভালোবেসে ছিলাম কিন্তু ভালোবাসা পাইনি। ভালোবাসার পরিবর্তে পেয়েছি অভিশপ্ত জীবন। এই জীবনে অনেক মানুষই দেখেছি তপন বাবুর মতো কাউকে দেখিনি। আমার মতো এক অপরিচিতকে নিরাপদে রাখতে সেই ভালোবাসার স্থানে আমাকে বসিয়েছে।কি অদ্ভুত এই পৃথিবীতে। সন্ধ্যার সময় তপন এর সাথে করা রূঢ বিহেভিয়ার এর জন্য অনুতাপ করে রিতিকা।
রিতিকা অতীত বিচরণ ৩
------------------------------------
সে দিন বাড়িতে কেউ ছিল না। অমল পড়াতে এসেছে। দরজায় দাঁড়িয়ে আছে হাতে বেলীফুলের মালা নিয়ে। দরজা খুলে অরুনিকা মাথা নিচু করে বলল, বাড়িতে কেউ নেই, তাই আজকে মা পড়তে নিষেধ করে গেছে। আপনি আজ যান কাল পড়ব। অমল মালাটা সামনের দিকে এগিয়ে দিয়ে বলল, এটা তোমার জন্য। অরুনিকা মাটির দিকে চেয়ে বেলীফুলের মালা নিতে হাত বাড়িয়ে দেয়।
—অমল মালাটা দিতে নিয়ে খপ করে ধরে ফেলে অরুনিকার হাত। লজ্জায় হাতটা সরিয়ে নিতে দরজা থেকে অমল বাড়ির ভেতর চলে আসে।
—একি করছেন মানুষ দেখে ফেলবে! হাতটা ছাড়ুন।
—একবার যখন হাত ধরেছি মৃত্যুর আগ পযন্ত ছাড়ব না আমার লক্ষীটি।
—অরুনিকা লজ্জায় লাল হয়ে উঠে। এক হাতে দরজা লাগিয়ে দেয় সে। পেছন থেকে চুল সরিয়ে ঘাড়ে চুম্বন করে অমল। অরুনিকার শরীরের শিহরণ জাগে। অরুনিকার মনে হয় এখনি বুঝে পড়ে যাবে সে। শরীর হাল্কা কাঁপতে শুরু করে। অরুনিকা পেছন ঘুরেই জড়িয়ে ধরে অমলকে।
উন্মত্ত আনন্দোলোকের অগ্নিঝড় ওঠে দুজনের শরীরে। অরুনিকার বাঁধভাঙা যৌবনে অমল চাষ করে। ওষ্ঠ যুগলের শেষ বিন্দু রস পান করে। আমৃত্যু কামনার স্বাদ ছড়িয়ে পড়ে শরীরে। গোপন প্রেমিক-প্রেমিকার সুখপ্রাপ্তির স্পষ্ট ফুটে ওঠে শরীরে বিন্দু বিন্দু ঘামে। নিষিদ্ধ দৈহিক মিলনে শুরু হয় অরুনিকার প্রথম প্রেমের সূচনা।
— সন্ধ্যাই বাড়িতে ফিরেই সন্ধ্যা বাতি জ্বালিয়ে রান্নার কাজে লেগে পড়ে রত্নাবর্তী। মেয়েকে হাতে হাতে কাজ করতে বললে দৌড়ে আসে অরুনিকা। অন্যদিনের মতো মুখ গোমড়া করে আজ সে কাজে সাহায্য করছে না। বেশ হাসিখুশি মুখেই তরকারি কাটতে বসেছে।রত্নাবর্তী খেয়াল করলেন। আজ তার বড় মেয়েটাকে আলাদা লাগছে। অরুনিকার খোলা চুলের দিকে তাকাতেই খেয়াল করল রত্নবর্তী। মেয়ের চুল দিয়ে টপটপ করে পানি পড়ছে। দেখে মনে হচ্ছে কিছুক্ষণ আগেই স্নান করে বেড়িয়েছে। অরু বলে ডাকতেই অরুনিকা মায়ের দিকে চোখ তুলে তাকাল। অরুনিকার চোখ লাল হয়ে আছে।
—কিরে অরু তুই এই ভর সন্ধ্যাই স্নান করেছিস কেন? অসুখ বাঁধানোর সখ হয়েছে নাকি!
—অরুনিকা আমতা আমতা করে বলল, বড্ড বেশি আজ গরম পড়ছে তাই মা।
—রত্নাবর্তী খেয়াল করলেন মেয়ে এই প্রথম কথা বলছে ইনিয়েবিনিয়ে। আবার মুখ আড়াল করে কিঞ্চিৎ মুচকি যে হাসছে তা নজরে এড়ায় না রত্নাবর্তীর। হটাৎ করেই মনের ভেতর অজানা এক ভয় আষ্টেপৃষ্টে জড়িয়ে ধরে রত্নাবর্তীকে। কি যেন ভেবে মেয়েকে বলল। তুই লিপাদের বাড়িতে আর যাসনে যেন। মেয়েটার খারাপ হয়ে গেছে। শুনেছি ও পাড়ার বুড়ো মাস্টার এর সাথে নাকি ছিঃ ছিঃ ছিঃ। হায় রাম এই কলি যুগে কেন পাঠালে!চারিদিকে পাপে জরাজীর্ণ।
—অমলের সাথে আজকাল প্রায় অরুনিকা কামনার সাগরে ডুব দেয়। নিজের প্রণয়ের গল্প করতে ছুটে যায় বান্ধবী লিপার বাড়িতে। প্রণয়ের শুরু দিকের কথা গুছিয়ে বলে অরুনিকা।
— কথা গুছিয়ে বলার ভঙ্গি দেখে মনে হয় কবি কবি ভাব চলে এসেছে বিড়বিড়িয়ে বলে লিপা।
— হাসি যেন মুখ থেকেই সরে না অরুনিকার।
—নিরুৎসাহিত লিপা বসে থেকে অরুনিকার প্রণয়ের সেই গল্পই শুনে।
— মনে মনে একবার চিন্তা করে হয়তো তার মতোই হবে অরুনিকার জীবন। পরক্ষণেই আবার চিন্তা করে অরুনিকা তো আর বুড়ো মাস্টার এর সাথে প্রেম করেনি যে তার মতো জীবন হবে। অরু তো প্রেম করেছে এক সুদর্শন পুরুষের সঙ্গে। একবার হিংসে হয় আবার তার, তারপর বান্ধবীর উজ্জ্বল ভবিষ্যতে এর কথা চিন্তা করে আনন্দিত হয় লিপা। লিপার মনে কোন স্থিরতা নেই। সে কখন কি ভাবছে তার কোন কূলকিনারা নেই।
— এই দিকে অরুনিকার মুখে যেন খই ফুটেছে। কথাই কথাই বলল, জানিস লিপা মা কি বলতো! ছোট থেকেই এই কথা শুনছি। বিয়ের আগের জীবনে পুরুষ নাকি আসে জীবন ধ্বংসের জন্য।ছোট থেকেই মায়ের এই শেখানো কথা, দেখানো ভয় যে পুরুষের কাছে গেলে জীবন হয় ধ্বংস। এই ভয়ে আজ পযন্ত শুধু তোদেরই প্রেম দেখে এসেছি। কিন্তু আজ যখন আমি নিজেই প্রণয়ের গাঁথা সুরে বাঁধা পড়েছি তাইতো ওসব ভয়ের কথা কিছুই এখন আর মাথায় ঢুকে না। মায়ের কথা মিথ্যে হলো। বিয়ের আগে পুরুষ জীবন ধ্বংস করতে না নিরালস এই কঠোর জীবনে প্রেমের সুর তুলতে আসে। যৌনতার সুখ যেখানে এতো আনন্দ ময় সেখানে জীবন ধ্বংসের কথা আসে কি ভাবে বলতে পারবি লিপা?
—লিপা কি যেন বলতে নিয়েছে ঠিক তখনি ওর মা এসে বলে, এসে গেছে জলদি আয়। তাই বলে লিপা'কে ডেকে অন্য ঘরে নিয়ে চলে যায় ওর মা। অরুনিকার খারাপ লাগে। লিপার সাথে ঠিক ভাবে কথায় বলা হলো না। মন খারাপ করে বাড়ি ফিরে চলে আসে অরুনিকা।
—ভোর বেলায় অনেক মানুষের এক যোগে কান্নার আওয়াজ ভেসে আসে সেই সাথে ঝগড়ার কিছু ভাঙা ভাঙা শব্দ ভেসে আসে। আড়মোড়া ভেঙে বিছানায় চোখ ডলতে ডলতে মায়ের উদ্দেশ্যে অরুনিকা বলে। কি হয়েছে মা এতো ভোরে কিসের হইচই! রত্নাবর্তী শরীরে শাড়ি পেঁচাতে পেঁচাতে বলল, লিপা আত্মহত্যা করেছে। ওর বাড়ি থেকেই এই মরাকান্না ভেসে আসছে। রত্নবর্তী কথা গুলো বলল, মুখ বিষ করে। একজনের মৃত্যুর খবরে কেউ যে মুখ বিষ করে কথা বলতে পারে মায়ের মুখ সেই দিন না দেখলে বুঝতেই পারত না অরুনিকা।
—বিছানা থেকে নেমে গায়ে চাদর জড়িয়ে মায়ের সাথে বেড়িয়ে পড়ে অরুনিকা। লিপাদের বাড়ির সামনে পুলিশ গ্রাম প্রধান এর সাথে কথা বলছে। রত্নাবর্তী মুখ ভালো করে ঢেকে মেয়ের হাত ধরে বাড়ির ভেতর ঢুকে ।
—মাটিতে লিপার প্রাণহীন দেহটা একটা ওড়না দিয়ে ঢেকে রেখেছে। অরুনিকার চোখে ঝরঝর করে জল নামে। কাছের বান্ধবীর এমন আকষ্মিক মৃত্যু মেনে নেওয়া যায় কি সম্ভব! চোখের জল মুছে ভিড় ঠেলে বেড়িয়ে এসে স্নানঘরের পাশে দাঁড়িয়ে বড়ো বড়ো নিশ্বাস নেয় অরুনিকা। তখনই কানে ভেসে আসে দুজনের ফিসফিসিয়ে কথা বলার আওয়াজ।
এই যে শুনেন কইতেছি আপনার কথা মতোই কিন্তু কামডা আমি করছি। বাচ্ছাডা ফেলার নাম করে জরায়ু ভেতরে এমন আঘাত হানছি যে রক্তক্ষরণে লিপার ভবনীলা সাঙ্গ হয়েছে । এহন যদি পুলিশ এর ঝামেলা আমার কাঁধে আইসা পড়ে তাহলে কিন্তু আপনার নামা বইলা দিতে আমার দু-সেকেন্ড সময়ও লাগব না কয়ে দিলাম।
—আরেহ আস্তে কথা কও বইন। আমি হলাম হতভাগা মা। নিজের বেটির কুকর্ম ফাঁসের ভয়ে নিজেই মারার হুকুম দিছি। আমার কলিজাডার রক্তশূণ্য ফ্যাকাসে দেহডা পইড়া আছে ওইহানে । তুমি কি আমার কষ্টডা বুঝবার পাচ্ছ! তোমার, আমার নামডা যাতে না আসে সেই জন্যই তো গ্রাম প্রধানরে ট্যাকা দিয়ে হাত কইরা পুলিশগো সাথে কথা কওয়াচ্ছি। সব বুঝেও যদি তুমি এমন কথা কও। দেওয়ালেরও কান আছে সে কথাডা কি তুমি জান না?
—ভয়ে বুক শুকিয়ে আসে অরুনিকার। ভিড় ঠেলে মা'কে খুঁজে অরুনিকা। ভিড়ের ভেতর অনেকেই বলাবলি করছে।
—শুনছি মাইয়াডার নাকি প্রেম আছিলো ওগ্রামের বুড়ো মাস্টার এর সাথে। দু-মাসের পোয়াতিও নাকি ছিল হুনছিলাম। যুগটা ভালা না বুঝলা, কলি যুগের মাইয়ারা পুরুষ দেখলেই উপর হয়েইয়া পড়ে ছিঃ ছিঃ ছিঃ কি যুগ আইলো।
—কথা গুলো শুনে অরুনিকার কষ্ট আরও দিগুণ বেড়ে যায়। লিপা প্রেগনেন্ট ছিল নিশ্চয়ই এই কথায় গতকাল তাকে বলতে চেয়েছিল যা শেষ পযন্ত বলা হয়ে উঠেনি। অরুনিকার চোখ দিয়ে হু হু করে জল নামে। চারিদিকে কেমন অন্ধকার ছেয়ে যায়। দেখতেই দেখতে ভিড়ের ভেতরেই জ্ঞান হারিয়ে পড়ে যায়।


To be continued.....


গল্প: নিষিদ্ধ নারী (প্রেম কাহিনী)

পার্ট:-০৬
লেখনীতে: সামিনা সামি

Post a Comment

0 Comments