এগুলো সব ফিনিশ করো ফাস্ট বলেই নূরের পাশে এক বস্তা খাবার রাখে সৌন্দর্য। অবশ্য নূরের খাবার দেখে তাই মনে হচ্ছে। নূর খাবারের দিকে তো সৌন্দর্যের দিকে একবার তাকাচ্ছে।
আমার দিকে তাকাতে বলিনি ম্যাডাম খাবার খেতে বলেছি।আমাকে দেখার অনেক সময় পাবে এমনকি সারাজীবন আমাকে দেখে দেখে বোর ও হতে হবে। সো এখন যেটা করলে কাজে দিবে সেটা করো।খাবার গুলো ঠান্ডা হওয়ার আগেই খেয়ে নাও।
--'' আ- আমি খাবো না খিদে নেই আমার।
--" সৌন্দর্য ব্রু কোচকে নূরের দিকে তাকিয়ে বলে,,, তুমি কি বললে? আবার একবার বলবে আমি আসলে শুনতে পাই নি।
--'' আ-আমার এখন খেতে ইচ্ছে করছে না স্যার আমি খাবো না।
তুমি কি চাও তোমাকে এখান থেকে চলে যেতে হোক,? নিশ্চয়ই চাও না তাই না? যদি না চাও তাহলে ফাতিহার বলা গুড গার্লের মতো খেয়ে নাও।
নূরের জোরাজোরি করতে বা কথা বলতে একটুও ইচ্ছে করছে না। সে ভিতর থেকে ভেঙে গুড়ে গেছে। না চাওয়া সত্তেও খাবার হাতে নেয় খাওয়ার জন্য।
নূর খাবার মুখে নিতে নিতে সৌন্দর্যের দিকে তাকায় সে এখন ফোন নিয়ে বিজি। শুকনো ঢুক গিলে আমতা আমতা করে বলে,, আ- আপনি কিছু খাবেন না স্যার? অনেক বেলা তো হয়ে গেছে।
আমি কফি খেয়েছি আপাতত কিছু খাবো না। খিদে লাগলে পরে খেয়ে নিবো তোমাকে আমার খাওয়া নিয়ে ভাবতে হবে না।
এ-এখানে তো অনেক খাবার আছে। আপনি এখান থেকে নিয়ে খান।
সৌন্দর্য ফোন পকেটে ঢুকিয়ে নূরের দিকে পূর্ণ দৃষ্টিতে তাকায়। তারপর কিছু না বলে নূরের হাত থেকে আধ খাওয়া পাউরুটি টা নিয়ে কামড় বসায়।
আরে স্যার এটাতো আমার এঁটো। ভালো টা নিয়ে খান।
এতকিছু তোমাকে ভাবতে কে বলেছে? খেতে বলেছো খেয়েছি। এবার কথা কম বলে খাওয়া শেষ করো দেন ডাক্তারের কাছে যেতে হবে। নূর ডাক্তারের কাছে যাওয়ার কথা শুনে তারাতাড়ি খাওয়া শেষ করে।
ডাক্তারের ক্যাবিনে বর্তমানে নূর আর সৌন্দর্য বসে আছে। নূর ভয়ে ঘেমে নেয়ে একাকার।হাত কচলাতে কচলাতে মনে হচ্ছে চা'মড়া উঠিয়ে ফেলবে হাতের।ডাক্তার রিপোর্টে চোখ বুলাচ্ছে।
পেশেন্টের কি হোন আপনারা? ডাক্তার জিজ্ঞেস করে।
পেশেন্ট আমার,,,,, কিছু বলতে গিয়ে সৌন্দর্য নূরের দিকে তাকায়, নূরের দিকে তাকিয়েই বলে আমার শ্বশুর আই মিন বাবা হয়।
-' ওহ আচ্ছা। (ডাক্তার)
-' জ্বি। (সৌন্দর্য)
দেখুন উনার কন্ডিশন যতটুকু মনে হচ্ছে ভালো না।
ডাক্তারের কথা শোনার সাথে সাথে নূর সৌন্দর্যের হাত খামচে ধরে ভীত দৃষ্টিতে ডাক্তারের দিকে তাকায়।
সব খুলে বলুন ডাক্তার সৌন্দর্য সোজাসাপ্টা বলে।
ডাক্তার নড়েচড়ে বসে গলা খেঁকাড়ি দিয়ে বলতে শুরু করে,, দেখুন পেশেন্টের সব রিপোর্ট দেখে যা বোঝা যাচ্ছে উনার ব্রেইন টিউমার হয়েছে। আর এটা সম্পর্কে আপনাদের নিশ্চয় কম বেশি ধারণা আছে। তবুও আমি খুলে বলছি সব।
ব্রেইন টিউমার (brain tumor) বা ইনট্রাক্রানিয়াল নিওপ্লাজম এমন একটি অবস্থা যখন মানুষের মস্তিষ্কে অস্বাভাবিক কোষ তৈরি হয়।
অপারেশন করতে হবে,,, কিন্তু চান্স খুব কম। খোলাখুলি বললেই ভালো আসলে,,,
কত পার্সেন্ট ডক্টর? সৌন্দর্য জানতে চায়।
ডাক্তার নিজের চশমা ঠিক করতে করতে বলে,, ৯৫% নেগেটিভ আর ৫% পজেটিভ। ডাক্তারের কথা শুনে নূর শব্দ করে কেঁদে উঠে। সৌন্দর্য নূরের দিকে তাকিয়ে ডাক্তারকে বলে,, ডক্টর আমরা এ বিষয়ে পরে কথা বলি?
হ্যা আপনাদের ইচ্ছে।
সৌন্দর্য পরে নিজে আলাদা করে ডাক্তারের সাথে কথা বলে। ডাক্তার জানায় উনার শরীরের কন্ডিশন ততোটা ভালো না কিছুটা উন্নত হলে করাতে হবে। আর যে ডাক্তার অপারেশন করবে উনি বর্তমানে দেশের বাইরে আছে। উনি সপ্তাহখানেক পরে আসবে।সবকিছু উনি আবার পর্যবেক্ষন করে উনি ডিসিশন জানাবে।
আপাতত দুই দিন নূরের বাবা কে হাসপাতাল রেখে বাড়িতে নিয়ে আসা হয়।এই দুই দিন সৌন্দর্য ও হাসপাতালেই ছিলো। নূরের বাবা এখন কিছু টা ভালো আছে তবে ততোটা ও নয়। সৌন্দর্য নিজে ওদের বাড়ি পৌঁছে সবকিছু বুঝিয়ে তারপর বাড়িতে যায়। এই দুই দিন না ভালো মতো ঘুম হয়েছে আর না খাওয়া দাওয়া। সৌন্দর্য নিজেও কেমন অসুস্থ বোধ করছে।তাই ভার্সিটি থেকে এক দিনের জন্য ছুটি নিয়েছে। সিধান্ত নিয়েছে এই একদিন ঘুমিয়ে কাটিয়ে দিবে।কিন্তু নিজে ঘুম আর বিশ্রাম করার ফাঁকে ও একটু পর পর নূর কে কল দিয়ে তার বাবার খোঁজ খবর নিতে ভুলছে না।কিছু লাগবে কি না লাগলে যেনো সাথে সাথে কল করে। লজ্জা নিয়ে যেনো বসে না থাকে বা সৌন্দর্য কিছু মনে করবে কি না এই ধারণা নিয়ে যেনো বসে না থাকে। যখনই দরকার পরবে সেটা রাত দুটো হলেও যেনো তাকে ফোন করে জানানো হয় নয়তো পরে এর জন্য সৌন্দর্য দেখে নিবে বলে হু;মকি দেয়।
সৌন্দর্যের এরূপ কথায় নূর অবাক লোকটা তাদের ভালো করতে চাইছে তাও আবার হু;মকি দিয়ে।
নূর তার বাবার কাছ থেকে নড়ছেই না
।সব নিজের হাতে করছে। বাবার সাথে কতো কথা বলছে। এতোদিনের জমানো সব কথা যেনো ঢেলে দিচ্ছে। নূরের বাবা মেয়ের দিকে তাকিয়ে শুধু তার করা পাগলামি গুলো দেখছে।ভিতর থেকে শক্ত মানুষ টা ভেঙে গেছে। খুব করে কাঁদতে ইচ্ছে করে কিন্তু মেয়ে আর বউয়ের সামনে একবারে কাঁদা যাবে না নয়তো ওরা ভেঙে পরবে। মেয়েদের মন ভরে দেখে নিচ্ছে। কেন যেনো মন বলছে আর দেখতে পারবে না। মেয়েদের সাথে আর হাসি খুশি মুহূর্ত ও উপভোগ করতে পারবে না।
***********
নূর রাতের খাবার শেষ করে অনেকটা সময় বাবার সাথে গল্প করে কাটিয়েছে।অবশ্য নূর একা না সাথে তূর আর তার মা ও ছিলো। রাত প্রায় এগারোটা বাজে। নূরের বাবা কে ঔষধ খাওয়ানো হয়েছে। ঔষধের প্রভাবে ঝিমাচ্ছে দেখে গল্পের সমাপ্তি ঘটিয়ে দেয়। বাবা কে সুন্দর করে শুইয়ে দিয়ে লাইট অফ করে দুই বোনই নিজেদের রুমে এসে পরে। নূর বিছানায় শুয়ে ছটফট করে কিন্তু কেন জানি চোখের পাতায় ঘুম ধরা দেয় না। উঠে বসে বই নেয় পড়ার জন্য কিন্তু এতেও মনোযোগ বসে না। শেষে ফোন হাতে নেয়। ফোন অন করতেই দেখতে পায় সৌন্দর্যের মেসেজ। " ফোন হাতে নিলে মেসেজ দিও কথা আছে। "
নূর হোয়াটসঅ্যাপে ঢুকে সৌন্দর্য কে মেসেজ দেয়,,জ্বি স্যার বলুন কি বলবেন।
মেসেজ দিয়ে নূর ইসরাতের সাথে কথা বলতে যায়।
মিনিট দুয়েক পরই মেসেজ আসে,,,
কাল সকাল এগারোটার দিকে তৈরি হয়ে থেকো এক জায়গায় যাবো।(সৌন্দর্য)
-'' কোথায় যাবো স্যার?
-" গেলেই তো দেখতে পাবে। তুমি তৈরি হয়ে থেকো আমি তোমাকে পিক করবো।
-" কিন্তু?
-" কোনো কিন্তু না।বেশি সময় লাগবে না। আর দরকার আছে বলেই তো বলছি।
নূর কিছু একটা ভেবে রাজি হয়ে যায়। আচ্ছা জানিয়ে ফোন রেখে ঘুমানোর চেষ্টা করে।
**********
পরের দিন যথাসময়ে নূর তৈরি হয়ে থাকলেও বাইরে না দাঁড়িয়ে বাড়িতেই থাকে। একা একা দাঁড়িয়ে থাকতে কেমন যেনো আনইজি ফিল হচ্ছিল।
সৌন্দর্য নূরদের বাড়ির সামনে এসে গাড়ি থামিয়ে দাঁড়ায়। মেয়ে টা কে টাইম দিয়ে দিয়েছে কিন্তু এখনও আসার নাম নেই।
ঘড়ি ধরে পাঁচ মিনিট অপেক্ষা করে সৌন্দর্য। মেজাজ খুব খারাপ হচ্ছে তার। সময়জ্ঞান হীন মানুষদের একদম পছন্দ না। আর এই মেয়ে টা অপছন্দের কাজগুলো ই করছে। সৌন্দর্য ফোন হাতে নিয়ে নূরের ফোনে কল দেয়।
নূর সৌন্দর্যের ফোন দেখে রিসিভ না করে মা বাবা কে বলে বের হয়।
এইদিকে কল রিসিভ না করায় সৌন্দর্য রাগে ফুঁসতে থাকে। এইদিক ওইদিকে তাকিয়ে নিজের রাগ নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা চালায়। কিন্তু হুট করে সামনের দিকে তাকিয়ে নিজের রাগ যেনো সব নিমিষেই গায়েব হয়ে যায়, এক সাদা পরির স্নিগ্ধ মুখ দেখে।
নূর ধীর পায়ে হেঁটে এসে সৌন্দর্যের সামনে দাঁড়ায়। নিচের দিকে তাকিয়েই বলে,, আসলে আমি আগেই তৈরি হয়ে ছিলাম। এখানে দাঁড়িয়ে থাকতে আমার আনইজি লাগছিলো তাই আসিনি বাড়িতেই ছিলাম। আপনি কি অনেক সময় ধরে অপেক্ষা করছেন স্যার?
সৌন্দর্য এখনও নূরের দিকেই তাকিয়ে আছে। নূরের কথা গুলো শুনেছে কি না বোঝা গেলো না। নূর সৌন্দর্যের সারা শব্দ না পেয়ে চোখ তুলে তাকায়। তারপর সৌন্দর্য কে আবার ডাক দেয়,,,, স্যার?
নো রেসপন্স।
এইবার একটু জোরেই ডাক দেয়। সৌন্দর্য নিজেকে সামলে নিয়ে বলে,,হ-হ্যা?
-- যাবেন না?
সৌন্দর্য মনে মনে বলে যাবো কি করে? আমিতো আঁটকে গেছি।
হুম চলো বলেই সৌন্দর্য গাড়িতে উঠে বসে। সৌন্দর্যের সাথে নূর ও গিয়ে গাড়িতে উঠে।
সৌন্দর্য নূরকে নিয়ে ফাতিহার স্কুলে যায়।ফাতিহার স্কুলে কিছু কাজ আছে আর তারমধ্যে নূরের মন টা যেনো একটু ভালো হয় তার ই চেষ্টা।
স্কুলে এসে সৌন্দর্য প্রথমেই অফিসে ঢুকে স্যার ম্যাডামদের সাথে কিছু সময় কথা বলে তারপর প্রিন্সিপাল ম্যাম একটা খাতা এগিয়ে দেয় সাইন করার জন্য। সৌন্দর্য সাইন করে নূরের দিকে খাতা এগিয়ে দেয়। তারপর আস্তে করে নূরের কানের কাছে গিয়ে বলে,, আমি ফাতিহার কাছে যাচ্ছি তুমি সাইনটা করে এসো।
নূর বুঝলোনা কি হচ্ছে সৌন্দর্যের কথা মতো সাইন করতে গিয়ে থমকে যায় ফাতিহার বাবার নামের জায়গায় মি. রূপ ওয়াহিদ নাম দেখে।
নূর খাতার দিকে তাকিয়ে আছে এক দৃষ্টিতে। মাঝে মাঝে অনাকাঙ্ক্ষিত কিছু চোখের সামনে আসে যা আমরা কল্পনা ও করতে পারি না। নূর কয়েকদিন ধরে একের পর এক ঝটকা খেয়েই চলেছে। খাতার মধ্যে থাকা মি.রূপ ওয়াহিদ নামটার দিকে তাকিয়ে নূর হিসাব মিলাতে ব্যস্ত হয়ে পরে।অথচ কিছুতেই কিছু হিসাব তার মিলছে না। কে এই রূপ? কি তার পরিচয়। তাহলে ফাতিহার অভিভাবকের দায়িত্ব ই বা সৌন্দর্য কেনো পালন করে? ওদের বন্ডিং দেখে যে কেউ অনায়াসে ধরে নিবে এরা বাবা মেয়ে। আর প্রিন্সিপাল ম্যাম তো সৌন্দর্য আসার সাথে সাথে বলে উঠেছে,,মি. ওয়াহিদ আপনার মেয়ে অনেক ভালো সব দিক দিয়ে, তার আচার ব্যবহার চাল চলন। খুব ভালো শিক্ষা নিয়ে বড় করেছেন আপনার মেয়ে কে।
তাহলে এসব কেন বলল? কথায় কথায় তো আপনার মেয়ে আপনার মেয়ে ই করে গেলো।এই মুহূর্তে হাজারটা প্রশ্ন এসে নূরের মাথায় এসে ঘুরপাক খাচ্ছে।
কি হলো এনি প্রবলেম? জিগ্যেস করে প্রিন্সিপাল ম্যাম।
নূর তার সকল ভাবনা সাইডে রাখে,,,নো নো ম্যাম কোনো সমস্যা নেই বলেই তারাতাড়ি করে সাইন করে দেয়। এরমধ্যে সৌন্দর্য ফাতিহাকে নিয়ে এসেও পরে।
"'- নূর তোমার হয়েছে? " জানতে চায় সৌন্দর্য।
"- হ্যা হয়ে গেছে। "
"- আচ্ছা তাহলে চলো যাওয়া যাক?"
-- হুু।
-- আসছি ম্যাম।কোনো ধরনের অসুবিধা বা দরকার হলে অবশ্যই আমাকে ইনফর্ম করবেন।আর আমার মেয়ে কে নিয়ে কোনো সমস্যা আশা করি হবে না, যদিও হয় তাহলে আমাকে জানাতে ভুলবেন না।(সৌন্দর্য)
-- এ নিয়ে আপনি নিশ্চিন্ত থাকুন মি.ওয়াহিদ। আমরা বিষয়গুলো খেয়াল রাখবো।
নূর সৌন্দর্যের দিকে তাকিয়ে ভাবে কি জোরালো ভাবে আমার মেয়ে বলছে।না একটু সংকোচ না অন্য কিছু।
সৌন্দর্য তাদের থেকে বিদায় নিয়ে নূর আর ফাতিহা কে নিয়ে বের হয়ে যায়। গাড়িটা একটু দূরে পার্কিং করেছে সৌন্দর্য। এইদিকে একটু সমস্যা হয়েছে তাই আর গাড়ি এনে রিস্ক নেয় নি। সৌন্দর্যের কোলে ফাতিহা। নূর তাদের পাশেই হাঁটছে। সে ভাবনার জগতে বিচরণ করছে এখন। কিছুতেই হিসাব মিলাতে পারছে না নূর। ভাবনায় বিভোর হয়ে ভুলেই বসেছে সে রাস্তা দিয়ে হাঁটছে। হুট করেই এক মহিলার সাথে ধাক্কা খেয়ে পরতে পরতে বেঁচে যায়।
এসব কি? তুমি কি কোনো কিছু ঠিক ভাবে করতে পারো না? একটু জোরালো ভাবে বলে সৌন্দর্য।
মহিলাটা কেমন করে যেনো সৌন্দর্যের দিকে তাকিয়ে আছে। নূর মহিলাটার দিকে তাকিয়ে একটু হাসার চেষ্টা করে সরি বলে। সৌন্দর্য ও মহিলার দিকে তাকিয়ে চুপ হয়ে যায়। মহিলা দুইজনের দিকে একটু তাকিয়ে আচ্ছা বলে চলে যায়।
ফাতিহার মতো তোমার ও যে কোলে উঠতে ইচ্ছে করছে সেটা বললেই পারতে।শুধু শুধু এরকম বেখায়ালি হয়ে এক্সিডেন্ট করার তো প্রয়োজন ছিলো না। আমাকে বলতে যে কোলে উঠতে ইচ্ছে করছে। আমি তোমার হাসবেন্ড হই অবশ্যই তোমার কোনো ইচ্ছে অপূর্ণ রাখবো না।
নূর চোখ বড় বড় করে সৌন্দর্যের দিকে তাকায়,, কি বলছে কি ঠোঁট কা'টা লোকটা এই বাচ্চা মেয়ের সামনে।
ওয়াও মি. ওয়াহিদ তুমি মাম্মা কে ও কোলে নিবে?(ফাতিহা)
মাম এসব বড়দের কথায় কান দিতে নেই।তুমি চকলেট খাও বলেই পকেট থেকে একটা চকলেট বের করে দেয়। ফাতিহা চকলেট পেয়ে খাওয়ায় ব্যস্ত হয়ে যায়,এইদিকে কি হচ্ছে তার আর কোনো হুঁশ নেই। সৌন্দর্য একটু এগিয়ে নূরের হাত ধরে। নূর সৌন্দর্যের ছোঁয়ায় কেঁপে ওঠে। সৌন্দর্য একটু এগিয়ে নূরের কানের কাছে ফিসফিস করে বলে,,
"আমার বউয়ের কোলে উঠার ইচ্ছে ও আমি পূরণ করবো।এখন আপাতত এভাবেই আসো বলে নূরের হাত ধরে এগিয়ে যায় গাড়ির দিকে। নূর একবার হাতের দিকে তো একবার সৌন্দর্যের দিকে তাকায়। কেন জানি ভালো লাগায় পুরো শরীর শিউরে উঠছে।
সৌন্দর্য নিজেই নূরকে গাড়িতে তুলে সিট বেল্ট বেঁধে দেয়।এই প্রথম বাবা ছাড়া অন্য কোনো পুরুষ এতো কেয়ার করছে।বাবার কথা মাথায় আসতেই চোখ ভিজে উঠে অশ্রুতে।অনেক করে আঁটকানোর চেষ্টা করে চোখের পানি নূর।কিন্তু চোখ কি বাঁধা মানে কষ্ট মনে হলে? টুপ করে গাল বেয়ে কোলে এসে চোখের পানি পরে।নূর সৌন্দর্য দেখার আগেই তারাতাড়ি চোখ মুছে নেয়।
সৌন্দর্য কোথায় নিয়ে যাচ্ছে নূর জানে না। জিগ্যেস ও করেনি কোথায় যাচ্ছে। বসে ফাতিহার সাথে টুকটাক কথা বলছে। এটা খেয়াল করে নি গাড়ি ওদের বাড়ির রাস্তায় ই যাচ্ছে। মাঝখানে আবার সৌন্দর্য গাড়ি দাঁড় করিয়ে কোথায় যেনো যায়।মিনিট পনেরো পর ফিরে আসে দুই হাত ভর্তি করা ব্যাগ আর এসবের ভিতর মনে হয় ফল,মিষ্টি আছে নূরের যা মনে হলো।নূর এসব দেখেও কিছু জিজ্ঞেস করেনি।
সৌন্দর্য গাড়ি এনে নূরদের বাড়ির সামনে থামায়।নূর আর ফাতিহা তখন গল্প করতে ব্যস্ত।
এই যে আমার দুই ম্যাডাম আপনাদের গল্প কি শেষ হয়েছে? না হলে একটু রেস্ট নিন বাড়িতে গিয়ে আবার শুরু করবেন ঠিক আছে?
বাড়ির কথা বলতেই নূর বাইরের দিকে তাকিয়ে দেখে ওদের বাড়ির সামনে গাড়ি দাঁড় করানো।ফাতিহার থেকে বিদায় নিয়ে নূর চলে যেতে নেয়,,
আশ্চর্য আমাদের কে কি তোমার বাড়িতে নিবে না নাকি? ঐটা শুধু তোমার একার বাড়ি না কিন্তু আমার শ্বশুর আব্বার আর ফাতিহার নানুর বাড়ি।তাই না ফাতিহা? ফাতিহা মাথা নেড়ে জানায় ঠিক।
নূর আহাম্মক বনে যায়। আজও যে বাড়িতে যাওয়ার কথা বলতে ভুলে গেছে সেটা মাথায় আসতেই ঠাসিয়ে চ'ড় মারতে ইচ্ছে করলো নিজের মাথায় নিজেরই।
এরমধ্যে সৌন্দর্য ফাতিহা কে নিয়ে গাড়ি থেকে নেমে দাঁড়ায়। নূরের কোলে ফাতিহা কে দিতে দিতে বলে
ধরো তোমার মেয়ে কে। তারপর গিয়ে গাড়ির পিছন থেকে কিনে আনা জিনিস পত্র গুলো নিজের হাতে নিয়ে নূরকে চোখের ইশারায় ভিতরে যেতে বলে। নূর রোবটের মতো চলতে থাকে। দরজার সামনে দাঁড়িয়ে আছে বর্তমানে তিনজন।
কি হলো? কলিং বেল বাজাও আমার দুই হাত ভর্তি দেখতে পাচ্ছো না? (সৌন্দর্য)
নূর কলিং বেল দিয়ে অপেক্ষা করতে থাকে দরজা খোলার জন্য। মিনিট খানেক পরই দরজা খুলে যায়। তূর দরজা খুলে দিয়েছে।
আরে তূর তুই আ,,,,,নূরকে তূর পাত্তাই দিলো না হাত দিয়ে সরিয়ে সৌন্দর্যের পাশে দাঁড়িয়ে,,, আল্লাহ এ আমি কি দেখছি? জিজু আপনি? আমাদের বাড়িতে এসেছেন? ওয়াও!
হ্যা আমার একমাত্র শালিকা আমি এসেছি তোমার জিজু।এবার ভিতরে ঢুকতে দাও আগে।তূর নিজেই সৌন্দর্যের হাতের জিনিসপত্র নিয়ে ওদের কে ভিতরে প্রবেশ করে।
সৌন্দর্য কে দেখে নূরের বাবা মা খুব খুশি হয়।সবচেয়ে বেশি খুশি হয় নূরের বাবা। নূর আর সৌন্দর্য পাশাপাশি দাঁড়িয়ে ছিলো। মেয়ে আর মেয়ের জামাই কে দুই চোখ ভরে দেখে নেয়।কি সুন্দর লাগছে দুইজন কে। নূরের মা সৌন্দর্য কে আপ্যায়ন করতে ব্যস্ত হয়ে যায়। যদিও বাড়িতে কারোই মনের অবস্থা ভালো না তবুও জামাই কে তো আর এমনি এমনি বসিয়ে রাখা যায় না। তারউপর নূরের বাবা নিজে বলে দিয়েছে সৌন্দর্য আর ফাতিহার জন্য কি কি রান্না করতে।তাদের আপ্যায়নের যেনো কোনো কমতি না থাকে। একটা মাত্র জামাই।
তূর ফাতিহা কে নিয়ে নিজের রুমে গিয়ে নিজের সাজার জিনিস দিয়ে বসিয়েছে। নূর নিজের রুমে চলে গেছে ফ্রেশ হয়ে জামা চেঞ্জ করতে। সৌন্দর্য বসে বসে নূরের বাবার সাথে গল্প করছে।
নূরের বাবা গল্প করতে করতেই একপর্যায়ে ঘুমিয়ে যায়। সৌন্দর্য আর এখানে বসে থাকে না উঠে ড্রইং রুমের দিকে চলে যায়। চারদিকে চোখ বুলিয়ে দেওয়ালের দিকে তাকাতেই ওদের চারজনের বড় একটা ফ্যামিলি ফটোর দিকে নজর যায়। সৌন্দর্য দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখছে।এরমধ্যে পিছন থেকে তূর এসে বলে,আরে জিজু আপনি এখানে একা একা কি করছেন? ফ্রেশ ও হননি দেখা যায়। আসুন আমার সাথে বলেই টেনে নিয়ে যেতে থাকে।
আরে শালিকা কোথায় নিয়ে যাচ্ছো?
আপুর রুমে। (তূর)
--' এখন আমি তোমার আপুর রুমে গিয়ে কি করবো? তারচেয়ে বরং আমাকে গেস্টরুম টা দেখিয়ে দাও।একটু ফ্রেশ হওয়া দরকার।
--- ফ্রেশ হলে একটু হবেন কেন শুনি? পুরোপুরি ই হোন নিজের বউয়ের রুমে গিয়ে বলেই চোখ মেরে জোরে ধাক্কা দিয়ে সৌন্দর্য কে ভিতরে ঢুকিয়ে বাইরে থেকে দরজা আঁটকে তূর মুচকি হেসে চলে যায়।
এইদিকে নূর মাত্রই ফ্রেশ হয়ে বের হয়েছে।বাথরুমে জামা নিয়ে যেতে ভুলে গেছে তাই রুমেই চেঞ্জ করবে বলে ঠিক করে নেয়।সাধারণত নূর তার রুম লক করে না। বাড়িতে তেমন কেউ নেই। আর থাকলেও নক করে ঢুকে। আজ যে বাড়িতে সৌন্দর্য এসেছে সেটা মাথা থেকে বের হয়ে গেছে নূরের। মাত্রই ওড়নাটা রেখে জামা নিতে যাবে,,,,,
কোথা থেকে হুট করে সৌন্দর্য এসে নূরকে নিয়ে ধপাস করে বিছানায় পরে যায়।
তূরের হুট করে ধাক্কায় সৌন্দর্য ও নিজের ব্যলেন্স রাখতে পারে নি।নূরকে সাথে নিয়ে বিছানায় পরে যায়।
নূর কি হলো কিছুই বুঝলোনা। সে অনুভূতি শূন্য হয়ে সৌন্দর্যের দিকে তাকিয়ে আছে। দুইজনের দৃষ্টি দুইজনের দিকে নিবদ্ধ। দুইজনের পৃথিবীই যেনো থমকে গেছে। সৌন্দর্যের কি হলো কে জানে,, নিজের হাত নূরের পিছনে রেখে নূরকে নিজের সাথে পুরোপুরি মিশিয়ে নিয়ে জরিয়ে ধরে।
সৌন্দর্যের জড়িয়ে ধরা বেশি সময় স্থায়ী হলো না। যেভাবে ঝড়ের বেগে জরিয়ে ধরেছে সেভাবে ঝড়ের বেগেই নূরের কাছ থেকে ছি'টকে সরে উঠে দাঁড়িয়েছে। নূর হ্যাং হয়ে ছিলো বুঝতে ও পারে নি যে তাকে সৌন্দর্য জরিয়ে ধরেছে। সৌন্দর্য উঠে দাঁড়ানোর পর তার হুঁশ আসে। উঠে বসে সৌন্দর্যের দিকে তাকিয়ে দেখে সৌন্দর্য অন্য দিকে মুখ করে আছে। নূর সৌন্দর্যের কাহিনী কিছুই বুঝলো না। নিজের দিকে চোখ যেতেই লজ্জায় মাটিতে মিশে যেতে ইচ্ছে করলো নূরের। তারাতাড়ি করে ওড়না গায়ে দিয়ে বড় বড় নিশ্বাস নিতে থাকে।
সৌন্দর্য পরিবেশ স্বাভাবিক করার জন্য বলে, দেখে চলাচল করতে পারো না নাকি নূর? নিজের স্বামী বলে এভাবে সুযোগ নিয়ে যখন তখন আমার ইজ্জতের উপর হা'মলা করবে? তোমার বাড়িতে আসছি বলে তুমি এভাবে সুযোগ নিবে?
ছিঃ কি বা'জে কথা এসব আপনি কি বলছেন স্যার? আপনার মাথা কি ঠিক আছে নাকি পুরোপুরি খারাপ হয়ে গেছে। কিসব কথা বলছেন? আর আমি কখন আপনার উপর সুযোগ নিলাম শুনি? পরেছেন তো আপনি। কোথা থেকে হুট করে উড়ে এসে একে বারে গায়ের উপর পরেছেন।নিজে দোষ করে মুখের জোরে একেবারে আমার উপর চাপিয়ে দিচ্ছেন। একনাগাড়ে কথা গুলো বলে নূর হাঁপাতে থাকে আর জোরে জোরে নিশ্বাস নিতে থাকে।
--" এভাবে হাঁপানি রোগীর মতো নিশ্বাস নেওয়ার কি আছে আশ্চর্য।আমি এখনও তোমার সাথে কিছু করিনি।না করতেই তোমার এই অবস্থা? বাড়িতে দেখা যায় আগে থেকেই অক্সিজেন সিলিন্ডার রাখতে হবে।
--- কি করার কথা বলছেন আপনি? প্রশ্ন টা করে নূরের মাথায় আসে লোকটা কি বোঝানোর চেষ্টা করছে। বুঝতে পেরে লজ্জায় মিইয়ে যায়। মুখ দিয়ে বেরিয়ে আসে ছিঃ কি নোংরা আপনি স্যার।মনে মনে ঠিক করে নেয় আর একটা ও কথা বলবে না এই ঠোঁট কাটা লোকটার সাথে।
-- কি কথা বলছি বুঝতে পারছো না? তুমি কি চাইছো সব খুলে বলি? তাহলে সেই আশা ছেড়ে দাও আমি বলায় না করায় বিশ্বাসী করে দেখাবো বলেই চোখ টিপ দেয় সৌন্দর্য।
নূর এসব শুনে চোখ মুখ কোচকে ফেলে। নূরের মুখের এমন ভঙ্গিমা দেখে সৌন্দর্য মুচকি হাসে। তোমার রুম তুমি যা ইচ্ছে তাই করো কিন্তু তার আগে লক করে নিও। পকেটে হাত গুঁজে শিস বাজাতে বাজাতে সৌন্দর্য রুম থেকে বের হয়ে যায়। নূর তার যাওয়ার দিকে তাকিয়ে ভাবে এমন অ/শ্লীল কথা কি করে বলতে পারে লোকটা? মুখে কি কিছু আটকায় না? দেখে মনে হয় কি রাগী, কি ভাব ধরে থাকে।
নূর এসব ভাবতে ভাবতে মাথায় হাত দিয়ে বসে পরে।
বিকেলের দিকে খাওয়া দাওয়া করে সৌন্দর্য আর ফাতিহা চলে যায়। এরমধ্যে একবার ও নূর সৌন্দর্যের সামনে পরেনি। লুকিয়ে লুকিয়ে থেকেছে কে জানে আবার কখন কি বলে দেয়। লোকটা দিন দিন কেমন নির্লজ্জ হয়ে যাচ্ছে। ফাতিহার সাথে আবার সময় কাটিয়েছে। যাওয়ার সময় সৌন্দর্য অবশ্য চোখ ঘুরিয়ে নূর কে খোঁজেছে কিন্তু পায় নি।নূরের মা ও বলেছিলো আসার জন্য কিন্তু আসে নি।
*************
ইসরাত কানে হাত দিয়ে বসে বসে মোবাইল টিপছে। তার মা সেই যে বকাবকি শুরু করেছে থামার নাম গন্ধ নেই। মোবাইল গি'লে খা মোবাইলের ভিতর ঢুকে যা।পড়াশোনা আর করতে হবে না। খেতেও হবে না মোবাইল দেখলেই পেট ভরবে। বইটা নিয়ে একটু বসে না।সারাদিন রাত ২৪ ঘন্টা মোবাইল আর মোবাইল।
ইসরাতের মায়ের কথা ইসরাত কানেই তুলে না সে তার মতো মোবাইল দেখতে ব্যস্ত।
গ্রুপে ফ্রেন্ডদের সাথে আড্ডা দিতে থাকে। সকলেই এখন ফ্রি। গ্রুপে তুমুল ভাবে চ্যাটিং চলছে।সকলেই হাসি মজা করছে কে কি করবে।কেউ কেউ বলছে জব করবে,কেউবা বিদেশে স্যাটেল হবে আরো নানান আলোচনা। সকলের ভবিষ্যত পরিকল্পনা আলাদা হলেও ইসরাতের একটাই পরিকল্পনা না।সে আর বেশি পড়াশোনা করবে না বিয়ে করে নিবে।এসব পড়াশোনা আর মাথায় ধরে না। বিয়ে করে নিলে আর পড়তে হবে না। আহা জামাই নিয়ে সারাদিন ঘুরে বেড়াবে।রেস্টুরেন্টে যাবে।কাপল পিক তুলে ফেসবুকে আপ দিয়ে দেখিয়ে দিবে।এতোদিন মানুষের কাপল পিকে রিয়েক্ট দিয়ে এসেছে, বান্ধবীদের বলে প্রস্তুতি নিতে তার আর তালহা স্যারের কাপল পিকে রিয়েক্ট দেওয়ার প্রস্ততি নিতে। কয়েকজন এই নিয়ে ইসরাতের সাথে মজা নিচ্ছে তো কয়েকজন উৎসাহ দিচ্ছে এগিয়ে যাওয়ার জন্য।
ইসরাত মজায় মেতেছে। মায়ের কথা কানেই তুলল না। এরমধ্যে ইসরাতের বাবা ও বাড়িতে এসেছে। উনার সাথে আরেক দফা শুরু করে দিয়েছে ইসরাতের মা। বকাবকি করে শান্ত হয়।পরিবেশ ঠান্ডা দেখে স্বস্তির নিশ্বাস নেয় ইসরাত। রাতে খাওয়ার সময় হয়ে যায়, ইসরাতের বাবা মেয়েকে ডাকতে থাকে খাওয়ার জন্য।
ধূর ভালো লাগে না কি সুন্দর আড্ডা দিচ্ছি। আমি পরে খেলে কি এমন হতো? বলেই ইসরাত খাওয়ার জন্য যায় সাথে ফোন ও নিয়ে যায়। খেতে খেতে চ্যাটিং না করতে পারুক এদের মেসেজ তো দেখতে পারবে।নয়তো ওকে ছাড়াই এরা এগিয়ে যাবে। মাঝে মাঝে বাম হাতে ও রিপ্লাই দিতে পারবে এই ভেবে ফোন সাথে নিয়ে যায়।
মায়ের খাবার দিতে দেরি হচ্ছে দেখে আবার ফোনে মেসেজ দিতে থাকে।ইসরাতের মা খাবার নিয়ে আসতে আসতে ইসরাত কে ফোন টিপতে দেখে তেলে বেগুনে জ্বলে উঠে। আবার শুরু করে দেয়।ইসরাতের বাবা কে বলে ঘটক লাগানোর জন্য পড়াশোনা আর করতে হবে না। বিয়ে দিয়ে দিবে শ্বশুর বাড়ি গিয়ে বাকি পড়াশোনা করবে।
বিয়ের কথা শুনে ইসরাত কেঁদে দেওয়ার মতো অবস্থা, সে কিছুতেই বিয়ে করবে না।পড়াশোনা শেষ করে বিয়ে করবে। ইসরাতের মা ও নাছোড়বান্দা তিনি বলে চলেছেন যে করেই হোক বিয়ে দিয়েই ছাড়বে।
মা মেয়ের কথা শুনে দুইজন কে এক ধমক দেয় ইসরাতের বাবা।
আহ্ থামবে তোমরা? কি শুরু করেছো বলোতো শান্তিতে কি খেতেও দিবে না নাকি?
ইসরাতের বাবার ধমকে ইসরাতের মা চুপ হয়ে যায়।
কিন্তু ইসরাত এখনও কান্নার ভান করে বলতে থাকে আমি এখন কিছুতেই বিয়ে করবো না।
চুপচাপ খা তোকে পড়াশোনা শেষ হওয়ার আগে আমি বিয়ে দিবো না। (ইসরাতের বাবা)
ইসরাত মনে মনে লুঙ্গি ডান্স দেয়।ইসরাতের মা তরকারি আনতে চলে যায়। এই সুযোগে ইসরাত ভাবে একটা ফানি পোস্ট করে আসা যায়,,,”
"ফেসবুকে এসে বিয়ে করার জন্য চিল্লাতে থাকা লোকজন বাড়িতে বিয়ের কথা বললে কান্না করে।"
কিন্তু একি ফোন হাতে নিয়ে টাস্কি খায় ইসরাত তারাহুরো করে ঐসময় ফোন রাখতে গিয়ে তালহার কাছে কল চলে গেছে মেসেঞ্জারে।কল রিসিভ হয়েছে আরো তিন মিনিট আগে। তারমানে লোকটা সব কথা শুনেছে।ইসরাত তারাতাড়ি কল কেটে দেয়।মান সম্মানের ফালুদা হয়ে গেছে। এই তালা বেটা কে দেখে নিবে সে, অন্য সময় কল দিলে রিসিভ করে না আর আজ ভুলে চলে গেছে এটা ঠিকই ধরেছে।
*************
নূরের বাবা কে আজ হাসপাতালে আনা হয়েছে। এখন শরীর টা কিছু ভালো। গত পরশু ঐ ডাক্তার দেশে এসেছে গতকাল ছুটিতে ছিলো তাই আজ নিয়ে আসা হয়েছে। আজ আবার নতুন করে সব পরীক্ষা করে তারপর অপারেশনের তারিখ দেওয়া হবে। আজও সাথে সৌন্দর্য আর মি. রূপম ওয়াহিদ এসেছে। সব কিছু উনারাই দেখাশোনা করছে।
নূর নিজেকে কিছুতেই শান্ত করতে পারছে না। ভয়ে হাত পা জমে যাচ্ছে। কপাল বেয়ে ঘাম ঝড়ছে। বাবার মুখের দিকে তাকিয়ে কাঁদতে ও পারছে না। ভিতরে ভিতরে রক্তক্ষরণ হচ্ছে। বেঞ্চের উপর হাত রেখে একবার খুলছে তো একবার বন্ধ করছে।
চোখ বন্ধ করে নিজের যন্ত্রনা কমানোর চেষ্টা করছে।
নিজের হাতের উপর কারো হাতের ছোঁয়া পেয়ে চোখ খুলে তাকিয়ে দেখে সৌন্দর্য।
সৌন্দর্য নূরের হাতটা নিজের হাতের মুঠোয় নিয়ে একটু চাপ দিয়ে বোঝায় শান্ত হওয়ার জন্য।
নূর ছলছল চোখে সৌন্দর্যের দিকে তাকায়।
রিলেক্স পরাণ কাম ডাউন। শান্ত হও জোরে জোরে কয়েকবার নিশ্বাস নিয়ে শান্ত করো নিজেকে।কিছু হবে না। বি স্ট্রং পরাণ।
নূর সৌন্দর্যের চোখের দিকে তাকিয়ে ভরসা পায়।নিজেও সৌন্দর্যের হাত ভালো করে আঁকড়ে ধরে।
নূর সৌন্দর্যের কথায় ভরসা খুঁজে পেলো।মনটা একবার বলছে কিছু হবে না তোর বাবার তো আরেকবার অন্য কথা বলে। কাল সারা রাত গল্প করেই কাটিয়ে দিয়েছে। কথা বলার সময় ও বুকের ভিতর টা বারবার মোচড় দিচ্ছিলো।
নূরের বাবা কে আগামী কালকের মাঝেই অপারেশন করানো হবে।তাই আজই হাসপাতালে এডমিট করানো হয়েছে। ডাক্তাররা সব রকমের প্রস্তুতি নিচ্ছেন।নূরের মা সেই যে নামাজের রুমে বসে আছেন আর উঠছেনই না। এতক্ষন সব সৌন্দর্য সামলালেও এখন তার বড় আব্বু মি.রূপম ওয়াহিদ সব ফর্মালিটিস পূরণ করছে। সৌন্দর্য এখন নূর কে সময় দিচ্ছে মেয়েটা বাইরে থেকে শক্ত দেখালেও ভিতর থেকে একেবারে ভেঙে পরেছে। সৌন্দর্য নূরের চোখ দেখেই ভিতরের অবস্থা কিছু হলেও বুঝতে পেরেছে।
পরের দিন নূরের বাবা কে যখন তৈরি করা হয়েছে অপারেশন থিয়েটারে নেওয়ার জন্য তখন একে একে সকলকেই ডাক দেওয়া হয় উনার সাথে দেখা করার জন্য। নূরের মা আর তূর এক সাথে যায়।নূর কিছুতেই সাহস পাচ্ছে না যাওয়ার। নূরের বাবা শুধু নূর কে না নূরের সাথে সৌন্দর্য কে ও দেখা করার কথা বলেছে।নূর একই ভাবে বসে আছে কিছুতেই জোর পাচ্ছে না বাবার সামনে যাওয়ার।
সৌন্দর্য এসে নূরের সামনে দাঁড়ায়। নূর চোখ তুলে সৌন্দর্যের দিকে তাকাতেই সৌন্দর্য চোখের ইশারায় উঠতে বলে। কিন্তু নূর কিছুতেই উঠবেনা সে মাথা নাড়িয়ে অসম্মতি জানায়।যাবে না সে তার এতো সাহস নেই।
'-- নূর কি হচ্ছে কি উঠো সময় পেরিয়ে যাচ্ছে। (সৌন্দর্য)
নূর উত্তর দেয় না কোনো।
--' আমি কি বলছি শুনতে পারছো না তুমি নূর?
--- স-্যার প্লিজ স্যার না।আমি পারবো না। আমি যেতে চাই না স্যার। আমি সাহস পাচ্ছি না যাওয়ার। আমি ঐখানে গেলে নিজেকে ঠিক রাখতে পারবো না। বাবা মানসিক ভাবে আরো ভেঙে পরবে।
-- কিছু হবে না পরাণ উঠো বলেই সৌন্দর্য নিজেই নূরের হাত ধরে টেনে তুলে।
নূর ছাড়ানোর চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়।ক্যাবিনে ঢুকে দেখে বাবা তার দরজার দিকেই তাকিয়ে আছে। যেনো এতোক্ষন তাদের অপেক্ষাতেই ছিলো। নূর গুটিগুটি পায়ে এগিয়ে গিয়ে বাবার পাশে বসে। নিচের দিকে তাকিয়ে আছে। সৌন্দর্য একটা চেয়ার টান দিয়ে তাদের কাছাকাছি ই বসে।
--' আম্মাজান?
ইসসস এই ডাক শুনলে কলিজা ঠান্ডা হয়ে যায়। বুকের ভিতর যেনো হাতুড়ি পিটাচ্ছে আর বলছে তুই হয়তো আর এই ডাক শুনতে পাবি না। কেন এমন হচ্ছে? এমন না হলে কি খুব বেশি ক্ষতি হয়ে যেতো? সব ঠিক ছিলো ভালোই তো ছিলো। হুট করে একটা ঝড় এসে সব এলোমেলো করে দিয়ে যাচ্ছে।
-- হু বাবা বলো। বলেই ঠোঁট কামড়ে কান্না আঁটকানোর চেষ্টা চালায় নূর।নূরের বাবা মেয়ের মাথায় হাত বুলিয়ে বলে,,এভাবে ভেঙে পরতে হয় না মা। ভাগ্যে যা আছে তা তো আর আমরা বদলাতে পারবো না। এটা আমাদের মেনে নিতে হবে আর মানিয়ে ও নিতে হবে। আমি জানি তুই পারবি তোকে যে পারতেই হবে। আমার অবর্তমানে তোকেই তো তূর আর তোর মায়ের দায়িত্ব নিতে হবে তাই না?
নূর বাবা বলেই চোখের পানি ছেড়ে শব্দ করে কেঁদে দেয়। নূরের বাবার ও চোখ দিয়ে পানি পরছে। সৌন্দর্য ওদের বাবা মেয়ের দিকে বেশিক্ষন তাকিয়ে থাকতে পারে না তার চোখ দুটো ভীষণ জ্বালাপোড়া করছে। চোখ দুটো বুঝি আজ তার সাথে বে'ঈমানী করতে চাইছে। কিন্তু সে সৌন্দর্য কিছুতেই চোখের পানি কে জিততে দেওয়া যাবে না। এদিক ওদিক তাকিয়ে নিজেকে আগের মতো স্বাভাবিক আর ক:ঠোর করে নেয়। নূরের বাবা মেয়েকে সব বুঝিয়ে দিচ্ছে। আরো নানা ধরনের কথা চলে দুইজনের মাঝে কিন্তু নূর বেশি কথা বলতে পারে না কান্নারত গলায় শুধু হুু,হা করে উত্তর দেয়।
নূরের বাবা নূরের সাথে কথা শেষ করে এবার সৌন্দর্যের দিকে তাকায়।,,, সৌন্দর্য বাবা?
--'' হুু, আ ইয়ে মানে বাবা,,হুম বাবা বলুন শুনছি।
-- এইদিকে আসো বলে অন্য পাশে বসার জন্য একটু সরে জায়গা করে দেয়। সৌন্দর্য না করে না চুপচাপ গিয়ে বসে পরে।
নূরের বাবা সৌন্দর্যের হাত নিয়ে ধরা গলায় বলে,,,আমার এই অবুঝ রত্নটি তোমার হাতে তুলে দিলাম বাবা।তুমি তার যত্ন নিও ও ঠিক ভাবে মূল্যায়ন করো।আমার মেয়ে টা বড্ড সহজ সরল তুমি ওকে ভুল বুঝো না কখনো।সব সময় সুখে দুঃখে পাশে থেকো। দেখে রেখো ওদের একটু বাবা।
সৌন্দর্য নূরের বাবার হাতটা শক্ত করে চেপে ধরে বলে উঠে,,, এসব আপনি কি বলছেন বাবা? কিছু হবে না আপনার। জাস্ট একটা ছোট্ট অপারেশন হবে তারপর আপনি সুস্থ হয়ে যাবেন। আপনাকে সুস্থ হতেই হবে নূর,তূর আর মায়ের জন্য। আমার জন্য ও আপনাকে সুস্থ হতে হবে। ওদের দেখে রাখার এতো বড় দায়িত্ব আমার উপর দিয়ে আপনি কিছুতেই চলে যেতে পারেন না।
এসব বললে তো আর হবে না বাবা।(নূরের বাবা)
আপনি মনোবল কেন হারাচ্ছেন বাবা? আমাদের সকলের মুখের দিকে তাকিয়ে হলেও নিজের মনোবল হারাবেন না। কিছু হবে না আপনার। (সৌন্দর্য)
এরমধ্যে নার্স এসে জানায় বেশি সময় যেনো আর নষ্ট না করা হয়। নূর কিছু সময় বাবা কে জরিয়ে ধরে রাখে। এতক্ষন আসতে চায় না আর এখন যেতে চায় না। সৌন্দর্য এবারও জোর করে নিয়ে যায় নূর কে। আর এতো কান্না করার জন্য বাইরে নিয়ে গিয়ে চাপা একটা ধমক দেয়।এমনিতে করে, কিন্তু বাবার সামনে কেন করতে গেলো? বাবা তো এমনিতেই মনের দিক থেকে দূর্বল হয়ে আছে।
নূর আর কথা বলে নাই।
*************
ইসরাত হাসপাতালে যাওয়ার জন্য বের হয়েছে। নূরের কাছে আরো আগেই যাওয়া দরকার ছিলো। কিন্তু কিছু সমস্যার কারণে যেতে দেরি হয়ে গেছে। এইদিকে জ্যামে আঁটকে আছে। রাগ উঠে যাচ্ছে ইসরাতের।একেইতো দেরি করে যাচ্ছে আবার এই জ্যামে আরো দেরি করে দিচ্ছে। বাইরের দিকে তাকাতেই ইসরাতের চোখ আটকে যায়।এটা সে কাকে দেখছে? তালহা স্যার নাকি অন্য কেউ? উহু অন্য কেউ হতেই পারে না। ইসরাত কখনো তালহা স্যার কে চিনতে ভুল করবে না। এটা তালহা স্যারই। গাড়ি চালক কে টাকা দিয়ে তারাতাড়ি করে নেমে যায় ইসরাত। পিছনে গিয়ে বসে বলে তারাতাড়ি চলুন স্যার এমনিতেই দেরি হয়ে গেছে।
তালহা ৪২০ ভোল্টের ঝটকা খেয়ে বসে আছে। হুট করে কি হচ্ছে সব মাথার উপর দিয়ে যাচ্ছে।
মানে? এই তুমি এখানে কোথা থেকে এসেছো? খারাপ মাথা আরো খারাপ হয়ে গেছে তোমার তাই না? নামো বলছি বাইক থেকে এখনই নামবে।কি হলো নামছো না কেনো?
"কেন নামবো? আপনার আর আমার গন্তব্য তো একি।তাহলে একই পথের পথিক না হয়ে ভিন্ন পথের পথিক হবো কেন বলুন তো?"
-- মানে?
-- উফফ এইখান দিয়ে তো জায়গা আছে তাহলে বাইক চালাচ্ছেন না কেনো? চালান, আপনিতো হাসপাতালেই যাচ্ছেন নূরের বাবার যে অপারেশন হচ্ছে ঐখানে। কি ঐখানে যাচ্ছেন না?
-- হ্যা কিন্তু তুমি জানলে কি করে? জানার তো কথা না।আর না জেনে এতো শিউর হয়ে বলছো কি করে?
-- এটা হচ্ছে ম্যাজিক।ম্যাজিক দিয়ে জেনেছি।কিন্তু একটাই আফসোস আপনার মন টা ম্যাজিক করে পেলাম না শেষের কথাটা বিরবির করে বলে ইসরাত যা তালহার কান অবধি পৌঁছায় নি।
তালহা বেশি কথা বাড়ায় না এখন তারাতাড়ি হাসপাতালে যাওয়া দরকার। ওদের পাশে থাকা দরকার। ইসরাত আবার তালহা কে ধরে বসে নি পিছনে ধরে রেখেছে। তালহা বাইক চালু করতে করতে বলে,, এমনিতেই একটা পরিবারের দুঃসময় যাচ্ছে তুমি কি চাও আরো বিপদ ঘটুক?
ইসরাত কিছু না বুঝে জিজ্ঞেস করে,,, কি বলবেন সোজাসাপটা বললেই পারেন।
আমাকে ধরে বসো।আমি হসপিটালে যাচ্ছি পুলিশ স্টেশনে যেতে চাই না। ইসরাত বেশ খুশি হয়ে যায়। তালহার কাঁধে হাত রাখতে গিয়ে বুঝলো হাতটা কাঁপছে। বুকে ফু দিয়ে কাঁপা কাঁপা হাতটা তালহার কাঁধে রাখে। তালহা লুকিং গ্লাসে সবই লক্ষ করেছে। মুচকি হেসে বাইক চালাতে থাকে।
বাইক চালাতে চালাতে হুট করেই তালহা বলে উঠে,, বায় দা ওয়ে,, বিয়ে পা'গল মেয়ে বিয়ে করবে না বলে নে'কা কান্না করছে এটা ভাবা যায়?
তালহা ঐদিনের জন্য যে খোঁচা দিয়ে কথা বলছে সেটা বুঝতে একটুও ভুল করলো না । কটমট করে তাকিয়ে তালহার কাঁধে রাখা হাতটা দিয়ে খা'বলে ধরে কাঁধ। বড় বড় নখ গুলো শার্টের উপর দিয়েই চা'মড়া মনে হয় ভে'দ করে ফেলছে। তালহা চোখ মুখ কোচকে বাইক ব্রেক করে। ধমক দিয়ে বলে,,এখনই তুমি বাইক থেকে নেমে যাও তোমাকে আমি নিবো না।
ইসরাত শুকনো ঢুক গিলে কয়েকবার সরি বলে।ভুল হয়ে গেছে আর এমন করবে না। এবারের মতো যেনো নিয়ে চলে।
তালহা আর কিছু না বলে বাইক চালাতে থাকে।
************
ঘন্টা দুয়েকের বেশি হয়ে গেছে নূরের বাবা কে অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। বাইরে দাঁড়িয়ে থাকা প্রতিটি মানুষ ভীত মনে আল্লাহ কে ডেকে চলেছে, সব যেনো ঠিক থাকে। সকলের মনেই ভয় ঢুকে গেছে। নূর অপারেশন থিয়েটারের সামনে একবার গিয়ে আবার এসে পরেছে। বেঞ্চে না বসে নিচে বসে আছে। সকলের মাথায়ই টেনশন তাই কেউ কিছু বলছে না। নূরের পাশেই ইসরাত আর তূর বসে আছে। নূর ইসরাতের কাধে মাথা দিয়ে এক দৃষ্টিতে বাইরের দিকে জানালা দিয়ে তাকিয়ে আছে।
দেখতে দেখতে আরো অনেক সময় কেটে যাচ্ছে। যতো সময় কাটছে ততো সৌন্দর্যের ভিতর ও কেন যেনো ভয় ঢুকে যাচ্ছে। সবার দিকে একবার তাকিয়ে সৌন্দর্য একটু একা থাকার প্রয়োজন মনে করলো।যাওয়ার আগে একবার নূরের দিকে তাকায় আর ভাবে এই মেয়ে কে কি করে সামলাবে সে? যদি খারাপ কিছু হয়ে যায়। আবার নিজে নিজেই বলে,,এসব আমি কি ভাবছি কিছু হবে না।
সৌন্দর্যের পিছনে পিছনে তালহা ও যায়।
দুইজন নূরের বাবা কে নিয়েই কথা বলতে থাকে। আজ তালহার কাছে মনে হলো সৌন্দর্য নিজেই মনে বল পাচ্ছে না ভেঙে পরছে।তাই সৌন্দর্য কে বলছে সে যেনো ভেঙে না পরে তাহলে নূরের পরিবার আর নূর কে কি করে সামলাবে।
সৌন্দর্য তালহা কে কিছু বলার আগেই শুনতে পায়,,,, স্যা-স্যার....
সৌন্দর্য তালহা দুইজন ই ঘুরে তাকায়।তাকিয়ে দেখে নূর চোখ মুখ লাল হয়ে গেছে।
নূর কি হয়েছে? (তালহা)
নূর তালহার প্রশ্নের কোনো উত্তর দেয় না। দৌড়ে সৌন্দর্যের সামনে এসে দাঁড়ায়। কিছু বলার আগেই সৌন্দর্যের বুকে ঝাপিয়ে পড়ে হু হু করে কেঁদে উঠে।
সৌন্দর্য শুকনো ঢুক গিলে তালহার দিকে তাকিয়ে নূরের মাথায় নিজের কাঁপতে থাকা হাতটা রাখে।
গলা দিয়ে যেনো কথা বের হচ্ছে না। অনেক কষ্টে মুখ দিয়ে বের করে,,,
প-প-পরাণ?
চলবে,,,,,,,,,
গল্প: পরাণ দিয়ে ছুঁই (Season_2)
#পর্ব_৭
লেখনীতে: ঝর্ণা ইসলাম
আসসালামু আলাইকুম। সকলে রেসপন্স করবেন।
%20Official%20%20_%20TikTok.jpg)
0 Comments